ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সর্বস্বান্ত তরমুজ চাষী

আমতলীতে তিনদিনের বৃষ্টিতে ৪৮ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৫ মার্চ ২০১৭

আমতলীতে তিনদিনের বৃষ্টিতে ৪৮ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ১৪ মার্চ ॥ আমতলী উপজেলা তিনদিনের বৃষ্টিতে ৪৮ কোটি টাকার বরি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন তরমুজ চাষীরা। সাড়ে তিন হাজার তরমুজ চাষী বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তরমুজ চাষ করছে। এখন তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে। ব্যাংক ও এনজিওর ঋণ পরিশোধ নিয়ে তারা মহাবিপাকে পড়েছে। জানা গেছে, উপজেলার ৭ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় খেশারি, মুগ, তরমুজ, মরিচ, বাদাম, সূর্যমুখী, ভুট্টা, আলু, মিষ্টি আলু, খিরাই ও শাকসবজি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে ১৫ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমির ফসল। এ ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭৪ টন। যার মূল্য ৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে তরমুজ ৪৪ কোটি ৮০ লাখ, মুগ এক কোটি ২৫ লাখ ৫৯ হাজার, খেশারি ৫৬ লাখ ৩২ হাজার, মরিচ ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৬০০, বাদাম ১২ লাখ ৮২ হাজার, সূর্যমুখী ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০, ভুট্টা ৮৮ হাজার ২০০, শাকসবজি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার, আলু ৮ লাখ ৭০ হাজার, মিষ্টি আলু ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ ও খিরাই ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু স্থানে পানি শুকালেও গাছ মরে গেছে। কৃষকরা সর্বস্বান্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সাড়ে তিন হাজার তরমুজ চাষী। তাদের একটাই কথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে কিন্তু ঋণ পরিশোধ করবে কি দিয়ে? পূর্ব কুকুয়া গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক জানান ব্র্যাক, সংগ্রাম, আশা ও পদক্ষেপ থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ৩০ একর জমি বর্গা রেখে তরমুজ চাষ করেছি কিন্তু সমস্ত জমির তরমুজ পচে গেছে। কিভাবে আমি ঋণ পরিশোধ করব ভেবে পাচ্ছি না। সোনাখালী গ্রামের কৃষক ওহাব মৃধা জানান, ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ১৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি তা পচে গেছে। হান্নান মোল্লা জানান ২৪ একর জমিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় করে রবি ফসলের চাষ করেছি। তা সব পচে গেছে। হলদিয়ার লিটন, নুরু আলম মুসল্লি, শিবলী শরিফ ও ইউসুফ মিয়া জানান তাদের ২০ একর জমির তরমুজ চারা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম বদরুল আলম জানান বৃষ্টিতে এ উপজেলার ৪৮ কোটি টাকার রবি ফসল ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
×