ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা কাজে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ২১ মার্চ ২০১৭

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা কাজে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন থেকে চিলমারী উপজেলা রক্ষার জন্য ব্রহ্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা ফেজ-টু (২) নামক ২শ’ ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার বাঁধে ব্লক ফেলার প্রকল্প গ্রহণ করে বর্তমান সরকার। কিন্তু ব্লক তৈরিতে মানা হচ্ছে না সরকারের দেয়া নিয়মাবলী। অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করছেন ঠিকাদাররা। এতে উপজেলা রক্ষায় কতটা সুফল পাবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মাঝে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সাল থেকে শুরু করে চিলমারী রক্ষা প্রকল্প ডান তীর রক্ষা কাজ ফেজ-টু (২)। ২০১৩ সালে প্রথম টেন্ডার ৬ কোটি টাকা, ২০১৫ সালে ২য় দফা টেন্ডারে ৭৭ কোটি টাকা এবং ২০১৬ সালে তিন দফায় ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ কিলোমিটার বাঁধে ব্লক ফেলার কাজ হাতে নেয় সরকার। ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙ্গন ঠেকানোর জন্য সর্বশেষ ২০১৬ সালে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার বাঁধের পরিধি বাড়িয়ে এ প্রকল্পের টাকা ধরা হয় ২শ’ ৫৬ কোটি। উলিপুর উপজেলা হতে চিলমারী পর্যন্ত ৬ হাজার ৪শ’ ৫০ মিটারে ব্লক, ব্লক ম্যাসিং, ডাম্পিং এবং জিওব্যাগ ডাম্পিং করার কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে অনন্তপুর বাঁধে এক কিলোমিটার, কাঁচকল বাঁধে তিন কিলোমিটার এবং চিলমারী বন্দরে দুই কিলোমিটার বাঁধ ধরা হয়। ২০১৬ সালে নয়টি প্যাকেজে নয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ দেয়া হয়। এর মধ্যে বেলাল হোসেনের দুটি প্রতিষ্ঠান র‌্যার আরসি ও টিআইএসবি জেভিকে প্রায় ১৫ কোটি, সুশেনের রূপান্তর জেভি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় পাঁচ কোটি, লিয়াকত আলীর এলএলটিজেভিকে প্রায় সাত কোটি, আঃ মান্নানের এমএ এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় আট কোটি, মাহফুজার রহমানের এমআরসি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাত কোটি, খায়রুল কবির রানার প্রতিষ্ঠানকে প্রায় আট কোটি, কেএসএ ইমদাদুল হকের প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাত কোটি এবং খন্দকার শাহিন আহমেদের প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১৩ কোটি টাকার কাজ দেয়া হয়। স্ব স্ব নামে কাজ পেলেও এ প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় বিভিন্ন সাব-ঠিকাদার দিয়ে চালাচ্ছে ব্লক তৈরির কাজ। সাব-ঠিকাদাররা ব্লক তৈরিতে সরকারের নিয়ম তোয়াক্কা না করে স্থানীয় বালু, নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করছেন। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় ব্লক তৈরি ও ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম হাবীব দুলাল বলেন, চিলমারী রক্ষার দাবি উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের। সরকারের মহতী উদ্যোগের কারণে সে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে। কিন্তু সরাসরি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নজরদারির অভাবে সাব-ঠিকাদাররা ব্লক তৈরিতে বিভিন্ন অনিয়ম করছেন। ফলে দীর্ঘমেয়াদী সুফল থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব টাস্কফোর্স ব্লক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেই শতভাগ কাজের মান নিশ্চিত করছেন ঠিকাদাররা। টাস্কফোর্সের কাছে ধরা পড়লে ওই ব্লক বাতিল করা হয়। ফলে এখন আর তারা অনিয়ম করতে পারেন না।
×