ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেভিতোভার ভবিষ্যত অন্ধকার!

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২২ মার্চ ২০১৭

কেভিতোভার ভবিষ্যত অন্ধকার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একটি ছুরিকাঘাত সবকিছুকে যেন থমকে দিল। টেনিসভক্ত-সমর্থকরা তো অবশ্যই, খেলোয়াড়রাও স্তব্ধ হয়ে গেলেন। কারণ দুর্দান্ত খেলছিলেন এবং ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন পেত্রা কেভিতোভা। সেই সময় নিজ বাড়িতে অনুপ্রবেশকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হলেন তিনি। টেনিস কোর্টের বাইরে চলে যেতে হয়েছে তাকে। ৩ মাসেরও বেশি সময় হয়ে গেছে ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারেননি চেকপ্রজাতন্ত্রের এ ২৭ বছর বয়সী সুন্দরী। যদিও হাত দ’টো স্বাভাবিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সহজেই ব্যবহার করতে পারছেন। কিন্তু আবার টেনিসে কবে ফিরবেন সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এমনটাই জানিয়েছেন তার মুখপাত্র কারেল টেজকাল। অনেক বছর আগে ছুরিকাঘাতের একটি ঘটনা পুরো টেনিস বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ২৪ বছর আগে টেনিস কোর্টে ছিল মনিকা সেলেসের দোর্দ- প্রতাপ। জার্মান কিংবদন্তি স্টেফিগ্রাফের একমাত্র চরম প্রতিপক্ষ। আর সে কারণেই স্টেফির এক ভক্ত ম্যাচ চলার মাঝের টাইমআউটে ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ ফলার ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করেন। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে কেভিতোভার ক্ষেত্রে। পূর্ব চেকপ্রজাতন্ত্রের শহর প্রোস্টেয়ভে নিজ বাড়িতে তিনি অনুপ্রবেশকারীর হাতে ছুরিকাহত হন গত বছর ডিসেম্বরে। সেলেসের ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা পুরো টেনিস বিশ্বকেই শুধু নয়, প্রতিটি ক্রীড়ামোদীদের করেছিল বিস্মিত। কারণ সেটা ছিল হিংসাত্মক এক আক্রমণ। সে সময় তিনি ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর। যে কোন বড় টুর্নামেন্ট ও মর্যাদার গ্র্যান্ডসøামে স্টেফির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। ঘটনা ১৯৯৩ সালের ৩০ এপ্রিল। জার্মানিতে অনুষ্ঠিত সিটিজেন কাপে ম্যাগদালেনা মালিভার বিরুদ্ধে প্রথম সেট জেতার পর দ্বিতীয়টিতে এগিয়ে ছিলেন ৪-৩ ব্যবধানে। টাইমআউটের জন্য যখন কোর্টের পাশে আসেন তখনই ৩৮ বছর বয়সী গুন্টার পারশে ৯ ইঞ্চি দীর্ঘ ফলার ছুরি দিয়ে তার পিঠে আঘাত করেন। গুন্টার স্বীকারোক্তি দেন, স্টেফির ভক্ত হিসেবে তিনি চেয়েছিলেন সেলেস যেন না থাকতে পারেন সে জন্যই এ কা- ঘটিয়েছেন তিনি। তার আশা পূর্ণ হয়েছিল, দীর্ঘদিন কোর্টের বাইরে ছিলেন সেলেস আর ওই সুযোগে টানা শিরোপা জিতে পরবর্তীতে রেকর্ডধারী হয়ে যান স্টেফি। পরে কোর্টে ফিরলেও নিজের পুরনো ছন্দ ও ফর্ম খুঁজে পাননি সেলেস। এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনার কথা সবাই ভুলেই গিয়েছিল। কিন্তু কেভিতোভার ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিয়েছে সেলেসের সেই ঘটনাটা। ২৭ বছর বয়সী কেভিতোভাকে জরুরীভাবে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। চার ঘণ্টার দীর্ঘ সময় তাকে অপারেশন থিয়েটারে থাকতে হয়েছে এই জরুরী অপারেশনে। কারণ টেনডন ও স্নায়ুতন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কেভিতোভার বিষয়ে টেজকাল বলেন, ‘দৈনন্দিন কার্যকলাপে কেভিতোভা তার হাতটা বেশ ভালভাবেই ব্যবহার করতে পারছেন। হাত দু’টো অবশ্যই আগের চেয়ে দুর্বল হয়ে গেছে। কিন্তু এখন সরাসরি খালি চোখে দেখলে তাকে কোনভাবেই ইনজুরি আক্রান্ত বলে ভাবতে পারবেন না।’ চিকিৎসকরা এর আগে ধারণা করেছিলেন বছরের একেবারে শেষপ্রান্তে ছাড়া টেনিসে ফিরতেই পারবেন না কেভিতোভা। বিশ্বের ১৫ নাম্বার এ তারকাকে নিয়ে টেজকাল আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কোন সময় বলতে পারবে না কেউ। কেভিতোভার স্বাস্থ্যগত সমস্যা পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। এখন পর্যন্ত কোন জটিলতা নেই। কিন্তু তার ফেরার সব রাস্তাই এখন উন্মুক্ত হয়ে আছে। তার মানসিক শক্তি খুবই দারুণ। তিনি ক্যানারি আইল্যান্ডসে ফিটনেস ট্রেনিংও শুরু করেছেন।’
×