ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আগামী নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন ॥ এরশাদ

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ১৯ মার্চ ২০১৭

আগামী নির্বাচন আমার শেষ  নির্বাচন ॥ এরশাদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর, ১৮ মার্চ ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধামন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ বলেছেন, আমাকে আরেকবার সুযোগ দিন। আগামী নির্বাচন আমার শেষ নির্বাচন। এখন সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের জিততে হবে। জাতীয় পার্টির জোয়ার দেখে আমাদের কাছে সকলে আসতে চায়। এখন পর্যন্ত ৩৫টি দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। শনিবার বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে রংপুর মহানগর জাপার দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। দেশে আইনের শাসন নেই উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, টেলিভিশনে প্রতিদিন দেখা যায়, মা আছে তার ছেলে নেই, স্ত্রী আছে তার স্বামী নেই। দেশে আইনের শাসন নেই। জাতীয় পার্টি এই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এ সময় এরশাদ বলেন, আমার হাতে কোন রক্তের দাগ নেই। আমার হৃদয়, কবি হৃদয়। আমি রক্ত নয়, আকাশ-বাতাস, ফুল-পাখি ভালবাসি। ভারতের উদাহরণ টেনে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, সেখানে প্রবাদ আছে উত্তরপ্রদেশ যার দিল্লীর মসনদ তার। ঠিক বাংলাদেশেও তাই, উত্তরবঙ্গ যার দেশের শাসনভার তার। জেলে থাকার স্মৃতিচারণ করে এরশাদ বলেন, ১৯৯০ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর আমাকে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। ৬ বছর জেলে ছিলাম। আমি যখন পাকিস্তানের কারাগারে ছিলাম তখনও কথা বলতে পারতাম। কিন্তু বেগম জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় যখন কারাগারে ছিলাম তখন কারও সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। তারা চেয়েছিলেন আমি যেন জেলেই মারা যাই। তারা আমাকে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল। তবুও মনোবল হারাইনি। জানতাম, একদিন মানুষের ভালবাসায় জেল থেকে বের হব। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস টেনে এরশাদ আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে ৩৩টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। যার মধ্যে বৃহত্তর রংপুরে ২১টি আসন। ইতিহাসে এটা বিরল ঘটনা যে, জেল থেকে নির্বাচন করে কেউ একাই পর পর দুবার ৫টি আসনেই জয়ী হয়েছে। আমি সেটা পেরেছি। এজন্য রংপুরবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এরশাদ বলেন, সেই সময় বিএনপি আমাকে ক্ষমতায় বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিল কিন্তু আমি রাজি হইনি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে গিয়েও কোন ফল পাইনি। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ আমাদের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসে আমার দলকে ভাগ করে দিল। সুবিচার পেলাম না কারো কাছে। আমি বুঝেছি, আসল বন্ধু তারা কেউ না। আবার ক্ষমতায় যাওয়ার আশা ব্যক্ত করে এরশাদ বলেন, আমার প্রতি কোন মানুষের অভিযোগ নেই। আমার কারণে কোন মায়ের চোখে জল ঝরেনি। তাই বেঁচে আছি। রংপুরের মানুষই আমার প্রকৃত বন্ধু। আগামীতে রংপুরের সব আসন পেলে জাতীয় পার্টি আবার ক্ষমতায় যাবে। নূর হোসেনকে হত্যা করেননি দাবি করে এরশাদ বলেন, নূর হোসেনকে বলির পাঁঠা হিসেবে সাজানো হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে নূর হোসেনের বাবাকে প্রতিমাসে ৫ হাজার করে টাকা দিতাম। আমি তাকে হত্যা করিনি। আমার হাতে রক্তের দাগ নেই। বক্তব্য শেষে আগামী রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নাম ঘোষণা করেন এরশাদ। এর পরে এরশাদ রংপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে সভাপতি ও সদস্য সচিব এস এম ইয়াসিরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেন। মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্রনায়ক সোহেল রানা, মেজর (অব) খালেদ আকতার ও হাফেজ উদ্দিন।
×