ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওজনে অনিয়মের সাজা বাড়ছে, আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৪ মার্চ ২০১৭

ওজনে অনিয়মের সাজা বাড়ছে, আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ওজনে অনিয়মের সাজা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত নতুন একটি খসড়া আইন নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘স্ট্যান্ডার্ডস ওজন ও পরিমাপ আইন, ২০১৭’ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। খসড়া আইন এ অনুমোদনহীন বাটখারা উৎপাদন ও ব্যবহার দুই ক্ষেত্রেই শাস্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ শিল্প-প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ আইন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন-২০১৭ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতে ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজারুল কায়েস এবং আইনমন্ত্রীর ছোট ভাই প্রকৌশলী আরিফুল হক রনির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ শিল্প-প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ আইন, ২০১৭ তে কর্পোরেশনের মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়েছে। ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির এক আদেশের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু সংশোধনী আনা হয়। শফিউল আলম বলেন, নতুন আইনে ‘কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধন কি পরিমাণ হবে সেই ক্ষমতাটা সরকারের হাতে রাখা হয়েছে। সরকার মূলধনের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেবে। আগের আইন থেকে কিছু বিষয় বাদ দিয়ে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয়করণের ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছে ন্যস্ত হয়ে যাওয়ায় আইন থেকে ন্যস্ত করার বিধান বাদ দেয়া হয়েছে। কোম্পানি আইনের প্রযোজ্যতা নতুনভাবে আইনে সংযোজন করা হয়েছে। আগের আইন থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের অংশটিও বাদ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জাতীয়করণ করা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পেট্রোবাংলা আগে এর মধ্যে ছিল। এখন তা বাদ দেয়া হয়েছে, কারণ পেট্রোবাংলা জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতায় চলে গেছে। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যে কর্পোরেশনগুলো আছে তাদের সঙ্গে আলাপ করে তালিকাটা শুদ্ধ এবং সংখ্যাগতভাবে সঠিকতা যাচাই করে এখানে আনা হয়েছে। আগের আইনের তফসিলে জাতীয়করণ করা ২৫০টির বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের তালিকা ছিল জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, কেবল সরকারের বর্তমানের শিল্প-প্রতিষ্ঠানের নাম প্রস্তাবিত আইনের তফসিলে রাখা হয়েছে। যেগুলো বিরাষ্ট্রীকরণ ও বিক্রি হয়ে গেছে সেগুলো এরমধ্যে রাখা হয়নি। নতুন আইনের তফসিলে জাতীয়করণ করা ১০৯টি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের তালিকা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রিসভা ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন, ২০১৭’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আইনটি ১৯৬১ সালের জানিয়ে তিনি বলেন, এটি ইংরেজীতে ছিল, এখন বাংলায় অনুবাদ করে নতুনভাবে আনা হয়েছে। এখানে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে অপ্রয়োজনীয় কিছু ধারা বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সুপ্রীম কোর্টের আদেশে ১৯৮২ সালের ‘দ্য স্ট্যান্ডার্ড অব ওয়েট এ্যান্ড মেজার্স অর্ডিন্যান্স’ সংশোধন ও পরিমার্জন করে আন্তর্জাতিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে বাংলা ভাষায় আইনটির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আর্থিক শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মানদ-হীন বাটখারা বা পরিমাপক ব্যবহারের শাস্তি অনুর্ধ ছয় মাসের কারাদ-ের সঙ্গে অর্থদ- তিন হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারের অনুমতিক্রমে সম্পূর্ণ রফতানির উদ্দেশে তৈরি বা উৎপাদিত কোন বাটখারা বা পরিমাপক ব্যতীত কোন পরিমাপক তৈরি করার অপরাধে অনুর্ধ এক বছরের কারাদ- বা এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আগে জরিমানা ছিল ১০ হাজার টাকা। তবে এই অপরাধে অনুর্ধ এক বছরের কারাদ- বহাল থাকছে। শোক প্রস্তাব ॥ সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস এবং আইনমন্ত্রীর ছোট ভাই প্রকৌশলী আরিফুল হক রনির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। বৈঠকের শুরুতে দুটো শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত মিজারুল কায়েস গত ১১ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। তার উদ্দেশে মন্ত্রিসভা শোক প্রস্তাব গ্রহণ এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে। এছাড়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভাই প্রকৌশল পরামর্শক আরিফুল হক গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে ইন্তেকাল কারেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। পদ্মা সেতুসহ বড় বড় প্রকল্পে অনলাইনের মাধ্যমে প্রায় বিনামূল্যে দেশের সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ সেবা দিতেন। তার উদ্দেশেও মন্ত্রিসভা শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
×