ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে চীনা দূত আসছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৭ মার্চ ২০১৭

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে চীনা দূত আসছেন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছেন চীনের বিশেষ দূত সান গোসিয়াং। তিনি আগামী ২০-২২ মার্চ তিনদিন ঢাকা সফর করবেন। এই সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে চীনের অবস্থান জানা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এসব তথ্য জানায়। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে চীন থেকে যে বিশেষ দূত আসছেন, তিনি দেশটির এশিয়া বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। ঢাকা সফরকালে চীনের বিশেষ দূত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন। সূত্র জানায়, মিয়ানমার পরিস্থিতি সম্পর্কে চীনের অবস্থান ভালভাবে জানতে চায় বাংলাদেশ। তবে ইতোমধ্যেই চীন বলেছে, এটি মিয়ানমারের সমস্যা এবং এর সমাধানও তাদেরকেই করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াংকে কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখার জন্যও ইতোমধ্যেই অনুরোধ করা হয়েছে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কট সমস্যা সমাধানে অনেক আগেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেছে। বাংলাদেশের আহ্বানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাড়াও দিয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে মিয়ানমারের ওপর চীনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করে আসছে বাংলাদেশ। কেননা ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে এখন উচ্চতর সম্পর্ক বিরাজ করছে। সে কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীনের সহযোগিতা নিতে চায় বাংলাদেশ। চীনের বিশেষ দূতের ঢাকা সফরের মধ্যে দিয়ে এই সহযোগিতার নতুন পথ খুলবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার। মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা সঙ্কট তৈরির পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য এর আগে মিয়ানমারের বিশেষ দূত ইউ কিও তিন ঢাকা সফর করেছেন। মিয়ানমারের বিশেষ দূতের ঢাকা সফরের পরে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ দূত ইয়াংহি লিও বাংলাদেশ সফর করেন। ইয়াংহি লি বাংলাদেশ সফরের পর জাতিসংঘে যে প্রতিবেদন পেশ করেছেন, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে চায়। এ বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা নেয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত বছর ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের পুলিশ ফাঁড়িতে হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চরম নিপীড়ন শুরু করেছে সেনাবাহিনী। শ’ শ’ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণ করা হয়েছে বহু নারীকে। জীবন বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ৯ অক্টোবরের পর থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। আর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৩০ হাজার শরণার্থী রয়েছে। এর আগে থেকেই আরও তিনলাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নিয়ে হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গারচরে আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার।
×