ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৯ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ;###;দ্রুত উন্নয়ন, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকামী দেশ গড়তে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে

নৌকায় ভোট চাইলেন হাসিনা ॥ মাগুরায় বিশাল জনসভা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২২ মার্চ ২০১৭

নৌকায় ভোট  চাইলেন  হাসিনা ॥ মাগুরায় বিশাল জনসভা

উত্তম চক্রবর্তী, সঞ্জয় রায় চৌধুরী, মাগুরা থেকে ॥ মাগুরায় জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ২০১৯ সালের নির্বাচনে পুনর্বার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে দেশসেবার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যাদের (বিএনপি-জামায়াত জোট) ভোট চুরির অপরাধে জনগণ পদত্যাগে বাধ্য করেছিল, যারা নির্বিচারে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সৃষ্টি করেছে, যারা দেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাস করে না- তারা ক্ষমতায় এলে দেশকে আবারও ধ্বংস করে দেবে। তাই উন্নয়ন-অগ্রগতির স্বার্থে সবাই আওয়ামী লীগের পতাকাতলে শামিল হোন, আওয়ামী লীগের হাতকে শক্তিশালী করুন। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কোন যুদ্ধাপরাধী, একাত্তরের গণহত্যাকারী, যারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত, তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না। তিনি বলেন, আমার জীবনের কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। মাত্র একদিনে আমরা নিঃস্ব-রিক্ত ও এতিম হয়ে গেছি। আমার বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের ১৮ জনকে হত্যা করেছে। আমার পিতা বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য আমিও যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। প্রয়োজন হলে বাবার মতোই আমার বুকের রক্ত দিয়ে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব ইনশা আল্লাহ। মঙ্গলবার বিকেলে মাগুরা জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জনসভায় উপস্থিত লাখো মানুষের কাছে আগামী নির্বাচনে পুনর্বার নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের উন্নয়ন, মানুষের কল্যাণ করা। আপনারা বারবার নৌকায় ভোট দিয়েছেন। নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলেই আপনারা উন্নয়নের মুখ দেখছেন। তাই ২০১৯ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিন। আমরা দেশের আরও দ্রুত উন্নয়ন করব, দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলার পাশপাশি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শান্তিময়, কল্যাণকর ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। ২০০১ সালে ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিলেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশপ্রেম নিয়ে দেশের জন্য কাজ করি। দেশের যখন উন্নয়ন হয় তখনই দেশের একটি শ্রেণী আছে তাতে বাধা দেয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গ্যাস ভারতের কাছে বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রে ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসেই আমাদের সব উন্নয়ন কর্মকা- বন্ধ করে দেয়, সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, বারবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আমি আর কারোর কাছে মাথানত করি না, কাউকে ভয় পাই না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তানজেল হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পংকজ কু-ুর পরিচালনায় জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সভাপতিম-লীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, আবদুর রহমান এমপি, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) আবদুল ওয়াহাব, কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন, পারভীন জাহান কল্পনা, মহিলা আওয়ামী লীগের সাফিয়া খাতুন, যুব মহিলা লীগের নাজমা আখতার ও অপু উকিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নির্মল রঞ্জন গুহ, যুবলীগের আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের এসএম জাকির হোসেন, স্থানীয় নেতা এএফএম আবদুল ফাত্তাহ, মুন্সী রেজাউল হক, রুস্তম আলী, হাজী গোলাম মাওলা, আবু নাসির বাবলু, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, শফিকুজ্জামান বাচ্চু, খুরশিদ হায়দার টুটুল প্রমুখ। এছাড়া জনসভায় বৃহত্তর খুলনার বিভিন্ন জেলার নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণও উপস্থিত ছিলেন। হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রী মাগুরা এসে সার্কিট হাউসে নামাজ আদায় ও মধ্যাহ্নভোজ সেরে জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়েই প্রায় ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৯টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিশাল এ জনসভায় মাগুরার মাটি ও মানুষের নেতা প্রয়াত আছাদুজ্জামানের পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর মাগুরাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি রেললাইন, মেডিক্যাল কলেজ এবং আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় মাগুরায় রেললাইন, আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে জনসভায় উপস্থিত লাখো মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়েন এবং গগনবিদারী সেøাগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। মাগুরাবাসী অনেকদিন পর যেন দেখল জনসমুদ্রের গর্জন! আর এ সমুদ্রের গর্জন ছিল সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদের হোতাদের মোকাবেলা করে আবারও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার দীপ্ত শপথ। লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগের জনসভায় তীব্র জনস্রোতে কয়েক ঘণ্টার জন্য যেন থমকে গিয়েছিল পুরো মাগুরা জেলা শহরটি। মাগুরা স্টেডিয়াম ছাপিয়ে চতুর্দিকে প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকার দীর্ঘ পথই ছিল জনতরঙ্গ। যেন জনতরঙ্গের শুরু আছে, শেষ নেই। জনতরঙ্গ থেকে ভেসে আসা লাখো মানুষের গগনবিদারী একই সেøাগান ছিলÑ ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার।’ মাগুরায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিত ঘটিয়ে বেশ ভালই সাংগঠনিক শক্তির প্রকাশ ঘটানো হয়েছে। জনসভার প্রস্তুতি ছিল ব্যাপকই। কিন্তু জনসভাটি এমন জনসমুদ্রে রূপ নেয় যে, তা আয়োজকদেরও হতবাক করে দেয়। সকাল থেকেই সাজ সাজ রব পড়ে এ জনসভাকে কেন্দ্র করে। মাগুরা স্টেডিয়ামে এত মানুষের স্থান সঙ্কুলান হবে না এটা আঁচ করতে পেরেই মঞ্চের চতুর্দিকের দীর্ঘ পথে শত শত মাইক টাঙিয়ে দেন আয়োজকরা। প্রায় আট বছরের মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাগুরা সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল বৃহত্তর ফরিদপুরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রত্যাশার চেয়েও দ্বিগুণ মানুষের স্রোতে শুধু সার্কিট হাউস ময়দানই নয়, পুরো মাগুরাই যেন পরিণত হয়েছিল বিশাল সমাবেশে। দুপুর ১২টার পর থেকেই হাজারো মিছিলের তোড়ে পুরো শহরই যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল। যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। আর এ বিশাল জনসমুদ্রে নির্বাচনের দেড় বছর আগেই নির্বাচনী আমেজ ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টেডিয়াম ছাপিয়ে জনসভায় আসা মানুষের স্রোত ভায়নার মোড়, ঢাকা রোড, চৌরঙ্গীর মোড়, নতুন মাজার, ইছাখাদা বাজার, কাটাখালী বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। অজস্র মিছিলের প্রতিটিতেই ছিল বিশাল বিশাল নৌকার প্রতিকৃতি ও বিশাল বিশাল আসল নৌকা। ঠেলাগাড়িতে বিশাল বিশাল নৌকা তুলে তার ওপর বৈঠা নিয়ে নৌকার মাঝির নৌকা চালানোর অসংখ্য দৃশ্যও প্রত্যক্ষ করেছেন মাগুরাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সত্যিই এক অন্যরকম গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল নৌকার ঘাঁটি বলে পরিচিত এ জেলাটিতে। দুপুর আড়াইটায় জনসভার জন্য নির্ধারিত সময়সূচী দেয়া থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত অসংখ্য মিছিল আসতে শুরু করে সার্কিট হাউস ময়দান অভিমুখে। বিশাল এ মাঠটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তবে জনসভার ব্যতিক্রমী বিষয় ছিলÑ পুরো স্টেডিয়ামসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের জন্য প্রায় ২৫ হাজার লিটার পানি, ২৫ মণ চিড়া, পাঁচ মণ বাতাসাসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবারের ব্যবস্থা। এছাড়া জনসভায় আসা নারী নেতাকর্মীদের জন্য আশপাশের বাড়িতে বিশ্রাম ও টয়লেট ব্যবহারের সুযোগও রাখা হয়। বিশাল এ জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতার শুরুতেই ক্রিকেট বিশ্বের বিস্ময় মাগুরার কৃতী সন্তান সাকিব আল হাসানকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সাকিব এ মাটিরই সন্তান। শ্রীলঙ্কাকে শততম টেস্টে হারিয়ে জয় বাংলার জয় এনে দিয়েছে তারা। এজন্য ক্রিকেটের সকল খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাকে অভিনন্দন জানান তিনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি ও মানুষের সংগঠন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই দেশ আজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হয়, তা আমরা প্রমাণ করেছি। আবেগজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, পিতা-মাতা, ভাইসহ সবাইকে হারানোর দুঃসহ দুঃখ-যন্ত্রণা বুকে নিয়েই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকতে শুধু মাগুরাই নয়, গোটা বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। ’৯৪ সালের ২০ মার্চ উপ-নির্বাচনে মাগুরাবাসীর ভোট চুরি করে নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এর বিরুদ্ধে আমরা তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলি। আর সে গণআন্দোলনেই ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া ক্ষমতা থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতেও দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়, বিরোধী দলে গিয়েও মানুষকে হত্যা করে, নির্যাতন চালায়। ক্ষমতায় থাকতে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি ও লুটপাট, দুর্নীতির অর্থ বিদেশে পাচার করেছে বিএনপি। বিএনপি নেত্রীর ছেলের লুণ্ঠিত পাচার করা টাকা আমরা ফেরত এনেছি। আবার নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোট শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, সারাদেশে নাশকতা চালিয়েছে। তাদের এসব অপকর্মের কথা দেশের মানুষ কোনদিন ভুলবে না, ভুলতে পারে না। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের স্থান হবে না। আমি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাব, নিজেদের সন্তানদের দিকে খেয়াল রাখবেন। তারা যাতে কোনভাবেই জঙ্গী-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে না পারে ও মাদকাসক্ত না হয়। জঙ্গী-সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে আসতে চাইলে তাদের পুনর্বাসন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ এ পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে আসতে চাইলে তাকে পুনর্বাসনসহ সরকার থেকে যা যা করার তার সবই করা হবে। একগুচ্ছ প্রকল্প উপহার মাগুরাবাসীকে ॥ মাগুরা সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাগুরার উন্নয়নে প্রায় ৩১০ কোটি টাকার ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৯টি প্রকল্প কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। উদ্বোধন করা ১৯টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছেÑ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মাগুরা হাসপাতাল, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়াম, মাগুরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সদর উপজেলার মঘি ইউপি অফিস থেকে আন্দোলবাড়িয়া সড়কে ফটকি নদীর ওপর ১০০ দশমিক ১০ মিটার ব্রিজ, সদর উপজেলার জিসি-ইছাখাদা পর্যন্ত ৯ দশমিক ৭১ কিলোমিটার সড়ক, মাগুরা-শ্রীপুর সড়কে নতুন বাজার সেতু, ৩৫০ ঘনমিটার প্রতিঘণ্টা ক্ষমতাসম্পন্ন মাগুরা ভূগর্ভস্থ পানি শোধনাগার, সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রশাসনিক ভবন, আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার, প্রশিক্ষণ ভবন ও অতিথিশালা, মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, মাগুরা টেক্সটাইল মিল্স, আড়পাড়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এছাড়া মাগুরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, শালিখা উপজেলার বুনাগাতী থেকে বেরোইলপলিতা সড়কে নালিয়া ঘাটে ফটকি নদীর ওপর ৯৬ মিটার ব্রিজ, একই উপজেলার বরইচারা আটিরভিটা-বরইচারা বাজার সড়কে ফটকি নদীর ওপর ৬৬ মিটার ব্রিজ, বাউলিয়া-শরশুনা সড়কে চিত্রা নদীর ওপর ৯৬ মিটার ব্রিজ, জাতীয় মহাসড়কের মাগুরা শহর অংশ চার লেনে উন্নীতকরণ, মাগুরা পৌরসভার তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়), শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার (হাইটেক পার্ক), শ্রীপুর উপজেলা মিনি স্টেডিয়াম ও শালিখা উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
×