ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্যপ্রযুক্তি’

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ১৪ মার্চ ২০১৭

‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্যপ্রযুক্তি’

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীরা আসবেন, তারা অবদান রাখবেন এমনটি বোধ হয় এক সময় কারও ভাবনাতেই ছিল না। কিন্তু সেই বৃত্ত ভেঙ্গে অনেক আগেই নারীরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ও ব্যবসা করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। এক ধরনের পেশাদারিত্ব তৈরি করে নিজেদের মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিতে সক্ষম হয়েছেন। আর তাই মেধা, নেতৃত্ব, দক্ষতা দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তারাও হয়ে উঠেছেন অনন্য একজন। ঠিক তেমনি একজন লুনা শামসুদ্দোহা। যিনি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন। স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে কেবলই এগিয়ে যাচ্ছে। এ খাতে নারীদের সম্পৃক্ততা কেবলই বাড়ছে। তার হাতেগড়া প্রতিষ্ঠান ‘দোহাটেক নিউমিডিয়া’। বর্তমানে তাদের কর্মপরিধি প্রসারিত হয়েছে আমেরিকা, কানাডা, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশে ই-গবর্নেন্স তৈরির ক্ষেত্রে ‘দোহাটেক’ বিরাট ভূমিকা পালন করছে। একজন সৃজনশীল সফটওয়্যার এন্টারপ্রেণার হিসেবে দেশে এবং বিদেশে যিনি একজন পরিচিত মুখ। শুধু তাই নয়, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে একীভূত করার কৃতিত্বও তার। তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরও অনেক উচ্চতায় নিতে চান তিনি। একই সঙ্গে এ খাতে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়াতে তিনি অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রান্তিক বা গ্রামীণ নারীরা সুযোগ পেলে এ খাতকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে একসময় ব্রিটিশ কাউন্সিলে টিচিং শুরু করেছিলেন লুনা শামসুদ্দোহা। কিন্তু পরে মনোযোগী হন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। এখন এ সেক্টর ঘিরেই তার যত স্বপ্ন। বর্তমানে দেশে-বিদেশে এ সেক্টরের অনেক প্রতিষ্ঠান ও ফোরামের সঙ্গে যুক্ত তিনি। নিজ কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন সময় শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও সম্মানিত এবং পুরস্কৃত হয়েছেন। প্রযুক্তি খাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ভারত থেকে উইমেন লিডারশিপ এ্যাচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, সুইডেন থেকে গ্লোবাল উইমেন ইনভেন্টরস এ্যান্ড ইনভেন্টরস নেটওয়ার্ক (গুইন) সম্মাননাসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তবে অবসরে নিজ হাতে রান্না করতে ভালবাসেন। বই পড়া বরাবরই তার পছন্দের। অসম্ভব বিনয়ী লুনা শামসুদ্দোহা মনে করেন, মানুষের শেখার শেষ নেই। তিনিও তাই প্রতিদিন শিখছেন। শেখাটাই তার কাছে এক বড় আনন্দ। লুনা শামসুদ্দোহা একজন স্বাপ্নিক মানুষ। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন। স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে কেবলই এগিয়ে যাচ্ছে। এ খাতে নারীদের সম্পৃক্ততা কেবলই বাড়ছে। তিনি মনে করেন, নারীর ক্ষমতায়নের বড় একটি টুলস এখন তথ্যপ্রযুক্তি খাত। এখান থেকে কোনভাবেই পিছিয়ে পড়া চলবে না। টেকনোলজির দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, সুযোগটা আমাদের নিতেই হবে। লুনা সামসুদ্দোহা মনে করেন, তথ্যপ্রযুক্তি এ দেশের মেয়েদের জন্য খুবই ভাল একটি সেক্টর। এই সেক্টরে মেয়েদের সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তার মতে, গ্রামীণ মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের যেসব মেয়েরা খুব বেশি লেখাপড়া করতে পারেনি তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হলে নির্দ্বিধায় এই সেক্টরে তারা বড় ধরনের অবদান রাখতে সক্ষম। ঘরে বসেই তারা ডাটা এন্ট্রিসহ নানা ধরনের কাজ করে কর্মসংস্থান করতে পারবে। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রচুর সময় দেন সামসুদ্দোহা। কাজের প্রতি তিনি এতটাই অঙ্গীকারাবদ্ধ যে, দিন এবং রাতকে আলাদা করে দেখেন না। তবে অবসরে নিজ হাতে রান্না করতে ভালবাসেন। বই পড়া বরাবরই তার পছন্দের। লুনা শামসুদ্দোহা একমাত্র কন্যাসন্তানের জননী। একমাত্র মেয়ের নাম রীম শামসুদ্দোহা। মাকে দেখে মেয়ে রীম তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এলেও মা-বাবার প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হননি। নিজেই ‘যেতে চাও ডটকম’ নামে একটি ওয়েবসাইট করেছেন। যেখানে ঢাকা শহরের বিভিন্ন ইভেন্টের আপডেট খবরাখবর থাকে। মেয়ের এ উদ্যোগ আগামীতে বড় ধরনের সাফল্য পাবে বলে তিনি আশাবাদী।
×