ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁথিগত বিদ্যা

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১৬ মার্চ ২০১৭

পুঁথিগত বিদ্যা

উন্নত জাতি হিসেবে প্রযুক্তির যুগে বিশ্ব দরবারে টিকে থাকার জন্য পূর্ব শর্ত হচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে প্রয়োজন দক্ষ জনবল। এমন জনবল তৈরিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার বিকল্প নেই। দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাহীন পুঁথিগত বিদ্যার কারণে মানসম্মত শিক্ষা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। মানসম্মত ও গবেষণাহীন শিক্ষার মাধ্যমে দেশে জনবল তৈরি হচ্ছে না এবং দক্ষ জনবল তৈরি করতে না পারলে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রতিযোগিতায় বিশ্ব থেকে ছিটকে পড়বে বাংলাদেশ। মিডিয়া তথ্য সূত্রে জানা গেছে যে দেশের সরকারী ও বেসরকারী প্রায় ১২৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম নেই। কয়েকটি অর্থাৎ প্রায় ১১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণামূলক কার্যক্রম ঠিকভাবে হচ্ছে না। বর্তমানে দেশে সরকারী ৩৮টি ও বেসরকারী ৮৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করলে এমন চিত্র চলে আসে যে, নতুন জ্ঞান উদ্ভাবনে গবেষণা ও শিক্ষা পরস্পর পরিপূরক হলেও আমাদের উচ্চ শিক্ষা উল্টোরথে। গবেষণা যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে তা উচ্চ শিক্ষা ও উন্নয়নের ভবিষ্যত সম্পর্কেও শঙ্কিত করে তোলে। কারণ জ্ঞান বিজ্ঞানে, স্বাস্থ্য ও খাদ্যে, অবকাঠামোতে সমাজিক সূচকে জাতি কতটা উন্নত হতে পারবে তা বহুলাংশে নির্ভর করে গবেষণার ওপর। গবেষণার মান, উদ্ভাবন সক্ষমতা ও প্রয়োগ যত উজ্জ্বল হবে, দেশের ভবিষ্যত সম্পর্কে তত আশাবাদী হওয়া যাবে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পেছনে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ সরকারীভাবে বিনিয়োগ করা হয় দেশ ও জাতির উন্নয়ন স্বার্থে। শিক্ষার্থীদের শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ নয়। আর যদি তাই হয় তাহলে স্কুল কলেজের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্য থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ হলো দুটি। প্রথমত শিক্ষা দান, দ্বিতীয়ত শিক্ষাদানের জন্য নতুন নতুন জ্ঞানের উদ্ভাবন অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় মানে হলো জ্ঞান সৃষ্টি করা। সেখানে গবেষণা না করে জ্ঞান সৃষ্টি সম্ভব নয়। আলম নগর, রংপুর থেকে
×