ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১৫ কোটি ডলারের ওপর আয়কর দেন ৩ কোটি ৮০ লাখ

ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী ফাঁস

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৬ মার্চ ২০১৭

ট্রাম্পের আয়কর বিবরণী ফাঁস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০৫ সালে ১৫ কোটির বেশি ডলার আয় করেছিলেন। কিন্তু সে তুলনায় সামান্যই ফেডারেল আয়কর দিয়েছিলেন। তার ওই বছরের আয়কর রিটার্নের দুটি অপ্রকাশিত পৃষ্ঠা মঙ্গলবার কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যমের নজরে আসে। খবর বিবিসি ও এমএসএনবিসির। ট্রাম্প ২০০৫ সালে ১৫ কোটি ডলার আয়ের ওপর ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার কর দিয়েছিলেন বলে প্রকাশিত আয়কর বিবরণীতে দেখা গেছে। মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসি তার ওই ট্যাক্স রিটার্নের দুটি পৃষ্ঠা প্রকাশ করার পর হোয়াইট হাউস ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় বলে বিবিসি জানিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যার আয় বেশি তাকে আয়করও বেশি দিতে হয়, সব দেশেই এটি নিয়ম। তবে অনেকেই আয়করের বিস্তারিত বিবরণী গোপন রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ট্রাম্পও সে কাজটিই করেছেন। কিন্তু সে দেশেরই এক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক তার আয়কর নথি ফাঁস করে দিয়েছে। যদিও সে নথি বেশ পুরনো। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ২০০৫ সালে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার আয়কর দিয়েছেন। সে বছর তিনি আয়ের পরিমাণ ১৫ কোটি ডলারের বেশি দেখান। নথিতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প মোট উপার্জনের ২৪ শতাংশ আয়কর দিয়েছেন। এটি সাধারণত আমেরিকানর যে হারে আয়কর দেন তার চেয়ে বেশি তবে উচ্চবিত্তের তুলনায় কম। আমেরিকার উচ্চ আয়ের লোকজন গড়ে ২৭.৪ শতাংশ আয়কর দেন। ট্রাম্পের দেয়া আয়কর সে তুলনায় কম। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হোয়াইট হাউস। কারণ নির্বাচনী প্রচারকালে তিনি আয়কর বিবরণী প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। মার্কিন নির্বাচনে যারা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন তারা সবসময় এটি করে এসেছেন। ১৯৭৬ সাল থেকে এ রীতি চালু রয়েছে। এমএসএনবিসিকে ওই বিবরণীর দুটি পৃষ্ঠা দিয়ে পুলিৎজার জয়ী অনুসন্ধানী সাংবাদিক ডেভিড কে জনস্টন বলেছেন, একটি সূত্র থেকে তিনি ওই পৃষ্ঠা দুটি পেয়েছেন, যার নাম গোপন রাখা হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাঁস হওয়া ওই দুই পৃষ্ঠা পুরো রিটার্নের একটি অংশ মাত্র। ট্রাম্পের মোট আয় সে সময় কত ছিল সেটি এ থেকে দেখে বোঝা যায় না। কিন্তু ট্রাম্পের সম্পদ আর তার আয়করের বিষয়ে সাংবাদিকরা এতটাই কম তথ্য এ যাবত পেয়েছেন যে ওই দুই পৃষ্ঠা পাওয়াই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ওই দুই পৃষ্ঠার তথ্যে দেখা যায়, ট্রাম্প ফেডারেল ইনকাম ট্যাক্স হিসেবে দিয়েছেন ৫ কোটি ৩ লাখ মিলিয়ন ডলার। এর বাইরে তিনি আরও ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার দিয়েছেন অলটারনেটিভ মিনিমাম ট্যাক্স হিসেবে। ধনী ব্যক্তিদের কর এড়ানোর পথ বন্ধ করতে অর্ধশতক আগে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অলটারনেটিভ মিনিমাম ট্যাক্স’ ব্যবস্থা চালু করা হয়। এক যুগ আগে দেয়া ট্রাম্পের ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ করা অপরাধ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এমএসএনবিসির উপস্থাপক র‌্যাচেল ম্যাডো। তিনি বলছেন, তারা ট্রাম্পের ট্যাক্স রিটার্ন প্রকাশ করেছেন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর আওতায়, যেখানে জনস্বার্থে তথ্য প্রকাশের অধিকার দেয়া রয়েছে। এমএসএনবিসি ট্যাক্স রিটার্নের ওই অংশ প্রকাশের ঠিক আগে দেয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস একে অবৈধ বলেছে। হোয়াইট হাউনের বিবৃতিতে এমএসএনবিসিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, ‘রেটিং বাড়ানোর জন্য তোমরা আইন ভঙ্গ করে এমন একটি গল্প সামনে নিয়ে আসছ, যেখানে এক দশক আগে দেয়া ট্যাক্স রিটার্নের মাত্র দুটি পৃষ্ঠা আছে।’ সাংবাদিকদের কাছে পরামর্শ চান ট্রাম্প ॥ ট্রাম্প বছর শেষে তার বেতন দান করে দেবেন। কিন্তু তিনি তার সরকারী বেতন কোথায় দান করবেন তা এখনও ঠিক করা হয়নি। তাই সাংবাদিকদের কাছ থেকে তিনি এই বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছেন। তিনি সরকারী বেতন হিসেবে বছরে মাত্র এক ডলার গ্রহণ করবেন এবং বাকিটা দান করে দেবেন। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন কোথায় দান করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে গণমাধ্যম এমএসএনবিসির আইনজ্ঞরা অর্থ দফতর ও পার্সনেল ম্যানেজমেন্টের কাছে চিঠি পাঠান। সোমবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বেতন কোথায় দান করবেন সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না। তাই এই বিষয়ে সাংবাদিকদের পরামর্শ পেলে খুশি হবেন তিনি। ২০০১ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত বেতন বছরে ৪ লাখ ডলার।
×