ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভাগ্যবান অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১৬ মার্চ ২০১৭

ভাগ্যবান অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোন রকম চিত্রপটে ছিলেন না মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দলে থাকলেও টেস্টে এখনই একাদশে সুযোগ পেয়ে যাবেন, এমন সম্ভাবনাও ছিল না। কিন্তু কী ভাগ্যবান তিনি। একাদশে সুযোগ পেয়ে গেলেন। টেস্ট অভিষেকও হলো। এমন এক ম্যাচে হলো। যেই ম্যাচটি আবার বাংলাদেশের শততম টেস্ট ম্যাচ। গল টেস্টে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ যদি বাজে ব্যাটিং না করতেন। কিংবা বুধবার শুরু হওয়া কলম্বো টেস্টের আগেরদিন যদি ফিল্ডিং করতে গিয়ে লিটন কুমার দাস ইনজুরিতে না পড়তেন, তাহলে কী আর সৈকতের টেস্ট অভিষেক হতো! কোনভাবেই নয়। তাই এ ক্রিকেটারকে ভাগ্যবানই বলতে হয়। দেশের ৮৬তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে খেলছেন সৈকত। টি২০ ও ওয়ানডের পর অবশেষে টেস্ট ক্যাপটিও মাথায় উঠল সৈকতের। সেটি বাংলাদেশের শততম টেস্টেই। ইতিহাসে এমন ভাগ্যবান ক্রিকেটার আছেন আর মাত্র আটজন। সৈকতের আগে এই তালিকায় সর্বশেষ জন হিসেবে নাম লিখিয়েছেন জিম্বাবুইয়ের কার্ল মুম্বা। ২০১৬ সালের নবেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই জিম্বাবুইয়ের শততম টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয় তার। বাকি ৭ জনের মধ্যে তিনজনই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার। তারা হলেন- বার্লো কারক্রিক, সিড ইমেরি, ক্লাউডি জেনিংস। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের টনি হোয়াইট, শ্রীলঙ্কার দিলহারা ফার্নান্দো, ইংল্যান্ডের জ্যাক শার্প আর দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক চিথাম নিজ নিজ দেশের শততম টেস্টে অভিষেক করেন। দীর্ঘদিন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স করার পুরস্কার হিসেবে জাতীয় দলে ২০১৬ সালে সুযোগ পান সৈকত। শুরুটা টি২০ দিয়ে হয়। পরে ওয়ানডেতেও অভিষেক হয় তার। তবে লঙ্কান ভার্সন ক্রিকেট দিয়েই তার উত্থান। সেখানে জায়গা করে নিতে একটি বছর অপেক্ষা করতে হলো তাকে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেন সৈকত। টেস্টে সুযোগ পেলে বড়কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করবেন। এমন কথা বলেছিলেন সৈকত। এবার তার সেই সুযোগ কাজে লাগানোর পালা। এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২১ প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ২১৩৫ রান তুলেছেন সৈকত। সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২৮২। তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ৭ সেঞ্চুরি আর ৮টি হাফসেঞ্চুরি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের শততম টেস্টের প্রথমদিনে চার ওভার বোলিংও করেন সৈকত। ১১ রান দেন। কোন উইকেট নিতে পারেননি। লিটন যখন মঙ্গলবার ইনজুরিতে পড়ল। তখনই সৈকতের সম্ভাবনা জেগে যায়। বোঝাই যাচ্ছিল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পরিবর্তে খেলবেন সাব্বির রহমান রুম্মন। আর ইমরুল কায়েসকে জায়গা দিতে বাজে ফর্মের মধ্যে থাকা মুমিনুল হককেও একাদশের বাইরে রাখা হতে পারে। সেটিই হয়েছে। তাহলে লিটনের স্থানে খেলবেন কে? স্বাভাবিকভাবেই একজন ব্যাটসম্যান নিতে হবে। আর এ মুহূর্তে দলে ব্যাটসম্যান হিসেবে সৈকতই বাকি থাকেন। তখন আর বুঝে নেয়ার কিছু বাকি থাকে না। শেষপর্যন্ত তাই হয়েছে। সৈকতই খেলছেন। টেস্ট অভিষেক হয়েছে তার। শততম টেস্টের ভাগ্যবান ক্রিকেটার হয়েছেন সৈকত।
×