ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে এক হাজার ৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

ছয় বিভাগে বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৫ মার্চ ২০১৭

ছয় বিভাগে বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ময়মনসিংহ বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করে ছয়টি বিভাগীয় সদরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ছয়টি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং ময়মনসিংহে এসব পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ জন্য ১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এর মধ্যে চীন সরকার সহায়তা হিসেবে দেবে প্রায় ৯৮৯ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ৪০২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় মোট ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে ৩ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে আসবে ১ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে অনুমোদিত প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫টি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালে বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তবে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পে আরও একটি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করে ময়মনসিংহে বিটিভির একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, এখনও দেশের অনেক জায়গায় বিটিভি দেখা যায় না। এর মাধ্যমে দেশজুড়ে বিটিভির কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। ২০১৭-২০২২ মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিআরডি) সঙ্গে সমন্বয় করে গ্রামীণ এলাকায় সড়ক ও রাস্তা উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং এলজিআরডি একই রাস্তা বা সড়ক উন্নয়নে পৃথক প্রকল্প গ্রহণ না করে। মন্ত্রী জানান, একনেকে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পের আওতায় জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করে ২২টি পার্ক, ৪টি খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানগুলোর আধুনিকায়ন এবং উন্নয়ন করা হবে। মুস্তাফা কামাল বলেন, পার্কের উন্নয়ন ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ব্যস্ততম এলাকায় জনগণের ব্যবহার উপযোগী ৭৩টি স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও পরিচালনা, ৪টি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মত জবাইখানা নির্মাণ-পরিচালনা, ১৫টি ফুটওভার ব্রিজের উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন এবং পর্যাপ্ত উন্মুক্ত ও সবুজ স্থান রেখে ৪টি কবরস্থানের উন্নয়ন করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে প্রায় ২২৪ কোটি টাকা আর বাকি প্রায় ৫৬ কোটি টাকা যোগান দেয়া হবে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে জানুয়ারি ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন থেকে দেশের যেখানে চার লেনের রাস্তা করা হবে সেখানে অবশ্যই রাস্তার দুই পাশে সার্ভিস লেন থাকতে হবে। যাতে দুর্ঘটনা কম হয়। এছাড়া রাজধানীতে যেসব খেলার মাঠ করা হবে সেখানে শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে। অনুমোদিত অন্য ৫ প্রকল্প ॥ একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য ৫টি প্রকল্প হলোÑ লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গবর্ন্যান্স প্রকল্প (১ম সংশোধিত), এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৯২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প (আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল), এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যশোর অংশ (পালবাড়ী হতে রাজঘাট অংশ) যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
×