ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২১ মার্চ ২০১৭

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এবার সিঙ্গাপুরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ চেয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির সঙ্গে কিভাবে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সেই কৌশল নির্ধারণে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এখন সিঙ্গাপুর সফর করছেন। দেশটির জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে জমি বরাদ্দ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন, সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর যৌথভাবে আয়োজিত ‘সাউথ এশিয়া মার্কেট ইনসাইটস সিরিজ : বিজনেস অপরচুউনিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এই সেমিনারে প্রধান অতিথি অংশগ্রহণ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তোফায়েল আহমেদ বলেন, সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিনিয়োগের জন্য এখন বাংলাদেশ বিশে^র মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শতভাগ বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশে। প্রয়োজনে বিনিয়োগকৃত অর্থ সম্পূর্ণ ফেরত নেয়া যাবে। এ বিষয়ে আইনদ্বারা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে সরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে বেশি লাভবান হবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের দেয়া আকর্ষণীয় সুযোগ গ্রহণ করতে পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে এসব বিনিয়োগ আসছে। সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীরা চাইলে এখান থেকে এক বা একাধিক ইকোনমিক জোন বরাদ্দ করা হবে। বর্তমান সরকার ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্টকে (এফডিআই) বিশেষ গুরুত্ব ও সহযোগিতা দিচ্ছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গত বছর বাংলাদেশ ৩৪ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে, ২০২১ সালে দেশের রফতানির পরিমাণ হবে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছর ৭ দশমিক ১১ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। দেশে দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। জিডিপিতে রফতানির অবদান এখন ১৬ শতাংশের বেশি। কৃষিতে ১৫ দশমিক ৯৬, শিল্পে ৩০ দশমিক ৪২ এবং সেবা খাতে ৫৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, রেমিটেন্স ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ এখন মেগা প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে। বিশে^র মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ। এই সময় সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর একটি এমওইউ স্বাক্ষর করে। সেমিনারে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়িক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের কাছে বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ, সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ অনেক পণ্য সিঙ্গাপুরে রফতানি করে। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী সিঙ্গাপুরে কাজ করছে। সেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য রফতানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর সিঙ্গাপুরে ১৬৪ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করা হয়েছে, একই সময়ে আমদানি করা হয়েছে ১৯৬৫ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব। সেমিনারে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাউথ এশিয়া বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম ব্যানার্জী, বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অফ সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট মির্জা গোলাম সবুর বক্তব্য রাখেন।
×