ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রভাব বলয় নিয়ে এখনও বলকানে উত্তেজনা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৭ মার্চ ২০১৭

প্রভাব বলয় নিয়ে এখনও বলকানে উত্তেজনা

বলকান অঞ্চলে ধ্বংসকর যুদ্ধের অবসান হয়েছে প্রায় দুই দশক আগে। কিন্তু উত্তেজনা বেড়েছে পুরো অঞ্চলে। এখনও রাশিয়া ও পাশ্চাত্যের মধ্যে লড়াই চলছে প্রভার বলয় বিস্তার নিয়ে। খবর এএফপির। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু প্রধান সমস্যা রয়েছে। প্রথমেই আসছে মন্টিনিগ্রো প্রসঙ্গ। মন্টিনিগ্রোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতা মাইলো দুকানোভিচ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন তার উত্তরসূরি দুসকো মারকোভিচের কাছে। কিন্তু দেশটির এ বছর ন্যাটোতে যোগ দেয়ার বিষয়টি রয়েছে একই অবস্থানে। দেশটির পাশ্চাত্যমুখী হওয়ার পথ বিতর্কিত হয়েই রয়েছে। ৬ লাখ ২০ হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ ছোট্ট দেশটিতে সহিংস বিক্ষোভ সংঘটিত হয়েছে ২০১৫ সালে। এখানে প্রধানত অর্থোডক্স সøাভদের বাস। ন্যাটোবিরোধী সমাবেশ ও ন্যাটো প্রশ্নে গণভোট দাবির সমর্থনের পেছনে মস্কো রয়েছে বলে অভিযোগ দুকানোভিচের। অনেকের আশঙ্কা যে, ন্যাটো-প্রবেশ অনুমোদনের জন্য এ বসন্তে যখন পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকা হবে তখন আবারও বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে। মন্টিনিগ্রোর ১৬ অক্টোবরের নির্বাচনের আগে কয়েকজন সার্বীয় নাগরিককে গ্রেফতার করা হয় নাটকীয়ভাবে। তাদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ও দুকানোভিচকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়। বসনিয়ার ঐক্য ॥ বসনীয় সার্বদের নিজস্ব বিতর্কিত ‘জাতীয় ছুটির দিবস’ উদযাপনের জন্য তাদের অধিকারের ওপর একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয় গত বছর। এর পর থেকে তাদের নেতা মাইলোরাদ দোদিক বসনিয়ার সার্ব-অস্তিত্ব থেকে পৃথক হওয়ার ব্যাপারে ভোট অনুষ্ঠানের জন্য আলোচনা করে যাচ্ছেন নিয়মিত। পাশ্চাত্যের এক সময়ের অতি প্রিয় ব্যক্তি দোদিক এখন উগ্র জাতীয়তাবাদী সার্ব-ভাষায় বক্তৃতা করছেন। তার সহযোগী রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সমক্ষে অবতীর্ণ হচ্ছেন এবং বসনিয়ার মুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বর্সনিয়ার দীর্ঘকাল টিকে থাকার ব্যাপারে তিনি সন্দিহান। তিনি বসনিয়াকে ‘এমন একটি স্থান যা কাম্য নয় কারও কাছে’ বলে বর্ণনা করেন। দোদিক আশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, তিনি যে কোন ধরনের অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে দূরে থাকবেন। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেন। আমরা যে ধারণা ত্যাগ করব না। গভীরভাবে বিভক্ত এ দেশটিতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার গণভোট হবে বসনীয় মুসলিম ও পাশ্চাত্যের জন্য এক চরমরেখা যা বাস্তবায়িত হবে ২০ বছর জাতিগত লড়াইয়ের পরে। এ লড়াইয়ে ১ লাখ লোক নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কসোভো প্রশ্ন ॥ সাবেক সার্বীয় প্রদেশ এবং ১৯৯৮-১৯৯৯ যুদ্ধের স্থল কসোভায় সে সময় নিহত হয়েছে ১৩ হাজার মানুষ। কসোভো ২০০৮-এ স্বাধীনতা ঘোষণা করে একতরফাভাবে। দেশটির সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নিয়েছে ১০০র বেশি দেশ। কিন্তু বেলগ্রেড ও এর সহযোগী মস্কো স্বীকৃতি দেয়নি এখনও। এ ব্যাপারে তারা প্রত্যয়ী। সার্বীয় শাসনতন্ত্রে কসোভোর দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ বলে উল্লেখ রয়েছে। বেলগ্রেড ও প্রিস্টিনার মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগে আলোচনায় এক বাস্তবসম্মত অগ্রগতি হলেও সাম্প্রতিক কয়েক মাস ধরে আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। কসোভোর জাতিগত আলবেনীয়রা কসোভোর সার্ব সংখ্যালঘুদের প্রতি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন দেয়ার ব্যাপার অনিচ্ছুক। কসোভোর সাবেক বিদ্রোহী কর্মান্ডার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী রামুশ হারাদিনাজ ফ্রান্সে গ্রেফতার হওয়ার কারণেও সম্পর্কের অবনতি হয়। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সার্বীয় গ্রেফতারি পরোয়ানায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
×