ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দায়িত্বহীনতার প্রশ্ন

গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরেই জঙ্গীরা সক্রিয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৮ মার্চ ২০১৭

 গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরেই জঙ্গীরা সক্রিয়

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে জঙ্গী সদস্যরা। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা আনসারুল্লাহ ইসলামী দল ও জেএমবি সক্রিয় থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এবার তৎপর জঙ্গী সংগঠনের নামকরণ করা হয়েছে নব্য জেএমবি। তবে তেমন কোন গোপন অভিযান নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর। অভিযোগ রয়েছে, আকস্মিকভাবে একটি ঘটনা ঘটার পর কয়েকদিন নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি, সিআইডি, পিবিআই, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটসহ সোয়াট টিম। এরপর আবারও প্রশাসনের ঢিলেঢালা অবস্থায় গোয়েন্দা সংস্থার অগোচরেই কার্যক্রম চালাচ্ছে জঙ্গীরা। উল্লেখ্য, রেকর্ড অনুযায়ী কক্সবাজারের উশু একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮ হাজার জঙ্গী মাঠে কাজ করছে বলে র‌্যার সেভেনের কাছে এমন তথ্য ছিল ২০১৫ সালের শুরুতে। দেশব্যাপী নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট থাকার কথা বললেও জঙ্গী আক্রমণের পরই তাদের তৎপরতা বেড়ে যায়। প্রশ্ন উঠেছে এ ধরনের তৎপরতা সরকারকে আই ওয়াশ কিনা। অথচ দেশব্যাপী অপতৎপরতা চালাতে জঙ্গীরা জনগণকে জানান দিতে নাশকতার লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত জঙ্গীদের সন্ধান মিলেছে এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে সীতাকু-, মীরসরাই, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা। তবে এসব এলাকায় র‌্যাবের ফোন নাম্বারও দেয়া হয়েছে জঙ্গীদের সন্ধানে। র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স টিম এ বিষয়ে সক্রিয় থাকলেও সীতাকু-ে আবাসিক ভবনে জঙ্গীর অবস্থান নিশ্চিত করেছে বাড়ির মালিক নিজেই। অভিযোগ উঠেছে সাধন কুঠিরের মালিক শুভাশিষ দম্পতি ও স্বপ্ননীড়ের বাসিন্দাদের কয়েকদিনের জন্য পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বসবাসকারীরা। র‌্যাবের এক তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে, জঙ্গীরা চানচুয়ান, দাউসু, গুনসু, জিয়ানসু, জিয়াংসু, নানসুয়ান, নান্দাও, নানগুন, তাইসিসুয়ান, তাইসি জিয়ান ও চানসা নামক ভাষা ও বিভিন্ন ইভেন্টের উপর প্রশিক্ষণ রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে উপর দেড় শ’ জঙ্গীকে কক্সবাজারে প্রশিক্ষণ ও সনদ প্রদান করা হয়েছিল ২০১০ সালে। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হওয়াদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল একে-৪৭ রাইফেল প্রশিক্ষণের ভিডিও চিত্র, সিরিয়ায় আইএসআইয়ের জঙ্গী প্রশিক্ষণ, আল নুসরা ট্রেনিং ভিডিও, আল কায়েদার ট্রেনিং ভিডিও, হামাস ও হিজবুল্লাহ গেরিলার ট্রেনিং ভিডিও, আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের প্রশিক্ষণ ভিডিও। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় থাকা এসএসএফের ট্রেনিং ভিডিও ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে তাদের কাছ থেকে। এছাড়াও গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উড়োজাহাজ হাইজ্যাক করার ভিডিও, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিসহ দেশের উচ্চ পর্যায়ের মানুষদের অপহরণ ও নির্যাতনের ভিডিও চিত্র, ওসামা বিন লাদেন এবং আইমান আল জাওয়াহিরির বক্তব্য ও সাক্ষাতকার। আফগান যুদ্ধসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার দৃশ্য ভিডিও আকারে দেখিয়ে জঙ্গী প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এমন তথ্য র‌্যাবের এক অভিযানের। তবে সীতাকু-ের জঙ্গীরা এমন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কিনা তাও মানুষের অজ্ঞাত রয়ে গেল সুইসাইটের কারণে।
×