ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাপক সাড়া

২২ হাজার স্কুল-মাদ্রাসায় স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন ৩০ মার্চ

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২০ মার্চ ২০১৭

২২ হাজার স্কুল-মাদ্রাসায় স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন ৩০ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত বছর সারাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট গঠনের ঘটনা ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। ‘ছোটদের মন্ত্রিসভা’ গঠনের ঘটনা ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে। সে সফলতার ধারাবাহিকতায় আগামী ৩০ মার্চ ২২ হাজার স্কুল ও মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন। এ নির্বাচনে ৮০ লাখ ভোটার নির্বাচিত করবে ২২ হাজার ক্যাবিনেট প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী। প্রার্থীরা ইতোমধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে, ঝোলানো হয়েছে হাতে লেখা পোস্টার। তবে তা স্কুল ও মাদ্রাসার সীমানার মধ্যে। রবিবার রাজধানীর ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন নিয়ে ঢাকা অঞ্চলের কর্মশালা হয়। এতে অংশ নেন প্রধান শিক্ষক, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। কর্মশালার আয়োজন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের ঢাকা অঞ্চল এবং ব্যানবেইস। মাউশি অধিদফতরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেনÑ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব এফএম এনামুল হক, মাউশি অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এসএম ওয়াহিদুজ্জামান, ব্যানবেইসের পরিচালক মোঃ ফসিউল্লাহ, মাদ্রাসা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রমুখ। জানা গেছে, এ নির্বাচনে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আটজন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হবে, যাদের মধ্য থেকে একজন প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবে। আর স্কুলে সাধারণত প্রতিনিধিদের মন্ত্রী আর প্রধান প্রতিনিধিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডাকা হয়। প্রতিনিধিদের আটটি কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেগুলো হলোÑ পরিবেশ সংরক্ষণ (বিদ্যালয়, আঙ্গিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা); পুস্তক ও শিখনসামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং সহপাঠ কার্যক্রম; পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি, দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন এবং অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন, আইসিটি। এছাড়া ক্যাবিনেট নির্বাচনের সকল কার্যক্রমই আয়োজন করবে শিক্ষার্থীরা। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রধান শিক্ষক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করেন। আর অষ্টম ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে দুজন নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করা হয়। প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বও পালন করে শিক্ষার্থীরা। ছাত্রছাত্রীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের এ স্টুডেন্টস ক্যাবিনেট। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর যে কোন শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণীতে একটি করে এবং যে কোন তিন শ্রেণীতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দেয়া যাবে। ফলে প্রতিটি শ্রেণী থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণীতে পাঁচজন নির্বাচনের পর সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিন শ্রেণীর আরও তিনজন নির্বাচিত হবে। নির্বাচনী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে শিক্ষার্থীরাই। অন্যান্য নির্বাচনের মতোই ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, ভোটকেন্দ্র, বুথ থাকবে। তবে প্রার্থীদের কোন প্রতীক দেয়া হবে না। আর এ ক্যাবিনেটের মেয়াদ হবে এক বছর। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রতিটি শ্রেণী থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করবে। স্টুডেন্টস ক্যাবিনেট প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার করে সভা করবে। ছয় মাস পর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে সাধারণ সভা করবে। ২০১৫ সাল থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১০ সাল থেকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই আদলে নির্বাচন হয়ে আসছে। রবিবারের কর্মশালায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, শিশুকাল থেকেই গণতন্ত্রের চর্চা, মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন শেখাতে এ স্টুডেন্ট ক্যাবিনেট নির্বাচন। তৃতীয়বারের মতো এবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্বের পাশাপাশি শিক্ষকদের নানা কাজেও সহায়তা করবে।
×