ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অংশগ্রহণকারীদের ৬৪ শতাংশ মহিলা, উদ্যোক্তা পুরস্কার পেলেন ৪ জন

বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে ৫ দিনের এসএমই মেলা উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৬ মার্চ ২০১৭

বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে ৫ দিনের এসএমই মেলা উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে পাঁচ দিনব্যাপী জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) মেলা শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) মেলার উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এসএমই ফাউন্ডেশন পঞ্চমবারের মতো এ মেলা আয়োজন করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু শিল্প বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের কি ধরনের প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন এসএমই ফাউন্ডেশনকে তা নির্ধারণের পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে চারজনকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (নারী) পারভীন আক্তার, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (পুরুষ) শহিদুল ইসলাম ফকির, বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা (নারী) উম্মে হাবিবা নীলা, বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা (পুরুষ) মোঃ বেলাল হোসেন। এ ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় এসএমই ব্যবসা প্রতিযোগিতা ২০১৬-এর বিজয়ী হিসেবে প্রথম পুরস্কার পায় ইয়াসির আরাফাত ও তার দল। দ্বিতীয় পুরস্কার পায় জান্নাতুল নাইমা ও তার দল, তৃতীয় পুরস্কার পায় দেবজিৎ সাহা ও তার দল। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের এসএমই মেলায় অংশগ্রহণকারীদের ৬৪ শতাংশই নারী। এবারের মেলায় দেশের ২শ’ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ২১৬ স্টলে তাদের উৎপাদিত সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তাদের উৎপাদিত পাটপণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হালকা প্রকৌশল পণ্য, আইটি পণ্য, প্লাস্টিক ও সিনথেটিক, হস্তশল্প পণ্য, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যার ইত্যাদি প্রদর্শন ও বিক্রি করছেন। উদ্বোধনের পর মেলা ঘিরে সাধারণ দর্শনার্থীদের আগ্রহও লক্ষ্য করা গেছে। সকালে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। ১৯ মার্চ পর্যন্ত মেলাটি প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলবে। মেলায় কোন প্রবেশমূল্য নেই। এর আগে মেলার উদ্বোধনী পর্বে শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই এলাকাভিত্তিক কাঁচামাল সহজলভ্য বিবেচনা করে শিল্প স্থাপনের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। জাতীয় শিল্পনীতির আলোকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে দেশব্যাপী কার্যকর সমীক্ষা ও গবেষণা চালাতে হবে। দেশের কোন এলাকা কোন ধরনের এসএমই শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি এসব শিল্প বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের কি ধরনের প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে হবে। এলাকাভিত্তিক সৃজনশীল তরুণ ও দক্ষ নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে সহায়তার ক্ষেত্রগুলোও চিহ্নিত করতে হবে। আমু বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত দেশের অর্থনীতিকে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিচ্ছে। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ শিল্প ও ব্যবসা এসএমই খাতের আওতাভুক্ত। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে এ খাত। রফতানির প্রবৃদ্ধি, পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সার্বিক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাই বর্তমান সরকারও টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কেএম হাবিবউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। সারাদেশে থেকে আসা এসএমই উদ্যোক্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এসএমই খাত নারীর ক্ষমতায়নের বিশাল জায়গা। নারীরা দেশের সকল স্থানে বিভিন্ন কাজে দক্ষতা দেখাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশ হতে হলে নারী ও পুরুষকে হাতে হাত রেখে কাজ করতে হবে।
×