ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুই কীর্তিমান স্মরণে ‘বন্ধু রহো রহো সাথে’

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৯ মার্চ ২০১৭

দুই কীর্তিমান স্মরণে ‘বন্ধু রহো  রহো সাথে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তাঁদের ভূমিকাটি অবিস্মরণীয়। একজন সুরের সাধনায় প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন মানবিক সমাজ। অপরজন রং-তুলির আঁচড়ে বার বার এঁকেছেন বাংলাদেশকে। প্রথমজন হলেন সঙ্গীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হক। দ্বিতীয়জন চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। দু’জনই জন্মেছিলেন অগ্নিঝরা এই মার্চে। আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন প্রতিষ্ঠায় রয়েছে তাঁদের অনবদ্য ভূমিকা। সাহিত্যের বাচিক চর্চার সংগঠনটির প্রাণপুরুষ হিসেবে পরিচিত এই দুই কীর্তিমান। জন্মদিন উপলক্ষ করে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মরণ করা হলো বরেণ্য ব্যক্তিত্বদ্বয়কে। গানের সুরে নিবেদন করা হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে জানানো হলো ভালবাসা। আলোচনায় বলা হলো দু’জনের কীর্তিময় জীবনের কথা। শনিবার সন্ধ্যায় ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে ‘বন্ধু রহো রহো সাথে’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শিল্পাঙ্গনের দুই কীর্তিমানকে নিবেদিত গান শোনান লাইসা আহমদ লিসা ও আবদুল ওয়াদুদ। আবৃত্তি পরিবেশন করে বাংলাদেশ ফিল্ম এ্যান্ড থিয়েটার একাডেমি ও কণ্ঠশীলন। দুই কীর্তিমানকে নিয়ে আলোচনা করেন অভিনয়শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম, চিত্রশিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী ও কণ্ঠশীলনের সভাপতি সন্জীদা খাতুন। ?সন্জীদা খাতুন বলেন, সংস্কৃতির পথে হাঁটা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। সমাজে যে কুটিল ও জটিল বিষয় ছড়ানো হচ্ছে এসব থেকে সংস্কৃতি আমাদের বাঁচাবে। সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, এ দুই ব্যক্তিত্বের কাছে বাঙালী সংস্কৃতি ঋণী। আমরা যদি তাদের ধারায় চলতে পারি তাহলে কোন ভয় নেই। সংস্কৃতি চর্চা আমাদের বাঁচার পথ তৈরি করে দেবে। ওয়াহিদুল হক প্রসঙ্গে বলেন, আমি ওয়াহিদুল হকের গুণগ্রাহী। তিনি সংসারবুদ্ধির মানুষ ছিলেন না। কল্পনাপ্রবণ ছিলেন। সেই কল্পনাকে সব সময় রূপ দিতে পারতেন না। তিনি ছায়ানট নিয়েও অনেক স্বপ্ন দেখতেন। এও জানতেন তা বাস্তবে রূপ দিতে পারবে না। বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য আমার ওপর নির্ভর করতেন। বলতেন, ‘মিনু এটা করতে পারবে।’ আমি ওয়াহিদুল হকের কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার চেষ্টা করে গেছি। সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ওয়াহিদুল হক নিজের কথা ভাবতেন। মানুষের কথা ভাবতেন। মানুষের জন্য স্বপ্ন দেখতেন। তার সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। মানুষ অজান্তে তার কাছে আসত। তার কথা শুনত। তাকে ভালবাসত। সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন মার্জিত স্বভাবের মানুষ। সেই চরিত্র তার কাজে ছাপ ফেলেছে। অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন, ছিলেন কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী। তার কাজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মুদ্রণ শিল্প বদলে গেছে। শিল্পী লাইসা আহমেদ লিসার কণ্ঠে ‘চির সখা হে ছেড়ো না’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। কাইয়ুম চৌধুরী ও ওয়াহিদুল হককে নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক লেখা পাঠ করেন মাসুমা জাহান ও ইভা ম-ল। এর পর শিল্পী আবদুল ওয়াদুদ গেয়ে শোনান ‘মোর সন্ধ্যায় তুমি সুন্দর বেশে এসেছো’ ও ‘লহ লহ তুলে লহ নীরব বীণাখানি’।
×