ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শনিবার খিলগাঁওয়ে র‌্যাবের চেকপোস্টে হামলার চেষ্টা, নিহত ১ জঙ্গী ;###;চট্টগ্রামে অভিযান, যশোরে গ্রেফতার ৪

জঙ্গীরা মরিয়া ॥ টানা চারদিন আত্মঘাতী তৎপরতা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৯ মার্চ ২০১৭

জঙ্গীরা মরিয়া ॥ টানা চারদিন আত্মঘাতী তৎপরতা

গাফফার খান চৌধুরী ॥ র‌্যাব সদর দফতরে আত্মঘাতী জঙ্গী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার ভোরে খিলগাঁওয়ে র‌্যাবের চেকপোস্টে আত্মঘাতী জঙ্গী হামলার চেষ্টা হয়। হামলা চালানোর আগেই দায়িত্বরত র‌্যাব সদস্যদের গুলিতে ওই আত্মঘাতী জঙ্গীর মৃত্যু হয়। নিহত জঙ্গীর শরীর ও ব্যাগ থেকে উদ্ধারকৃত শক্তিশালী বোমাগুলো নিস্ক্রিয় করা হয়েছে। বোমাগুলোর নিস্ক্রিয়কালে বিস্ফোরণে সেখানকার মাটি, বালি, ইট, পাথর ও ছোট ছোট গাছ অন্তত পনেরো ফুট উপরে উঠে গিয়েছিল। এই নিয়ে টানা চারদিন ধরে দেশে জঙ্গীদের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জঙ্গীরা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো ধারণা করছে। জঙ্গী তৎপরতা রোধে সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি সাঁড়াশি অভিযান চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের লালখান মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। যশোর সদরে অবস্থিত পশু হাসপাতাল সংলগ্ন একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে রাজধানীর আশকোনা ও খিলগাঁওয়ে পৃথক আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় নিহত দুই জঙ্গীর সুনির্দিষ্ট কোন নাম পরিচয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। নিহতদের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রয়েছে। পৃথক হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে সংশ্লিষ্ট থানা দুটিতে মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল ও নিহতদের দেহ থেকে সংগৃহীত আলামতের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে। জঙ্গী হামলার ঘটনার পর বিমানবন্দর, কারাগার, নৌবন্দরসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বাড়তি চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চলছে। র‌্যাব জানায়, চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডে দুটি জঙ্গী আস্তানায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অভিযানকালে পাঁচ জঙ্গী নিহত হয়। আহত হন কয়েক পুলিশ সদস্য। এরপর থেকেই তারা বাড়তি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সতকর্তার মধ্যেই শুক্রবার র‌্যাব সদর দফতরে আত্মঘাতী জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারী জঙ্গীর শক্তিশালী বিস্ফোরণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এমন ঘটনার পর বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব প্রতিটি চেকপোস্টে বাড়তি তল্লাশি শুরু করে। প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতেও রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন শেখের জায়গা নামক নির্জন স্থানটিতে চেকপোস্ট বসায় র‌্যাব-৩ এর একটি দল। দেখা গেছে, খিলগাঁওয়ের নন্দিপাড়া থেকে ডেমরার দিকে রাস্তাটি চলে গেছে। উঁচু রাস্তার দুই পাশে ধানের ক্ষেত ও মাছ চাষ করার বড় বড় ঝিল ও ঘের রয়েছে। রাস্তাটি খুবই নির্জন। আশপাশে তেমন কোন বসতি নেই। সন্ধ্যার পর পরই এলাকাটি নিরব হয়ে পড়ে। শুধু রাস্তাটিতে ঢাকা থেকে ডেমরা এবং ডেমরা থেকে ঢাকাগামী কিছু যানবাহন ও আশপাশের মানুষজন জরুরী প্রয়োজনে যাতায়াত করে। এছাড়া নির্জন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি হওয়ার ভয়ে তেমন কেউ যাতায়াত করে না। র‌্যাব জানায়, এলাকাটি খুবই নির্জন। স্বাভাবিক কারণেই সেখানে অপরাধমূলক কর্মকা- হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য প্রতিদিন রাতেই সেখানে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চলে। মূলত ওই রাস্তায় যাতায়াতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই চেকপোস্ট বসানো হয়। প্রতিদিনের মতো চেকপোস্টে তল্লাশি চলছিল। ভোর সাড়ে চারটার দিকে আচমকা একটি মোটরসাইকেল নিয়ে একজন দ্রুতগতিতে র‌্যাবের চেকপোস্টের কাছে চলে যায়। দায়িত্বরত র‌্যাব সদস্যরা অন্তত ২০ গজ আগ থেকেই মোটরসাইকেলের আরোহীকে থামার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু আত্মঘাতী হামলার চেষ্টাকারী র‌্যাব সদস্যদের নির্দেশ অমান্য করে মারাত্মক গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে চেকপোস্টের ঠিক কাছে চলে যায়। এ সময় কাঁধে থাকা ব্যাগ থেকে কিছু একটা বের করার চেষ্টা করছিল। সেখানে দায়িত্বরত র‌্যাব সদস্যরা মোটরসাইকেল আরোহীর গতিবিধিতে মারাত্মক সন্দিহান হয়ে পড়েন। তারা ন্যূনতম সুযোগ না দিয়ে আত্মঘাতী হামলার চেষ্টাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। এ সময় র‌্যাবের দুই সদস্য আহত হয়। এক পর্যায়ে আত্মঘাতী হামলাকারী মোটরসাইকেলসহ রাস্তার পাশে পড়ে যায়। দীর্ঘ সময় হামলাকারী সেভাবেই রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। কোন নড়াচড়া না করায় তার কাছে যায় র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় সেখানে গুলি শব্দে আশপাশের মানুষ জড়ো হয়। আত্মঘাতী হামলাকারীর চারদিক ঘিরে রাখা হয়। ভোরের আলো ফুটে উঠলে সে যুবকের পাশে একটি পিঠে ঝুলানোর ব্যাগ দেখা যায়। ঘটনার পর পরই র‌্যাবের বম্ব ডিসপোজ টিমকে খবর দেয়া হয়। দ্রুত বম্ব ডিসপোজাল টিম সেখানে হাজির হয়। সেইসঙ্গে সিআইডির ফরেনসিক টিমও সেখানে যায়। র‌্যাব জানায়, দেখা যায় ওই যুবকের নিথর দেহ পড়ে আছে। তার বুকে কিছু একটা বাঁধা দেখতে পাওয়া যায়। আর পাশেই পিঠে ঝুলানো একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখা যায়। র‌্যাবের বম্ব ডিসপোজাল টিম ব্যাগ ও নিহতের দেহ থেকে শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করে। পরে সেগুলো নিরাপদে নিস্ক্রিয় করা হয়। নিস্ক্রিয় করার সময় বোমার বিস্ফোরণে সেখানকার মাটি, বালি, ইট, পাথর ও ছোট ছোট গাছপালা অন্তত পনেরো ফুট উপরে ওঠে গিয়েছিল। বিস্ফোরণে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বোমাগুলো খুবই শক্তিশালী ছিল বলে র‌্যাবের বম্ব ডিসপোজাল টিম জানায়। ঘটনাস্থল থেকে নম্বরবিহীন একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি নিহত জঙ্গীর দেহ এবং ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। নিহতের শরীরে ৬ থেকে ৭টি গুলি চিহ্ন রয়েছে বলে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জানান। এসব আলামতের ডিএনএসহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে। পরে লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। র‌্যাবের গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, হামলাকারী নিজের পরিচয় গোপন রাখতেই নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছে। আর শুক্রবারের হামলা সফল না হওয়ায় আবার র‌্যাবের ওপর হামলার ঘটনাটি ঘটিয়ে থাকতে পারে। দুই হামলার মধ্যে বিশেষ যোগসূত্র থাকাও বিচিত্র নয়। এমনকি দুই হামলাকারী একই আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য হতে পারে। এদিকে শুক্রবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আশকোনায় হাজী ক্যাম্প লাগোয়া র‌্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে নিহত আত্মঘাতী হামলাকারীর পরিচয় জানা যায়নি। শনিবার র‌্যাবের মুখপাত্র এবং আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, একজন নারী নিজেকে নিহত যুককের মা বলে দাবি করেছেন। ওই নারীর ভাষ্য, তার নাম আমিরন। বাড়ি পিরোজপুরে। ঢাকায় রফিকের চায়ের দোকানে কাজ করত তার ছেলে। পাঁচ দিন আগে বাড়ি থেকে তার ছেলে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। এই নারীর দাবির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার দায় স্বীকার করে আইএসের তরফ থেকে আসা বিবৃতির বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলছেন, বাংলাদেশে আইএসের কোন অস্তিত্ব নেই। এদিকে শনিবার আশকোনায় র‌্যাব সদর দফতরে নিহত আত্মঘাতী হামলাকারীর ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাঃ সোহেল মাহমুদ জানান, ইতোপূর্বে আর কোন জঙ্গীর লাশ এত ছিন্নভিন্ন হওয়া দেখা যায়নি। বিস্ফোরণে নিহতের বুক ও পেট ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তার পেটে বেল্ট বাঁধা ছিল। কাঁধের কনুই পর্যন্ত বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। নিহতের পেটে ইলেকট্রিক ওয়ার (বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম) পাওয়া গেছে। কাপড়-চোপড় পেটের ভেতর ঢুকে গেছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য ওই আত্মঘাতী হামলাকারীর দাঁত, চুল ও ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার লিভার ও পাকস্থলীর কিছু অংশ পাওয়া গেছে। একটা কিডনি আছে। হামলার আগে সে শক্তিবর্ধক কিছু খেয়েছিল কিনা জানতে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। আত্মঘাতী এ হামলার ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় শনিবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। থানাটির ওসি নূরে আজম মিয়া জানান, মামলায় অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। চট্টগ্রামে পুলিশের ব্লক রেইড, লালখান বাজার মাদ্রাসায় অভিযান ॥ স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, চট্টগ্রামের সীতাকু-ে এক শিশু ও ৪ জঙ্গী নিহত হওয়ার ঘটনার পর চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় চলছে পুলিশের ব্লক রেইড। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সন্ধ্যায় সিএমপির অর্ধশত পুলিশ সদস্য অভিযান চালায় লালখান বাজারের জমিয়তুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায়। প্রায় ১ ঘণ্টার অভিযান শেষে ঐ মাদ্রাসার অভ্যন্তর থেকে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, এ মাদ্রাসাকে নিয়ে অতীতে জঙ্গী সন্ত্রাসী তৎপরতার বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, পুলিশ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি ইজহারের ছেলে হারুন ইজহার তাৎক্ষণিক মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। এতে মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্ধশত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তবে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা মাদ্রাসায় অভিযান পরিচালনা হবে প্রসঙ্গে মুফতি হারুন ইজহারকে আগেভাগেই ফোনে অবহিত করেন বলে তিনি জানান। ফলে পুলিশের এ অভিযানটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত সিএমপির অর্ধশত সদস্য অবস্থান নেয় লালখান বাজার মাদ্রাসায়। মূলত এ মাদ্রাসাটি জমিয়তুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা নামে থাকলেও লালখান বাজার মাদ্রাসা নামে পরিচিত। কওমি মতাদর্শের এ মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মুফতি ইজহার। মুফতি ইজহারের ছেলে হারুন ইজহারও এ মাদ্রাসার শিক্ষক। শনিবার বিকেলে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হবে এ প্রসঙ্গে পুলিশ আগেভাগেই হারুন ইজহারকে অবগত করে। এমনকি বিকেলে মাদ্রাসার গেটের বাইরে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নেয়ার পর পুনরায় হারুন ইজহারের অনুমতি নিয়ে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। মাদ্রাসার বিভিন্ন কক্ষে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু জঙ্গীপনা বিষয়ক কোন উৎস সেখানে পায়নি পুলিশ। এমন তথ্য অভিযান শেষে সিএমপি এডিসি মুত্তাকী ইবনু মিনান সাংবাদিকদের জানান। এদিকে, অর্ধশত পুলিশের টিম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারুন ইজহার এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এ সমাবেশে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, পুলিশ মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ তল্লাশি করলেও কোন কিছুই পায়নি। তবে দেশব্যাপী পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এ ধরনের অভিযানের উদ্দেশ্য কী। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, আমি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পরিচালক। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছেন, এটা স্বাভাবিক তল্লাশি। আগে থেকে মাদ্রাসায় আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে উল্টাপাল্টা ঘটনা ঘটছে। তাই তল্লাশিতে এসেছে পুলিশ। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে অপর প্রান্তে এ মাদ্রাসার পরিস্থিতি দেখানো হয়েছে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। যশোরে জঙ্গী সন্দেহে ৪ নারীপুরুষ আটক ॥ স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, জঙ্গী সন্দেহে চার নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে শহরের শংকরপুর পশু হাসপাতাল সংলগ্ন একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ১৩টি ‘জিহাদী বই’ ও ৬টি ওয়াজের ডিক্স উদ্ধার হয়। আটককৃতরা হলেন গৃহকর্ত্রী মাইশা বিলকিস (৪২), তার বোন শহরের রায়পাড়ার হাসান আল মামুনের স্ত্রী নুসরাত পারভীন (৩৫), খুলনা কয়রার কাকমার চরের রবিউল ইসলাম ও মনিরামপুরের মদনপুর গ্রামের আফজাল হোসেন (৫৫)। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল বাশার জানান, ওই বাড়ির মালিক যশোর সদরের রুদ্রপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষক তৈয়বুর রহমান গত দু’দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক হয়েছেন। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তবে তৈয়বুরের স্ত্রী আটক বিলকিস দাবি করেন, তিনি বা তার পরিবারের কেউ জঙ্গীবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। শিক্ষকতার পাশাপশি তার স্বামী দেশের বিভিন্ন স্থানে মাহফিলে ওয়াজ করেন। প্রতিবেশীরা জানান, সম্প্রতি নির্মিত শংকরপুরের এই বাড়িতে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের মানুষ আসা-যাওয়া করত। সেখানে ইসলামী তালিমও বসত।
×