ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

গান ও নৃত্যের ছন্দে আইজিসিসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৫ মার্চ ২০১৭

গান ও নৃত্যের ছন্দে আইজিসিসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

সাংস্কৃতিক রিপোর্টার ॥ সন্ধ্যায় থেকেই মিলনায়তনে ভেসে বেড়ালো গানের সুর। সেই সুরের সঙ্গে যুক্ত হলো নৃত্যের নান্দনিকতা। নৃত্যশিল্পীর নাচের মুদ্রা ও অভিব্যক্তির প্রকাশে উঠে এলো বিচিত্র বিষয়। আরও ছিল আবৃত্তি। এভাবেই আনন্দ আয়োজনে উদ্যাপিত হলো ইন্দিরা গান্দী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আর নৃত্য-গীতের সমন্বিত এমন বর্ণময় আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হলো শনিবার জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অতিথিরা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সহধর্মিণী হেমাল শ্রিংলা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইজিসিসির পরিচালক জয়শ্রী কু-ু। আনোয়ার হোসনে মঞ্জু বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য, মানুষের উন্নয়নের জন্য জীবনের ধারার পরিবর্তন করতে হবে। সেখানে কোন নেতিবাচকতার স্থান নেই। ভারত বিশে^র শক্তিধর দেশের একটি। এমন বড় দেশ পাশে থাকলে অন্য দেশগুলোর মধ্যে হীনমন্যতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখন সেই নেতিবাচক আচরণকে গুরুত্ব দেয়ার সময় নেই। মানুষে মানুষে দেশে দেশে বিভক্তি সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক খেলা থাকবেই কিন্তু আমাদের নিজেদের ভালটা বুঝতে হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। আমার প্রত্যাশা তরুণ প্রজন্ম সেই নেতিবাচকতা থেকে বেরিয়ে এসে দুদেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় স্থাপন করবে। তিনি আরও বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে অনেক মিল। মানুষের আচরণে, সংস্কৃতির ঐতিহ্যেÑ অনেক কিছুই একরকম। আমাদের মধ্যে অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐক্য রয়েছে। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে কাজ করছে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার। দুই দেশের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে আইজিসিসি। শুধু ভারতের শিল্পী নয় বরং বাংলাদেশের শিল্পীদের অনুষ্ঠানের আযোজন বেশি করা হয়ে থাকে এই কেন্দ্রে। সেই সুবাদে ২০১৫ সালে সারা বছরে ৯৫টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সুরের আশ্রয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। মঞ্চে আসেন আইজিসিসির সঙ্গীতগুরু সন্তোষ কুমার মিশ্রা এবং তার ২২ সঙ্গীত শিক্ষার্থী। সঙ্গীতের স্বরের খেলায় রাগ শুদ্ধ কল্যাণের আশ্রয়ে সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘স্বরশ্রুতি’। গান শেষে নাচ নিয়ে আসে আইজিসিসির শিক্ষার্থী শিল্পীরা। নাচ-গানের মেলবন্ধনের পর ছিল কবিতার শিল্পিত উচ্চারণ। যোগেশ ভাশিসতা হিন্দি ভাষার কবিতা থেকে পাঠ করেন। পাশাপাশি এই পরিবেশনায় অংশ নেন তার শিক্ষার্থীরা। এরপর ছিল মনিপুরি আঙ্গিকের শাস্ত্রীয় নৃত্যের পরিবেশনা। ওয়ার্দা রিহ্যাব পরিচালিত পরিবেশনাটি শ্রোতা-দর্শকের নয়নে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেয় আইজিসিসির ৬ থেকে ১২ বছরে শিক্ষার্থীদের দলটি। পরিবেশিত হয় বাল্যকৃষ্ণ নর্তন। অনূর্ধ ১২ বছরের শিল্পীরা পরিবেশন করে গোপ রস শিরোনামের নাচ। নাচ-গান ও কবিতার এই পরিবেশনার মাঝে ছিল যোগ ব্যায়ামের প্রদর্শনী। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসিÑজাতীয় সঙ্গীতের সুরে শেষ হয় সাস্কৃতিক পরিবেশনা। সব শেষে আইজিসিসির সঙ্গীত ও নৃত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের সনদপত্র ও স্মারক প্রদান অতিথিরা। ‘রঙ যেন মোর মর্মে লাগে’ ॥ সঙ্গীত সংগঠন ‘গীতশতদল’ মঙ্গলবার আয়োজন করেছিল পঞ্চকবির গানের অনুষ্ঠান। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘ও আমার দেশের মাটি’ এ গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ইকবাল বাহার চৌধুরী, শিল্পী সাদী মুহাম্মদ ও বুলবুল মহলানবীশ। অনুষ্ঠানে পঞ্চকবির গান গেয়ে শোনান আরজু আক্তার, অপর্ণা খান, রীতা মজুমদার, মানসী সাধু, শিল্পী বালা, বাঁশরী দত্ত, মোসলেমা আক্তার, কৃষ্ণা, রতœা দত্ত, শুক্লা রায় চৌধুরী, সংযুক্তা রায়, নিতু চক্রবর্তী। মুক্তবাক-এর ‘স্বপ্নঘুড়ি দিলাম ছাড়ি’ ॥ আবৃত্তি সংগঠন মুক্তবাক আয়োজন করেছিল ‘স্বপ্নঘুড়ি দিলাম ছাড়ি’ শীর্ষক আবৃত্তি অনুষ্ঠানের। মঙ্গলবার শাহবাগে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে দ্বিমাসিক আবৃত্তি অনুষ্ঠানের অষ্টম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের আগে আলোচনা করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম ও মুক্তবাক-এর নির্বাহী প্রধান ইকবাল খোরশেদ। অনুষ্ঠানে আবৃত্তিতে অংশ নেন অদিতি অমৃতারাজ, রায়হার হায়দার রঞ্জন, কৃষ্ণা পাল, ইরাম মাহফুজা, মোঃ আসাদুজ্জামান, অমিয়া অমানিতা ও আশরাফ আলী। পরে আবৃত্তিশিল্পী মোঃ আহকামউল্লাহ উপস্থাপন করেন ‘মা’ বিষয়ক আবৃত্তি প্রযোজনা ‘আলোসাগরের গান’। সবশেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু। ‘ক্লাসরুম থিয়েটার’ ॥ মঙ্গলবার সকালে পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে দেশব্যাপী আনন্দময় ও সৃজনশীল ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠায় লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনা ও পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হলো পাঠ্যবইয়ের গল্প বলা ও নাটক নিয়ে ‘ক্লাসরুম থিয়েটার’। পুঠিয়ায় লোকনাট্য উৎসব শুরু হচ্ছে কাল ॥ স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, ‘হাতের মুঠোয় হাজার বছর-আমরা চলেছি সামনে’Ñ সেøাগানে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের আয়োজনে রাজশাহীর পুঠিয়ায় তিনদিনব্যাপী ১৪তম বাংলা লোকনাট্য উৎসব শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতিম-লীর সদস্য ও বাংলা লোকনাট্য উৎসবের প্রধান সমন্বয়কারী কাজী সাইদ হোসেন দুলাল জানান, পুঠিয়া উপজেলা সদরে রাজবাড়ী মাঠে ১৪তম বাংলা লোকনাট্য উৎসব আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে ১৮ মার্চ শনিবার পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত চলবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা। অনুষ্ঠান শুরুর আগের দিন বিভিন্ন স্থান থেকে শিল্পীরা এখানে এসে পৌঁছাবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের প্রধান উপদেষ্টা উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাশিল্পী অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, নওগাঁর সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম, নাটোরের সংসদ সদস্য এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতিম-লীর সদস্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হিসেবে থাকবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।
×