ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা ॥ বিশেষ বিধানের খসড়া তৈরি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৪ মার্চ ২০১৭

বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা ॥ বিশেষ বিধানের খসড়া তৈরি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বিশেষ বিধানের মাধ্যমে ১৮ ও ২১ বছরের আগে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ের বিয়ের অনুমতির কথা বলা হলেও কোন প্রেক্ষিতে এই বিধান কার্যকর হবে তা বরাবরই অস্পষ্ট ছিল জনমনে। এই ‘বিশেষ বিধান’ কোন কোন ক্ষেত্রে এবং কিভাবে কার্যকর হবে এর ব্যাখ্যায় মন্ত্রণালয় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিধিমালার প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে। ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা’ শিরোনামের এই খসড়ায় বলা হয়েছে, যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে প্রেমের সম্পর্কের কারণে নিজেরা বিয়ে করলে এবং মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে বা সন্তানের মা হয়ে গেলে আদালত বিয়ের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারবেন। আইনে নারী ও পুরুষের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স যথাক্রমে ১৮ ও ২১ বছর নির্ধারণ করা আছে। তবে উল্লিখিত পরিস্থিতিতে বিশেষ বিধানের মাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে বিয়ে করতে পারবে। রবিবার মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা’ শিরোনামের এই খসড়া বিধি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগমসহ এনজিও, দাতা সংস্থা এবং নারী, শিশু ও মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে এ খসড়া বিধিমালা নিয়ে বৈঠক করেন। খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা বা সন্তানের মা হওয়ার বিষয়টির স্বপক্ষে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা পৌরসভার কাউন্সিলরের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। আর আদালত প্রয়োজনে বিশেষ পরিস্থিতির সত্যতা যাচাইয়ে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে তদন্ত করতে পারবেন। এছাড়া, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটির ভরণপোষণের উপযুক্ত নিকটাত্মীয় কেউ না থাকলে সে ক্ষেত্রেও আদালত তার বিশেষ এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারবেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন মহলের আপত্তির মুখে বিশেষ বিধানে কম বয়সে ছেলেমেয়েদের বিয়ের বিধান রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ বিল, ২০১৭ জাতীয় সংসদে পাস হয়। গত তিন দিন আগে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা’ খসড়াটি একেবারেই প্রাথমিক। ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে বেসরকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। এছাড়া, এ বিষয়ে যেসব ব্যক্তিবর্গ মতামত দিতে চান, তাদের কাছ থেকে আগামী সাত দিনের মধ্যে মতামত চাওয়া হয়েছে। সব মতামত একত্র করে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে। তারপরই চূড়ান্ত হবে এ বিধিমালা।’ ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা’ খসড়া বিধিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকে সভাপতি করে ১৬ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে ১৫ সদস্যের জেলা কমিটি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে ১২ সদস্যের কমিটি এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে সাত সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটি হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
×