ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য বাধা দূর করার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১৩ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড বাণিজ্য বাধা দূর করার উদ্যোগ

এম শাহজাহান ॥ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের জয়েন্ট ট্রেড কমিশন কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভিসা-সহজীকরণ ও শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা চায় বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ আকর্ষণে দেশটিকে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হবে। আগামী জয়েন্ট ট্রেড কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে যেসব বাণিজ্যিক বাধা রয়েছে তা দূর করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, আগামী ২৯ থেকে ৩০ মার্চ দুদিনব্যাপী রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড জয়েন্ট ট্রেড কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই বৈঠক ঘিরে বাংলাদেশের কার্যপত্র প্রস্তুত করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশী পণ্য রফতানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। জানা গেছে, থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৬৪ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এ বিপুল ঘাটতি কমাতে থাইল্যান্ডের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের বাণিজ্য সুবিধা আরও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন থাইল্যান্ডে পণ্য রফতানিতে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা আরও বাড়াতে হবে। এজন্য থাইল্যান্ড সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, পাটজাত পণ্য, ওষুধ এবং ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য থাইল্যান্ডে রফতানির সুযোগ রয়েছে। থাইল্যান্ডে বাংলাদেশী পণ্য রফতানির পরিমাণ বর্তমান ৩ কোটি ২৭ লাখ ডলার। বড় অঙ্কের এই বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে হলে থাইল্যান্ডে রফতানি বাড়ানো প্রয়োজন। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী জনকণ্ঠকে বলেন, পর্যটনশিল্পে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। সরকারী-বেসরকারী খাতের উদ্যোগে দ্রুত বিকাশ ঘটছে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের। তবে এ শিল্পের আরও উন্নয়নে প্রয়োজন বিদেশী বিনিয়োগ। তাই পর্যটন শিল্পে থাইল্যান্ড যৌথ ও একক বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশে আসছেন। বিদেশী বিনিয়োগে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড জয়েন্ট ট্রেড কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে বলে আশা করছি। জানা গেছে, প্রতি বছর দেশটিতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বাংলাদেশী চিকিৎসা ও বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে গমন করছেন। থাইল্যান্ডের পর্যটন শিল্প বিকাশে বাংলাদেশীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় এদেশে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ আসেনি। শুধু তাই নয়, ভিসা পেতেও এখন নতুন বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। বাণিজ্য ঘাটতি বাংলাদেশের অনুকূলে নয়, প্রতিবছর বাণিজ্য বৈষম্য বাড়ছে। তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাসহ থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ। এলক্ষ্যে থাইল্যান্ডের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে জমি দিতে চায় সরকার। যদিও ইতোমধ্যে বাংলাদেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, ওষুধ, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং পর্যটন শিল্পে থাইল্যান্ড বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এটি সম্ভব হলে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদারে পরিণত হবে। বাংলাদেশের পাট ও পাট জাতীয় পণ্য এবং অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও চাহিদা রয়েছে দেশটিতে। থাইল্যান্ডে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার বাড়ানো গেলে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হবে।
×