ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফটিকছড়িতে বনের কাঠ অবাধে পাচার

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৭ মার্চ ২০১৭

ফটিকছড়িতে বনের কাঠ অবাধে পাচার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, ১৬ মার্চ ॥ বৃহত্তর ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর বনাঞ্চল থেকে অবাধে পাচার হচ্ছে কাঠ। সরকারী ও সামাজিক বনায়ন উজাড় হচ্ছে দেদার। বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে কাঠ ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত কাঠ পাচার করছে। এসব কাঠ স্থানীয় ইটভাটি এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবারহ করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বন কর্মকর্তা জানান, এহেন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে ওই দুই উপজেলার সব পাহাড় ন্যাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, বৃক্ষরাজি কমে যাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক দৃর্যোগও বাড়তে পারে। এ দুই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক শ্রেণীর কাঠ ব্যবসায়ী স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে সরকারী সংরক্ষিত বন ছাড়াও সামাজিক বনায়ন নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে। হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী রেঞ্জের হাটহাজারী বন বিট, মন্দাকিনি বিট, শোভনছড়ি বিট, সর্তা বিট, ফটিকছড়িতে হারুয়ালছড়ি রেঞ্চ, নারায়ণহাট রেঞ্চের বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চলে দিনদুপুরে গাছ কাটা হচ্ছে। এসব গাছ দিনভর কেটে সন্ধ্যায় পাচার করতে দেখা যায়। বন বিভাগের বিভিন্ন চেকপোস্ট দিয়ে কাঠবোঝাই ট্রাক-জিপ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। ভূজপুর, দাঁতমারা, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী পুলিশ ট্রাক-জিপ থেকে মাসোহারা টাকা নেয়ার প্রবণতা থাকায় কাঠ পাচারের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। অন্যদিকে, উত্তর চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকু-, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বর্তমানে চার শতাধিক ইটের ভাটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পাহাড়ী কাঠ। কোন কোন এলাকায় পাহাড় ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে ইটভাটি। এসব ইটভাটি বন্ধ না করে কাঠ পাচারে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এহেন কাঠ পাচারের ঘটনা রোধ নিয়ে খোদ চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এ বিভাজনে একে অপরের প্রতি সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় বন আইন প্রয়োগে ভাটা পড়েছে। ফলে, অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা সহজেই প্রতিদিন পাহাড়ে গাছ কাটা এবং পাচারে সাহস পাচ্ছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম আবদুল ওয়াদুদ জানান, পাহাড়ী এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষায় বন কর্মীরা রীতিমতো দায়িত্ব পালন করছেন। মাঝেমধ্যে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় কোন কোন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে বন নিধনের ঘটনা ঘটছে।
×