স্টাফ রিপোর্টার ॥ যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নাগরিকত্ব বাতিল এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াফত করার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) স্বাধীনতা হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব সংসদে গৃহীত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার ও সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শ্রমিক কর্মচারী পেশাজীবী মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন।
২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে গণবিচার আন্দোলনের আহ্বায়ক শাজাহান খান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের দাবির প্রতি সহমত পোষণ করবে।
শাজাহান খান বলেন, পালিয়ে যাওয়া যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানী সেনাদের বিচার প্রক্রিয়ার প্রাথমিক কাজ তথ্যসংগ্রহ শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নাগরিকত্ব বাতিল এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াফত করার প্রাথমিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আমরা আস্তে আস্তে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের এ দাবিগুলো দেশের সকল মানুষের দাবি বলে মনে করি। তাই সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা সরকারের কাছে দাবি-দাওয়াগুলো তুলে ধরেছি। সংবাদ সম্মেলনে ২১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হচ্ছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব সৈন্য গণহত্যা, ধর্ষণসহ সব ধরনের নির্যাতনের নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেই নরঘাতক ১৯৫ পাকিস্তানী সৈন্যের বিচারকার্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে জনমত গঠন করতে হবে। যাদের পাকিস্তানীরা ‘সাচ্চা পাকিস্তানী’ বলে আখ্যা দিয়েছিল তাদের নাগরিকত্ব বাতিল এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াফত করতে হবে। বাংলাদেশে আটকে পড়া অবাঙালী পাকিস্তানীদের পাকিস্তানে ফেরত নিতে বাধ্য করতে হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জামায়াত-শিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অপসারণ করতে হবে এবং বাহাত্তর সালে চিহ্নিত সাড়ে ১১ হাজার দালাল-যুদ্ধাপরাধীকে বর্তমান বিচারের আওতায় আনতে হবে।
শাজাহান খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন’ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নরঘাতক পাকিস্তানী সেনাদের বিচার করার লক্ষ্যে জনমত গঠন করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তব রূপায়নসহ ১৯৭১ সালের গণহত্যা ও পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নিরলস কর্মকা- চালিয়ে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাত কাদির গামা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এসপি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম উপস্থিত ছিলেন।