ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করমজলে ৩২টি ডিম পাড়ল বিরল প্রজাতির আরেকটি কচ্ছপ

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২০ মার্চ ২০১৭

 করমজলে ৩২টি ডিম  পাড়ল বিরল  প্রজাতির আরেকটি কচ্ছপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মংলা ॥ সুন্দরবনে করমজলের প্রজনন কেন্দ্রে আরেকটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৩২টি ডিম দিয়েছে। শনিবার গভীর রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত কচ্ছপটি ডিমগুলো পেড়েছে। করমজলের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। মাত্র ১৬ দিনের মাথায় বিরল প্রজাতির কচ্ছপ থেকে এ ডিমগুলো পান গবেষকরা। এর ফলে বাটাগুর কচ্ছপ নিয়ে করমজলে চলা গবেষণা সফলতার মুখ দেখছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে গত ৩ মার্চ প্রথমবারের মতো ডিম দেয় একটি বাটাগুর কচ্ছপ। নিয়মানুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলে ডিম পাড়ার ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে এ ডিম থেকে কচ্ছপের বাচ্চা ফুটবে। করমজল কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রব জানান, বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপকে রক্ষার জন্য এর প্রজনন, সংরক্ষণ ও সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে সুন্দরবনে। বাংলাদেশ বন বিভাগ, জু ভিয়েনা (অস্ট্রিয়া) টিএসএ (আমেরিকা) ও আইইউসিএনের (বাংলাদেশ) যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো সুন্দরবনের করমজলে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ কেন্দ্রে বর্তমানে ৪টি মাদি ও ৬টি পুরুষ বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে। এর মধ্যে ৩ মার্চ একটি মাদি কচ্ছপ ৩১টি ডিম দেয়। রব আরও জানান, জু ভিয়েনার (অস্ট্রিয়া) অর্থায়নে এর আগে বাংলাদেশ বন বিভাগের আওতাধীন ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কে এ প্রজাতির কচ্ছপের প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। এতে সাফল্য পান তারা। পাওয়া যায় প্রচুর কচ্ছপ। করমজলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৪টি কচ্ছপের মধ্যে দুটি বাটাগুর কচ্ছপ ডিম দেয়ায় গবেষণা সফলতার মুখ দেখছে বলে মন্তব্য এ কর্মকর্তার। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম বলেন, পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিশ্বে ‘বিলুপ্তপ্রায়’ প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকার এখন সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে বংশ বিস্তারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ প্রজনন কেন্দ্রে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের বেড়ে ওঠা, প্রজনন এবং ডিম পাড়ার জন্য ইতোমধ্যেই খনন করা হয়েছে একাধিক পুকুর, নালা, শেডসহ প্যান (কৃত্রিম পুকুর) ও ডিম পাড়ার স্থান। সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, এক সময়ে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ লবণাক্ত পানিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত বাটাগুর বাসকা বা বড় কাটালি কচ্ছপ। এখন সময়ের বিবর্তনে ও মানবসৃষ্ট কর্মকা-ে এই প্রজাতির কচ্ছপ প্রায় বিলুপ্তের পথে। সারাবিশ্বে এ কচ্ছপের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খাদ্য হিসেবেও এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। প্রাপ্তবয়সে একটি কচ্ছপ ২৫-৩০ কেজি ওজনের হয়। এ কচ্ছপ ৭০-৮০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বলেও জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা।
×