ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই জঙ্গী আস্তানা ;###;গ্রেনেড হামলায় শুরুতেই এএসপিসহ চার পুলিশ আহত ;###;সন্তানসহ জঙ্গী দম্পতি গ্রেফতার ;###;জঙ্গীরা পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনকে জিম্মি করেছে বলে ধারণা পুুলিশের ;###;অভিযানে অংশ নিতে ঢাকা থেকে সোয়াত টিম ঘটনাস্থলে

অপারেশন সীতাকুণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৬ মার্চ ২০১৭

অপারেশন সীতাকুণ্ড

মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির/ জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী ॥ চট্টগ্রামের সীতাকু-েও অবশেষে জঙ্গী আস্তানার সন্ধান মিলেছে। প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভবনে জঙ্গীদের এ আস্তানার সন্ধান মেলে বুধবার। বিকেল তিনটার পর থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্য জঙ্গীঘাঁটি দ্বিতল ভবনটি ঘিরে ফেলে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে এটি জেএমবি সদস্যদের ঘাঁটি। প্রথম আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত তিনটি গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। সন্ধ্যার আগে থেকেই ভবনে লুকিয়ে থাকা জঙ্গীদের আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশ মাইকিং শুরু করে। কিন্তু এর মধ্যে জঙ্গীদের পক্ষ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েক দফায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। জবাবে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গ্রেনেডে এএসপি, ওসিসহ চারজন আহত হন। প্রথম ভবনের পুলিশী অভিযান সম্পন্ন হওয়ার পর দ্বিতীয় ভবনে লুকিয়ে থাকা জঙ্গীদের আটক করতে চট্টগ্রাম ও ঢাকার সোয়াত বাহিনীকে তলব করা হয়। ঢাকা থেকে রওনা করে সোয়াত টিম। রাত ১২টা ২৩ মিনিটে সীতাকু-ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে টিমটি। সেখানে পৌঁছেই সোয়াত সদস্যরা অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেন। তারা ভবনের আশপাশের এলাকা রেকি করা শুরু করেন। রাত আড়াইটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোয়াত সদস্যরা অভিযানের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করছিলেন। কখন জঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে কেউ রাজি হননি। অপারেশন শুরু হওয়ার আগে ভবনের আশপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। ওই ভবনে নিচতলায় চারটি ফ্ল্যাটের একটিতে জঙ্গীদের ঘাঁটি রয়েছে। অবশিষ্ট তিন ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ হয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গী অবস্থানের ফ্ল্যাটটিতে ন্যূনতম তিনজন রয়েছে। তাদের সঙ্গে ভারি অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক রয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নিরীহ কোন মানুষের ক্ষতি না করে অভিযানের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ কারণে সোয়াত বাহিনীকে তলব করা হয়েছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে। রাত ১০টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, জঙ্গীদের অবস্থান করা ভবনটি পুরোপুরি ঘিরে রাখা হয়েছে। সোয়াত বাহিনী আসার পর পরিকল্পিতভাবে অপারেশন চালানো হবে। সীতাকু-ে যে দুটি জঙ্গী আস্তানার সন্ধান মিলেছে তার মধ্যে একটির অবস্থান পৌর এলাকার নামারবাজার আমিরাবাদ এলাকার দ্বিতীয় ভবন সাধন কুটিরের নিচতলায়। অপরটির অবস্থান প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে প্রেমতলার ছায়ানীড় ভবনে। সাধন কুটিরের মালিক সুবাস দাশ সুরেশ। আর ছায়ানীড় ভবনের মালিক সম্প্রতি প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী এক ব্যক্তির স্ত্রী। ভবনটি পরিচালনা করেন ছেলে নাসির। নাসিরের সঙ্গে জঙ্গীদের যোগসাজশ রয়েছে বলে পুলিশ ধারণা পেয়েছে। বিকেল তিনটানাগাদ সাধন কুটিরের নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে জেএমবির সক্রিয় সদস্য স্বামী-স্ত্রীকে সন্তানসহ পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ পরে অভিযানে নামে ছায়ানীড় ভবনে। ভবনে ঢুকতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে সীতাকু- সার্কেলের এএসপি সাইফুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হোসেনসহ চারজন আহত হন। ছায়ানীড় ভবনে লুকিয়ে থাকা জঙ্গীরা ভবনটির পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনকে জিম্মি করেছে বলে পুলিশ সূত্রে আভাস দেয়া হয়েছে। তবে কতজনকে জিম্মি করেছে তার সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, রেঞ্জ ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, এসপি নুরে আলম মিনা, র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার বিপুল সদস্য উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলের চারপাশে ফোকাস লাইট ও মাইক লাগানো হয়েছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে সীতাকু- উপজেলার অবস্থান। এলাকাটি সাগর সন্নিহিত এবং অনেকটা পাহাড়ী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই স্থানের পশ্চিমে রয়েছে বঙ্গোপসাগর এবং পূর্বে রয়েছে পাহাড়ী এলাকা। দেশব্যাপী জঙ্গীবিরোধী জোরালো অবস্থানের কারণে জঙ্গীদের বিভিন্ন সংগঠন বর্তমানে মীরসরাই-সীতাকু-ের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘাঁটি গেড়েছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে বেরিয়ে আসে। এরপর থেকে পুলিশ নজরদারি বৃদ্ধি করা হয় গত রবিবার থেকে। বুধবারের ঘটনার বিবরণে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকু- পৌর এলাকার নামার বাজার আমিরাবাদ এলাকার সাধন কুটির নামের দোতলা একটি ভবনে ভাড়া নেয়া নিচতলার ফ্ল্যাটে জেএমবি সদস্য স্বামী-স্ত্রী ও তাদের এক সন্তানের সন্ধান মেলে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাধন কুটিরের মালিক সুবাস দাশ সুরেশ জানান, ব্যক্তিগত কাজে তিনি দশ দিনের জন্য জামালপুর যান। এরই মাঝে তার স্ত্রীর কাছ থেকে নিচতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয় জঙ্গী দম্পতি। গত মঙ্গলবার সুবাস দাশ জামালপুর থেকে ফিরে এসে ভাড়া দেয়ার বিষয়টি অবগত হন। এরপর সুবাস দাশ ভাড়াটিয়াদের পরিচয় জানার জন্য ফ্ল্যাটে যান। এ সময় তিনি বাসায় ভাড়াটিয়া ছাড়াও ৩/৪ জনকে দেখতে পান। তিনি ভাড়াটিয়াদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বললে ভাড়াটিয়ার স্ত্রী একটি পরিচয়পত্র তার হাতে দেন। সুবাস দাশ কার্ডটি নিয়ে নেটে সার্চ দিয়ে দেখতে পান এটি ভুয়া। এতে নাম রয়েছে কক্সবাজারের রামুর জসিম নামের এক ব্যক্তির। তখন তার সন্দেহ জোরালো হয়। বুধবার সকালে সুরেশ আবারও ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে তাদের বলেন, ‘আপনাদের গতিবিধি সন্দেহজনক। আপনারা ঘর ছেড়ে দিন। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়াটিয়া মহিলা পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেন। এ সময় সুরেশ ওই ফ্ল্যাটে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, আইপিএসসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্র্রনিকস ডিভাইস দেখতে পান। সেখান থেকে একটি সার্কিট সংগ্রহ করে তিনি এক ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির কাছে জানতে চান এটা কী? ওই মিস্ত্রী জানান, এটি একটি টাইমার। ফলে তার সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে ফ্ল্যাটে গিয়ে জানতে চান আগের দিন রাতে যেসব লোক দেখেছেন, তারা কোথায়? ভাড়াটিয়া মহিলা অনতিদূরের একটি ভবন দেখিয়ে জানান, ওরা ওখানে আছে। বাদানুবাদের একপর্যায়ে সুরেশের সঙ্গে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে ভাড়াটিয়া দম্পতির ধস্তাধস্তি হয়। এতে সুনির্মল ও ছবি রাণী নামে সুরেশের দুই সহযোগী আহত হন। তবে তারা জঙ্গী দম্পতিকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে। সুরেশের বাড়ি থেকে গ্রেনেড, বোমা ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। আটক স্বামী-স্ত্রী দুজনই জেএমবির সক্রিয় সদস্য বলে ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। আর ছায়ানীড় ভবনটি সাধন কুটির থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে প্রেমতলায় অবস্থিত। ভবনটির মালিক একজন প্রবাসী। সম্প্রতি তার মৃত্যুর পর পুত্র নাসির বাড়িটির তত্ত্বাবধান করছে। এই নাসিরের সঙ্গে জঙ্গীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ধারণা দিয়েছে। সাধন কুটির থেকে আটক জঙ্গী দম্পতির তথ্যানুযায়ী সীতাকু-ের ওসি ও সার্কেল এএসপি ভাড়াটিয়ার দেখানো ছায়ানীড় ভবনে যান। ঘরের দরজা খোলার জন্য টোকা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে ভেতর থেকে পুলিশের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়ে সীতাকু- সার্কেল এএসপি সাইফুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হোসেন স্পিøন্টারবিদ্ধ হন। এরই মধ্যে ওয়্যারলেসে খবর পেয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ভবনটি ঘিরে ফেলে। যোগ দেয় র‌্যাব, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। এ সময়ের মধ্যে ছায়ানীড় ভবন থেকে জঙ্গী সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে দফায় দফায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশও ফাঁকা গুলি করে এর জবাব দেয়। এরই মধ্যে সেখানে পৌঁছে যান পুলিশ ও উর্ধতন কর্মকর্তারা। জঙ্গীরা যাতে কোনভাবে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য ভবনের চতুর্দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। সন্ধ্যা ছয়টার পর সেখানে মাইক ও ফোকাস লাইট স্থাপন করা হয়। এরপর শুরু হয় পুলিশের মাইকিং। পুলিশ লুকিয়ে থাকা জঙ্গীদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আপনাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। অতিসত্বর আত্মসমর্পণ করুন। নইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ্যাকশন শুরু করতে বাধ্য হবে।’ দফায় দফায় মাইকের মাধ্যমে এ জাতীয় কথা বলতে থাকে পুলিশ। রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা জানান, তাদের ধারণা মীরসরাই-সীতাকু- বেল্টে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা যে আস্তানা গেড়েছে এ দুটি ভবনের ফ্ল্যাট তারই প্রমাণ। এর আগে মীরসরাই পৌর এলাকায় বিএনপি নেতা রিদওয়ানুল হকের বাসভবন থেকে এক নারীকে আটক করা হয়। পরে জঙ্গী সম্পৃক্ততার অভিযোগে রিদওয়ানুলকেও রিমান্ডে নেয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ধারণা প্রেমতলার ছায়ানীড়ের এ ভবনে বেশ ক’জন জঙ্গী অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। তাদের শক্তিও ফেলে দেয়ার মত নয়। কেননা, তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরুতেই গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং এরপর ৮/১০টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। ফলে পুরো এলাকায় দেখা দেয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পুলিশ ওই ভবনের পাশের ভবনের লোকজনকে সরিয়ে দিয়েছে। সংবাদকর্মীসহ উৎসুক জনতাকে ১৫০ গজ দূরে অবস্থানের পরামর্শ দেয়া হয়। সীতাকু- পৌরসভার ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুরাদ জানান, সাধন কুটিরে জঙ্গী থাকার বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়দের পক্ষ থেকে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। সেখান থেকে দুজনকে আটকের পর চৌধুরীপাড়া এলাকার আস্তানাটি উদঘাটিত হয়। তিনি বলেন, এ আস্তানা থেকে যেভাবে থেমে থেমে গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সেখানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের মজুদ রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ মীরসরাই পৌর এলাকায় স্থানীয় বিএনপি নেতা রিদওয়ানুল হকের রিদওয়ান মঞ্জিলে সন্ধান মেলে জঙ্গী আস্তানার। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ২৯টি গ্রেনেড, ৯টি চাপাতি, ৪০টি পাওয়ার জেল, ২৮০ প্যাকেট কার্বন স্টিল বল, ১১ কেজি বোমা তৈরির সরঞ্জাম, আইএসের কালো পোশাক ও একটি ব্যানার। ওই বাড়ি থেকে আটক করা হয় এক মহিলাকে। প্রসঙ্গত, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁর পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গী আস্তানা উদ্ঘাটিত হলেও পরবর্তীতে চট্টগ্রামের মীরসরাই-সীতাকু- এলাকায় জেএমবিসহ বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে ঘাঁটি গেড়েছে। এ বিষয়টি কিছুদিন আগে পুলিশ আঁচ করতে পারে। গত মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সীতাকু--মীরসরাইতে জঙ্গী আস্তানা রয়েছে বলে স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেন এবং মুসা নামের এক জঙ্গী এ অঞ্চলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, তাকে খোঁজা হচ্ছে। সে ঘন ঘন স্থান বদলের কারণে পুলিশী জালে ফেলা যাচ্ছে না। গোয়েন্দা সূত্রে জানানো হয়েছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গীবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসীরা বৃহত্তর চট্টগ্রামকে নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে। পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, সীতাকু-, মীরসরাই, হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি এর অন্যতম। এর মধ্যে মীরসরাই ও সীতাকু-ের ঘিঞ্জি এলাকায় এদের একাধিক আস্তানা রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। বুধবারের প্রায় দুই কিলোমিটারের মধ্যে জঙ্গীদের দুটি আস্তানার সন্ধান প্রমাণ করে এরা এখন চট্টগ্রামে গোপনে শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে। আগামীতে যে কোন সময় বড় ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনাই তাদের মূল লক্ষ্য।
×