ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা

সাবেক এমপি ডাঃ ইকবালের স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ের ৬ মাসের জামিন

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১৭ মার্চ ২০১৭

সাবেক এমপি ডাঃ ইকবালের স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ের ৬ মাসের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ এইচ বি এম ইকবালের স্ত্রী, ছেলেমেয়েসহ চারজনকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের করা আপীল শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছে আপীল বিভাগ। অন্যদিকে ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে উঠে আসা ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার জন্য তাদের চাকরি থেকে অপসারণের ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার আপীল ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ এইচ বি এম ইকবালের স্ত্রী, ছেলেমেয়েসহ চারজনকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এই চারজন হলেনÑ ইকবালের স্ত্রী মমতাজ বেগম ডলি, ছেলে মোহাম্মদ ইমরান ইকবাল ও মঈন ইকবাল এবং মেয়ে নওরীন ইকবাল। এর আগে বুধবার আপীলের ক্ষেত্রে বিলম্ব মওকুফে তাদের আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্টের একই বেঞ্চ। আদালতে ইকবালের পরিবারের সদস্যদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। দুদুকের আবেদন মুলতবি ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছে আপীল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়। পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টের আদেশটা এখনও পাইনি। তাই সময়ের আবেদন করেছি। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এক সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি করেছে।’ বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মোঃ খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৭ মার্চ খালেদার নাইকো মামলা স্থগিতের আদেশ দেয়। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের আবেদনে সাড়া দিয়ে গত ১২ মার্চ আপীল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তা বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। মামলার আরেক আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের বিষয়ে যে রুল শুনানি চলছে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত খালেদার জিয়ার মামলার কার্যক্রমও স্থগিত থাকবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছে। দুই কর্মকর্তাকে অপসারণ নয় কেন ॥ ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে উঠে আসা ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার জন্য তাদেরকে চাকরি থেকে অপসারণের ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। অভিযুক্ত এ দুই কর্মকর্তার পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা একটি সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে জবাব দিতে বলেছে আদালত। রায়ের পর্যবেক্ষণে যে দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতার বিষয়টি ওঠে আসে তারা হলেন- ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, শিশুমৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় এ দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা প্রমাণ হওয়ার পরও তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা জনস্বার্থবিরোধী। তাই আদালত আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে এ দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং তাদের চাকরি থেকে অপসারণের ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে স্বাস্থ্য সচিব ও ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে।
×