ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আলোচনা সভায় বক্তারা

বিশ্বে প্রতি ৮শ’ শিশুর একজন ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্ম নেয়

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২২ মার্চ ২০১৭

বিশ্বে প্রতি ৮শ’ শিশুর একজন ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্ম নেয়

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বিশ্বে প্রতি ৮শ শিশুর মধ্যে একজন ‘ডাউন সিনড্রোম’ শিশু জš§গ্রহণ করে থাকে। সে হিসেবে বাংলাদেশে ২ লাখ লোক ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত। এসব ব্যক্তি সমাজে অবহেলিত। অথচ ডাউন সিনড্রোম কোন রোগ নয়, বরং এটি শরীরের একটি জেনেটিক পার্থক্য এবং ক্রোমোজমের একটি বিশেষ অবস্থা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহাম্মদ চৌধুরী মিলানায়তনে ১২তম বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি অব বাংলাদেশ, আমদা বাংলাদেশ, ডাউন সিনড্রোম প্যারেন্টস সাপোর্ট গ্রুপ বাংলাদেশ, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ডাউন সিনড্রোম শিশু ও অভিভাবকদের নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বাডি সাইক্লিংয়ের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়। পরে ঢাবি যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. হাকিম আরিফের সভাপতিত্বে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মেদ, ডাউন সিনড্রোম সোসাইটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সরদার এ রাজ্জাক, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সরদার এ নাঈম প্রমুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ডাউন সিনড্রোম আক্রান্ত ব্যক্তিরা সমাজেরই অংশ। তাদের মূলধারার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রকৃতির মাঝে অনেক ধরনের ডিজঅর্ডার আছে তেমনি মানুষের মধ্যেও রয়েছে নানা বৈকল্য। এই ডিজঅর্ডার কিংবা বৈকল্যকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসার জন্য এই বৈকল্যকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ-স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সারাবিশ্বে চলছে নানা গবেষণা। তাই সমাজে মানুষের মাঝে সংবেদনশীলতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবার ও ব্যক্তি পর্যায়ে এই সংবেদনশীলতাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগ খোলার উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি করা। যারা এসব ডাউন সিনড্রোম শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করবে এবং তাদের মধ্য থেকে সম্ভাবনা বের করে আনবে। কেননা প্রতিটি শিশুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও সম্ভাবনাময়। বক্তারা বলেন, ডাউন সিনড্রোম ব্যক্তির দেহ কোষে একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজম থাকে, যাকে ঞৎরংড়সু ২১ বলে। অন্যদের তুলনায় এরা দেরিতে বসে ও কথা বলে, হামাগুড়ি দেয় ও হাঁটে। সবমিলিয়ে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা দেখা দেয়। অথচ সঠিক যতœ, পুষ্টিকর খাবার, স্পিচ ও ল্যাংগুয়েজ এবং ফিজিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে ডাউন সিনড্রোম শিশু পড়ালেখা করে স্বনির্ভর হতে পারে। তাই জাতীয় পর্যায়ে ডাউন সিনড্রোম শিশু ও ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা, গ্রহণযোগ্যতা, অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ‘বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস এ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করায় ডাউন সিনড্রোম সোসাইটির চেয়ারম্যান সরদার এ রাজ্জাককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের পক্ষে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘ডাউন সিনড্রোম ভয়েস’ নামে একটি নিয়মিত ম্যাগাজিনের মোড়ক উšে§াচন করা হয়। একাডেমিক সেশন এবং পুরস্কার বিতরণের মধ্যদিয়ে কর্মসূচী শেষ হয়।
×