ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে শেষ আটে মোনাকো

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৭ মার্চ ২০১৭

ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে শেষ আটে মোনাকো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরের মাঠে প্রথম লেগ ৫-৩ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু না সেই এক পা হড়কে গেছে ইংলিশ ক্লাবটির। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে পড়তে হয়েছে পেপ গার্ডিওলার দলকে। বুধবার রাতে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে স্বাগতিক ফরাসী ক্লাব মোনাকোর কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে অতিথি ম্যানসিটি। তাতেই কপাল পুড়েছে ইংলিশ জায়ান্টদের। আর শেষ হাসি হেসেছে ফরাসী ক্লাবটি। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান হয় ৬-৬ গোল। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে বেশি গোল করার সুবাদে কোয়ার্টারের টিকেট পেয়েছে মোনাকো। এর ফলে স্বদেশী ক্লাব পিএসজির শেষ আটে উঠতে না পারার কষ্ট তাদের সমর্থকদের কিছুটা হলেও ভোলাতে পেরেছে দলটি। স্পেনের তৃতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এর আগে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনাও সেরা আটে উঠেছে। শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠ ভিসেন্টে ক্যালডেরনে জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে এ্যাটলেটিকো। এর আগে প্রথম লেগে জার্মানি থেকে এ্যাটলেটিকো জিতেছিল ৪-২ গোলে। ম্যাচ শেষে সিটির ফুটবলারদের মুখের দিকে তাকানোই যাচ্ছিল না। কোচ গার্ডিওলা যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেন। একটু আগে যা দেখেছেন, তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না এই কোচ। ভিন্ন চিত্র মোনাকো শিবিরে। আনন্দে আত্মহারা ফরাসী ক্লাবটি। তাদের কাছেও এই জয় কিছুটা অবিশ্বাস্যই। কারণ ইতিহাদে প্রথম লেগের ম্যাচটা বড় ব্যবধানে জিতে শেষ আট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু ফিরতি লেগে অবিশ্বাস্য কীর্তি গড়ে সিটিকে বিদায় করেছে মোনাকো। ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই সিটিজেনদের চেপে ধরে মোনাকো। একের পর এক আক্রমণ এসে আছড়ে পড়ে সিটির রক্ষণভাগে। অস্টম মিনিটেই কিলিয়ান বাপে এগিয়ে দেন মোনাকোকে। সিলভার বাড়িয়ে দেয়া বল পায়ের আলতো ছোঁয়ায় সিটির জালে জড়ান কিলিয়ান। ২৯ মিনিটে সিটির জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান ফ্যাবিনহো। আট গজ দূর থেকে দারুণ শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডার। দুই গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মোনাকো। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় ম্যানসিটি। ৭১ মিনিটে সিটির হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন লিরয় সানে। তবে ৭৭ মিনিটে বাকাইয়ুকুর গোল সিটির বিদায় নিশ্চিত করে দেয়। প্রথম লেগে দুই গোল করা তারকা স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও সময়মতো কোমরের ইনজুরি কাটিয়ে সুস্থ হয়ে না ওঠায় খেলতে পারেনি। এ কারণে কিছুটা বিপাকে পড়ে মোনাকে। তার পরিবর্তে মাঠে নামানো হয় ভালেকেও জার্মেইকে। রক্ষণভাগে নিষেধাজ্ঞায় থাকা কামিল গিলকের স্থানে মূল একাদশে ফেরেন জেমারসন। এটা ছিল কোচ হিসেবে গার্ডিওলার ইউরোপে শততম ম্যাচ। সিটিজেনদের মূল একাদশে তিনি দুটি পরিবর্তন এনেছিলেন। নিকোলাস ওটামেন্ডি ও ইয়াইয়া টোরের জায়গায় তিনি সুযোগ দিয়েছিলেন গায়েল ক্লিচি ও আলেকসান্দার কোলারোভকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। ২০০৪ সালের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করা মোনাকোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল কোচ লিওনার্দো জারডিমের অধীনে ভাল কিছু করে দেখানোর। ওই বছর কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ৪-২ গোলে পিছিয়ে থাকার পর দারুণভাবে এ্যাওয়ে গোলে স্প্যানিশ জায়ান্টদের হারিয়েছিল ফরাসী দলটি। এবারের ফরাসী লীগে মৌসুমের অন্যতম সেরা তরুণ প্রতিভা হিসেবে প্রমাণ করা ১৮ বছর বয়সী বাপের কল্যাণেই স্বাগতিকরা বেশ উজ্জীবিত ছিল। সিটি রক্ষণভাগকে নড়বড়ে করে দিয়ে মোনাকোর হয়ে প্রথম আক্রমণটাই করেছিলেন বাপে। শেষ পর্যন্ত আধিপত্য ধরে রেখে জয় তুলে নেয় মোনাকো।
×