আরাফাত মুন্না ॥ রাজধানীর শনিরআখড়ায় সড়ক ও ফুটপাথ দখল করেই বসানো হয়েছে ফল, সবজি, রুটি, কাপড়সহ নানা দোকানপাট। এছাড়া ফুটপাথ দখল করেই গড়ে উঠেছে অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও ট্রাক স্ট্যান্ড। ফলে সড়কগুলো সরু হওয়ায় চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায়, শনির আখড়া মোড়ের আয়েশা-মোশারফ মার্কেটের সামনে সড়ক দখল করে নানা দোকানপাট বসানো হয়েছে। মার্কেটের উত্তর পাশে সড়কের ওপরই সারিবদ্ধ কাপড়ের দোকান। পাশেই হক বেকারির সামনে শনির আখড়া-দোলাইরপাড় অটোরিক্সা ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড এবং ফলের দোকান বসানো হয়েছে। এর দক্ষিণে রয়েছে ২৪ ফুট রোডের সিএনজি স্ট্যান্ড। সড়কের ওপরে ও দু’পাশের ফুটপাথ দখল করে বসেছে মার্কেট। পথচারীদের অভিযোগ, ফুটপাথ দখল করে রিক্সা, হোন্ডা ও প্রাইভেট গাড়ি রাখা হয় প্রতিনিয়ত।
ফুটপাথ দখলকারী ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার পাশের বাড়ি ও মার্কেট মালিকরাই আমাদের বসিয়েছে। তাদের দৈনিক ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা দিতে হয়। অথবা মাস হিসাবে টাকা দিতে হয়। তারা বলেন, রাজনৈতিক ও পুলিশের লোকদের মাসোয়ারা দিয়েই চলছে ফুটপাথের ব্যবসা। শনির আখড়া থেকে ২৪ ফুট, দোলাইরপাড়, বর্ণমালা আদর্শ স্কুল এ্যান্ড কলেজ রোড থেকে গোয়ালবাড়ী মোড় পর্যন্ত ফুটপাথ ও সড়ক দখল করে রয়েছে প্রায় ৭শ’ দোকান। এ সড়কের ওপর ও ফুটপাথ দখল করে যেখানে সেখানে দোকান বসানোর ফলে চাঁদাবাজরা নিচ্ছে বড় অংকের টাকা। এদিকে শনির আখড়া থেকে দোলাইরপাড় সড়কে প্রতিদিন পার্ক করা থাকে ৭৫টি অটোরিক্সা বা ইজিবাইক। তাদের কাছ থেকে চাঁদা নেয়া হয় ৭০ টাকা করে। পাশের শনির আখড়া থেকে ২৪ ফুট সড়কে থাকে প্রায় ১২০টি সিএনজি। প্রতি সিএনজি থেকে চাঁদা তোলা হয় ১০০ টাকা করে। ফুটপাথ দখল করে বসানো অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের লোকজনই এ চাঁদা তোলে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সড়কের পাশে যাদের বাড়ি তারা এমনিতেই সরকারী জায়গা দখল করে মার্কেট ও দোকান বসিয়েছেন। তারাই আবার বাড়ি ও মার্কেটের সামনে ফুটপাথের ওপর দোকান বসিয়ে ভাড়া নেন। সড়ক দখল করে অটোরিক্সা ও ইজিবাইক স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নামধারী কিছু লোক পুলিশের সহায়তায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে। এ বিষয়ে দনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুম্মন মিয়া বলেন, রাস্তা ও ফুটপাথে দোকান বসানোর ফলে মানুষের চলাচলে খুবই সমস্যা হচ্ছে। ফুটপাথে দোকান না বসানোর জন্য আমি বহুবার বলেছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা।
এ বিষয়ে কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের বার বার উচ্ছেদের পরেও তারা আবার বসে। পুলিশ এখান থেকে চাঁদা নেয় এমন অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।