ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে

এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা বেজার

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৬ মার্চ ২০১৭

এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা বেজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে আগামী পনেরো বছরে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এতে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছে সরকারী সংস্থা বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বুধবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে ‘বিনিয়োগ অগ্রগতি (প্রমোশন)’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বেজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি বেজা এ সেমিনারের আয়োজন করে। পবন চৌধুরী বলেন, এক শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পর শুধু এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানই সৃষ্টি হবে না, বছরে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যও রফতানি হবে। যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশকে উন্নত দেশ হতে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। এতে বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ এবং উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন ২০৪১ সালে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন বাংলাদেশে বিদেশীরা বিনিয়োগ করতে চান না? কেননা, আমরা বিনিয়োগ পাওয়ার পরিবেশ এখনও সৃষ্টি করতে পারিনি। এটি নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্ক থাকতে হবে। বেজা সেটা করতে পেরেছে। আর তার ফলেই আমাদের এই সাফল্য। পবন চৌধুরী বলেন, আমাদের অডিট রিপোর্টগুলো তেমন ভাল নয়। যদি অডিট রিপোর্ট আন্তর্জাতিক মানের না হয়, তাহলে কোন দিনই সফলতা আসবে না। বেজা’র কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন নতুন ট্যুরিজম শহর তৈরি করব আমরা। ইতোমধ্যেই নাফ ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড় গর্বের বিষয় হলো, আমরা শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত। সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম বলেন, দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেজা প্রথম থেকেই কাজ করে আসছে। গত ৫ বছরের তুলনায় আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধিতেও সাহায্য করে এসেছে। জিডিপির বৃদ্ধির হার এখন ৭ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। তিনি বলেন, ভিশন ২১ বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যা বাস্তবায়নের জন্য বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রতি সপ্তাহে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প পাস হচ্ছে। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই এগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যা বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে উন্নয়নের ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনকে সচল রাখতে হবে। তিনি বলেন, ভূমি, বিদ্যুত এবং নিরাপত্তা, ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের জন্য এ তিনটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ তিনটি বিষয়ে বাংলাদেশে এখন শতভাগ নিশ্চয়তা রয়েছে। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু করা হয়েছে। বেসরকারী খাতের উদ্যোক্তারা যাতে সহজে বরাদ্দ পেতে পারে সে বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তের ভিত্তিতে এসব অঞ্চলে প্লট বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মনোয়ারা হাকিম আলী আরও বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী দেশকে মধ্যম আয় থেকে উন্নত রাষ্ট্রে নিয়ে যেতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উদ্যোক্তা সৃষ্টি। ইতোমধ্যে অনেকেই নতুন নতুন পরিকল্পনা নিয়ে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন। বিনিয়োগকারীদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ট্যুরিজম শিল্প খাতের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেন এই নারী উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণ হলে দ্রুত অর্থনীতিরও বিকাশ ঘটবে। তৈরি পোশাক রফতানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ। গুণগত মানসম্মত সেবা দিলে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন, তা দেখিয়ে দিয়েছে বেজা।
×