ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বৈদেশিক সাহায্য কমাচ্ছেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৭ মার্চ ২০১৭

বৈদেশিক সাহায্য কমাচ্ছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে বৈদেশিক সাহায্য ব্যাপক হারে কাটছাঁট করার কথা বলা হয়েছে। বৈদেশিক সাহায্যের পাশাপাশি পরিবেশ খাতেও খরচ কমানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় অনেক বাড়ানো হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। ট্রাম্পের নতুন বাজেটে বৈদেশিক সাহায্য বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠনগুলোর জন্য বরাদ্দ বিশাল পরিমাণে কমিয়ে দেয়া হবে। পররাষ্ট্র দফতরের জন্য বরাদ্দ কমছে ২৮ শতাংশের মতো, অন্যদিকে প্রতিরক্ষা দফতরের জন্য এটি বাড়ছে প্রায় ১০ শতাংশ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির জন্য ১০ শতাংশ। এতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪শ’ কোটি ডলার। এছাড়া এবারের বাজেটে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ৪শ’ কোটি ডলারের একটি তহবিল তৈরির প্রস্তাব থাকবে। বার্নস্টেইন নামে একটি কনসালটেন্সি ফার্মের দেয়া হিসেব অনুসারে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তৈরি করতে খরচ পড়বে দেড় হাজার কোটি ডলার। নির্মাণ খরচের একটি অংশ মেক্সিকোকেও বহন করতে হবে বলে ট্রাম্প বরাবর বলে এসেছেন। পুরো বাজেটের আয়তন ৩.৮ ট্রিলিয়ন। বাজেটের খসড়া মে মাসে কংগ্রেসে চূড়ান্ত হবে। বাজেটটি ২০১৮ অর্থবছরে কার্যকর হবে, শুরু হবে চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে। তবে এর আগে তা কংগ্রেসে পাস করিয়ে নিতে হবে। তা ছাড়া বাজেট আলোচনায় বিরোধীদের তীব্র রোষানলে পড়তে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। এবারের বাজেটে যে নতুন সরকারের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ প্রতিফলন ঘটছে সেটি হোয়াইট হাউসের প্রধান বাজেট কর্মকর্তা মিক মালভেনিও বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্প এটি দেখাতে চান যে তিনি কেবল একজন বাক্যবাগীশ রাজনীতিক নন বরং কাজ করে দেখানোর ক্ষমতাও তার রয়েছে। এবারের বাজেটকে অনেকে ‘কৃশকায় বাজেট’ বলে অভিহিত করছেন। মার্কিন বাজেটের স্বাভাবিক আকারের থেকে এবার প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার কমিয়ে দেয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে বরাদ্দ কমাতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে সামরিক খাতে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ও অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের জন্যও মোটা অঙ্কের বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফেডরেল বাজেটে অনেক খাতই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ) ও পররাষ্ট্র দফতর। ইপিএ খাতে ৩১ শতাংশ ব্যয় কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএসএআইডির তহবিল এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রায় ১৯টি স্বাধীন সংস্থার তহবিলও কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদেরই একাংশ প্রস্তাবিত বাজেটের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কূটনীতিবিদ এবং অনেক সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জনকল্যাণ ও মানবাধিকার রক্ষা খাতে ব্যয় কমিয়ে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ালে পরিণতিতে তা সরকারের জন্য সমস্যার বোঝা বাড়াতে পারে। সম্প্রতি ১২০ জনের বেশি সাবেক সামরিক কর্মকর্তা এক যৌথ চিঠিতে ট্রাম্পের উদ্দেশে লেখা খোলা চিঠিতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখন নানাবিধ সমস্যা। শুধু সামরিক উপায়ে এসব সমস্যা সমাধান করা যাবে না। এই বাজেটের যারা সমালোচনা করেছেন তাদের মধ্যে আছেন সাবেক মার্কিন বাহিনীর কর্মকর্তা জর্জ কেসি, সাবেক সিআইএ পরিচালক ডেভিড পেট্রেআস। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে কূটনীতি ও উন্নয়নের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সবকিছু সমাধান কেবল সামরিকশক্তির জোরে করতে পারি না।’
×