প্রতিবছর জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন এমন তরুণদের কমনওয়েলথ ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। এ জন্য এশিয়া, এশিয়া-প্যাসিফিক, ক্যারিবীয় অঞ্চল, আফ্রিকা ও ইউরোপের কমনওয়েলভুক্ত দেশগুলোর তরুণদের নির্বাচিত করা হয়। ২০১৭ সালে পাপুয়া নিউগিনি ও নাইজেরিয়ার দুই তরুণকে কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। নিজেদের কর্মদ্যোগী ভূমিকার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সারা বিশ্বে সক্রিয় এই যুবাদের মধ্যে আমাদের বাংলাদেশীরা হলেন- তৌফিক আহমেদ খান ও উখেন চিং মারমা। কমনওয়েলথ ইয়ুথ পারসন অব দ্য ইয়ারের চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন আমাদের তৌফিক আহমেদ খান ও উখেন চিং মারমা। উখেন চিংদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার চংড়াছড়ি। পড়াশোনা করছেন চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের শেষ বর্ষে। তাঁর বাবা-মা বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে পানখাইয়াপাড়ায় থাকেন। তাঁর বাবা অংক্য জেয় মারমা খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের উপ-সহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তা, মা হাসপাতালের নার্স তত্ত্বাবধায়ক। এক ভাই এক বোনের মাঝে উখেন চিং বড়। ছোট বেলার থেকেই উখেন চিং মারমা প্রতিনিয়ত ভাবতেন তাদের জনপথের কথা। নানা ধরনের অজ্ঞতা পাহাড়ী জনপথের মানুষদের পিছিয়ে রাখত। আমাদের উখেন চিং খাগড়াছড়িতে সাত শ’ কিশোরীকে নিয়ে ঋতুস্রাব বা মাসিকের সময়কালে স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করেছেন। এর ফলে কিশোরীরা প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সচেতন হয়েছে। ফলে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিতকরণ টেকসই উন্নয়ন বা এসডিজির অন্যতম লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আর তার এ উদ্যোগের ফলে মনোনীত হয়েছেন ‘দি কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার’ এর জন্য। বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের হয়ে বাংলাদেশের নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছেন উখেন চিংয়ে। ‘দি কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অব দ্য ইয়ার তালিকায় উখেন চিংয়ের সঙ্গে রয়েছেন আরেক বাংলাদেশী তৌফিক আহমদ খান। সাউথ এশিয়ান সোসাইটির উদ্যোক্তা তৌফিক ‘গার্লস ফর গ্লোবাল গোলস’ কর্মসূচীর নিয়ে কাজ করছেন। এই কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশের ৬০০ তরুণ-তরুণীকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে সচেতন করে তুলছেন তিনি। আর তার এ কাজের জন্য কমনওয়েলথ যুব পুরস্কারের নির্বাচকমণ্ডলীর দৃষ্টি কেড়েছেন তিনি। এছাড়া ‘নো ইউর এসডিজি’ কর্মসূচীর আওতায় ৪২ হাজার তরুণ-তরুণীর মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজও চালাচ্ছেন তিনি। চূড়ান্ত লড়াইয়ে মনোনীত বাকি ১৫ জন এসেছেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, গায়না, জ্যামাইকা, মালাবি, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউ গিনি, শ্রীলঙ্কা, উগান্ডা, যুক্তরাজ্য ও সেইন্ট ভিনসেন্ট এ্যান্ড দি গ্রেনাডিনস থেকে। কমনওয়েলথের বছরের সেরা তরুণ না হতে পারলেও এই অর্জনও কম কিছু নয় আমাদের জন্য।
শীর্ষ সংবাদ: