ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এয়ারপোর্ট-জেলখানায় রেড এ্যালার্ট

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৮ মার্চ ২০১৭

এয়ারপোর্ট-জেলখানায় রেড এ্যালার্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সীতাকু-ে জঙ্গী আস্তানায় অভিযান ও আশকোনায় র‌্যাবের নির্মাণাধীন কার্যালয়ের ভেতরে শুক্রবার আত্মঘাতী হামলার ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর ও কারাগারগুলোতে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সব বিমানবন্দর ও কারাগারে দেয়া হয়েছে অধিকতর সতর্কতা জারির নির্দেশ। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অধিনায়ক রাশেদুল ইসলাম খান জানান, বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে তল্লাশি। কারাগারগুলোতে জারি করা হয়েছে রেডএ্যালার্ট। দেশের সবগুলো বিমানবন্দরে অধিকতর সতর্কতা জারির নির্দেশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চত করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন। বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তারিক জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য বিমানবন্দরে মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, প্রথমবারের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দফতরে কোন জঙ্গী হামলার ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার। জঙ্গী গোষ্ঠীর উত্থানের পর থেকে ছোট-বড় একাধিক জঙ্গী হামলায় টার্গেট ছিল ব্যক্তি বা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ভবন। এ হামলার পর সারাদেশের থানা, কারাগার, সকল বন্দরগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দেশের থানাগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরে থানার গেটে ডিউটি করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাশেদা সুলতানা জানান-শাহজালালসহ সব বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে দেশের সকল কেন্দ্রীয় ও জেলা কারাগারের ভেতরে ও বাইরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা (রেডএ্যালার্ট) জারি করেছে কারা অধিদফকতর। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন জনকণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটি বহাল থাকবে বলে জানা গেছে। দুপুর ৩টা থেকে এ নির্দেশ কার্যকর করা হচ্ছে। কারাসূত্র জানায়, নিরাপত্তা সতর্কতার জারির পর দেশের সকল বিশেষ করে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও জেলা কারাগারে আটক সকল জঙ্গী, শীর্ষ সন্ত্রাসী ও গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর মামলার আসামিদের বিশেষ নজরধারীর আওতায় আনতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের সকল কারাগারে বন্দীর সঙ্গে স্বাক্ষাতের জন্য আসা স্বজনদের ও আদালত থেকে আসা সকল আসামির দেহ কঠোরভাবে তল্লাশি করা শুরু হয়। কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশে বলা হয়েছে, কারা ফটকে ও আশপাশের সকল নিরাপত্তারক্ষীর বুলেট প্রুফ জ্যাকেটসহ নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সকল কারারক্ষীকে আদালত ফেরত বা নতুন সকল আসামি ও দর্শনার্থীদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিতে বলা হয়েছে। বন্দীর সঙ্গে আনা মালামাল ভালভাবে তল্লাশি করতে বলা হয়েছে। কারা এলাকায় সন্দেহজনক কাউকে ঘোরাফেরা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কারা মহাপরির্দশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন জনকণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গীর আত্মঘাতী হামলার পর কারাবন্দীর সার্বিক সর্বোচ্চ নিরাপত্তা রক্ষায় শুক্রবার দুপুর থেকে দেশের সকল কারাগারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যদিও বন্দীর নিরাপত্তায় কারা কর্তৃপক্ষ সর্বদাই সতর্কাবস্থায় থাকে। কারা নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বরত কারারক্ষীরা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া অস্ত্রধারী যেসব কারারক্ষী আছে, তাদের সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কারা অভ্যন্তরে, কারা সীমানায় ও আশপাশে সরকারের অন্যান্য সকল গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি কারাগারের আশপাশে টহল বাড়ানো হয়েছে। আদালত ফেরত বা কারাগারে আসা সকল নতুন বন্দী ও তাদের সঙ্গের সকল মালামাল মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। বন্দীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসা স্বজনদেরকেও তল্লাশি করতে বলঅ হয়েছে। মূলত কারাবন্দীকে নিরাপদ রাখতে ও যে কোন প্রকার অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিতে আমরা সর্বদাই প্রস্তুত।
×