ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান

দাইয়ু কর্পোরেশনকে গভীর সমুদ্রের ১২ নম্বর ব্লক ইজারা দিল পেট্রোবাংলা, চুক্তি সই

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ১৫ মার্চ ২০১৭

দাইয়ু কর্পোরেশনকে গভীর সমুদ্রের ১২ নম্বর ব্লক ইজারা দিল পেট্রোবাংলা, চুক্তি সই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তেল-গ্যাস বিদেশে রফতানির সুযোগ রেখে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি পসকো দাইয়ু কর্পোরেশনকে গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকের মধ্যে ১২ নম্বর ব্লক ইজারা দিয়েছে পেট্রোবাংলা। মঙ্গলবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ১২ নম্বর ব্লকের গুরুত্ব সম্পর্কে পসকো দাইয়ুর প্রেসিডেন্ট ও সিইও ইয়ান সান কিং বলেন, মিয়ানমারে দাইয়ু বড় একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। এটি বাংলাদেশের ১২ নম্বর ব্লকের সঙ্গে লাগোয়া। ফলে বাংলাদেশের এ ব্লকে গ্যাস পাওয়ার অত্যন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানীর পেট্রোবাংলার পেট্রো সেন্টারে দাইয়ুর সঙ্গে অংশীদারিত্ব বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) সই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ব্লকে তেল-গ্যাস পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন পেট্রোবাংলা ও দাইয়ু কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা। কারণ ব্লকটির পাশে মিয়ানমারের ৮৭ নম্বর ব্লকে দাইয়ু কর্পোরেশন গত বছরই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। মিয়ানমারের গ্যাসক্ষেত্রে যে ধরনের ভূতাত্ত্বিক গঠন, বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রের ১২ নম্বর ব্লকটিরও একই ধরনের ভূতাত্ত্বিক গঠন। ‘বিদ্যুত ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ আইন) আইন ২০১০’ অনুসারে গভীর সমুদ্রাঞ্চলের ব্লকটি দাইয়ুকে ইজারা দেয়া হয়। তবে তা আরও তিন বছর বৃদ্ধি করা যাবে। মডেল পিএসসি (সংশোধিত) ২০১২ অনুযায়ী এ চুক্তি সই হয়। এক প্রশ্নের জবাবে চুক্তি সই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, প্রথমে দাইয়ু গ্যাস পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেবে। যদি পেট্রোবাংলা ওই গ্যাস কিনতে না চায় তবে দেশের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে পারবে দাইয়ু। যদি দেশের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠান গ্যাস কিনতে না চায় বেঁধে দেয়া দামে তাহলে বিদেশে রফতানি করতে পারবে। কত দামে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাস দাইয়ুর কাছ থেকে কিনবে পেট্রোবাংলা- জানতে চাইলে ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এখনই গ্যাসের দাম কত তা বলা যাবে না। তবে স্থলভাগে যে দামে বিদেশী কোম্পানির কাছ থেকে পেট্রোবাংলা গ্যাস কিনে থাকে সাগরভাগের গ্যাস তার বেশি হবে। কারণ সাগরভাগে বিনিয়োগ বেশি হয়, তাছাড়া গ্যাস সাগর থেকে স্থলভাগে আনতে খরচও বেশি হয়। তবে পেট্রোবাংলার একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম সাড়ে ছয় ডলার করে ধরা হয়েছে। প্রতি বছর ২ শতাংশ করে গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে। এর আগে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকের মধ্যে আজ একটি ব্লকে অনুসন্ধানের জন্য চুক্তি সই হলো। বাকিগুলোতে অনুসন্ধান চালানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। অগভীর সমুদ্রের ১১টি ব্লকের মধ্যে ইতোমধ্যে তিনটিতে কাজ চলছে, বাকিগুলোতে অনুসন্ধান চালানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। স্থলভাগে ১০৮টি কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাইয়ের মধ্যে ২৮টি কূপ খনন সম্পন্ন করা হবে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। সরকার যথাসময়ে সকলের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। চুক্তিতে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে উপ-সচিব খাদিজা নাজনীন ও পসকো দাইয়ুর পক্ষে কোম্পানিটির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং সান কিম এবং পেট্রোবাংলার সচিব মোঃ আসফাকুর রহমান স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্টদূত এ এইচ এন সিয়ং দুও।
×