ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীদের কোন ছাড় নয়, দমন অভিযান অব্যাহত রাখুন ॥ ইনু

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ মার্চ ২০১৭

জঙ্গীদের কোন ছাড় নয়, দমন অভিযান অব্যাহত রাখুন ॥ ইনু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জঙ্গী ও জঙ্গীসঙ্গীকে কোন ছাড় না দিয়ে চলমান জঙ্গী দমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাসদ আয়োজিত জঙ্গীবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের প্রতি এ দাবি জানান তিনি। ‘শান্তি-উন্নয়নের জন্য জঙ্গী নির্মূল কর- জঙ্গীসঙ্গীর বিচার কর- দুর্নীতি ও বৈষম্যের অবসান কর- সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের বাংলাদেশ গড়’ এই সেøাগান নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে দলের সারাদেশের নেতাকর্মীরা বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও অংশ নেন। সভাপতির বক্তব্যে ইনু বলেন, দেশ জঙ্গী দমনের যুদ্ধ পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। জঙ্গীবাদী নেটওয়ার্কগুলো চিহ্নিত হয়েছে। জঙ্গীবাদী নেটওয়ার্কগুলো ধ্বংসের অভিযান চলছে। তবে জঙ্গীরা এখনও সম্পূর্ণ পরাজিত হয়নি। আত্মসমর্পণ করেনি। জঙ্গীবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জঙ্গীসঙ্গী খালেদা জিয়া জঙ্গীর সঙ্গিত্ব ত্যাগ করেননি। জঙ্গী উৎপাদন-পুনরুৎপাদনের কারখানা বিএনপি এখনও প্রকাশ্যেই জঙ্গীর সঙ্গী হয়েই আছে। জঙ্গী দমনের যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেশের চলমান রাজনীতি ও ভবিষ্যত রাজনীতির গতি-প্রকৃতি দেখতে হবে একথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান অপরিহার্য। তেমনই জঙ্গীবাদের সম্পূর্ণ পরাজিত করা এবং জঙ্গীর সঙ্গীকেও গণতান্ত্রিক রাজনীতির মাঠ থেকে বর্জন ও বিদায় করাও অপরিহার্য। নির্বাচন বা কোন অজুহাতেই জঙ্গী ও জঙ্গী-সঙ্গীর সঙ্গে আপোস, সমঝোতা বা মিটমাটের সুযোগ নেই। নির্বাচন ও জঙ্গী ও জঙ্গীর সঙ্গীকে হালাল করার দলকষাকষির বিষয় না। জঙ্গী দমনের এ যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিকে রাজনীতি ও অর্থনীতির দুইটি অংক মেলাতে হবে। জঙ্গী ও জঙ্গীসঙ্গীকে কোন ছাড় না দিয়ে শূন্য সহিষ্ণু নীতির ভিত্তিতে দমন অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে ১৪ দলের অন্যতম শরিক নেতা ইনু বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, দুর্নীতির বিচার, আগুনে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তি ও উন্নয়নের ধারা বেগবান করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। জাতীয় অর্থনীতিকে স্বাবলম্বিতা ও সমৃদ্ধির পথে আরেক ধাপ এগিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে ইনু বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সুফল সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে শোষণ-বৈষম্য-দারিদ্র্য-দুর্নীতির অবসান করা এখন সময়ের দাবি। সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে বাংলাদেশ পরিচালিত করারও বিকল্প নেই। ইনু বলেন, এসব দাবি দাওয়া পূরণ করা গেলে বাংলাদেশে আর কোন দিনই রাজাকাররা বা রাজাকার সমর্থিত সরকার বা সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে, নির্বাচনে ‘মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকারদের মধ্যে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা’ও চিরদিনের জন্য বন্ধ হবে। বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই খেলবে। এখনও অনেকে ‘রাজাকারদের সঙ্গে আপোস-ক্ষমতার ভাগ না দিলে দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বা সঙ্কট দূর হবে না’ বলে তত্ত্ব দেন এমন মন্তব্য করে তথ্য মন্ত্রী ইনু বলেন, রাজাকারদের সঙ্গে মিটমাটের এই তত্ত্বকেও ‘দ্বি-জাতি তত্ত্বে’র মতোই কবর দেয়া হবে। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কখনই বিএনপির আসল এজেন্ডা না। বিএনপি ‘নির্বাচন’ বা ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’ এর কথা বলে তাদের দিকে জনগণের অভিযোগের আঙ্গুল অন্যদিকে ঘুরাতে চায়। বিএনপি ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ নামে দেশ সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনতে চায়। বিএনপির ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ দাবি দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেয়ার পাতা ‘ফাঁদ’, সংবিধান ও গণতন্ত্রের জন্য ‘গলার ফাঁস’ বলে জনাব হাসানুল হক ইনু মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ বিরোধী চলমান যুদ্ধে বিজয় এবং বাংলাদেশ সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে পরিচালিত করতে জাসদের নেতাকর্মীরা সংগ্রামের পথে বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, কার্যকরী সভাপতি এ্যাড. রবিউল আলম, মীর হোসাইন আখতার, ড. আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন খান, রেজাউল করিম তানসেন এমপি, আব্দুল হাই তালুকদার, এ্যাড. হাবিবুর রহমান শওকত, এ্যাড. শাহ জিকরুল আহমেদ, কাজী রিয়াজ, আফরোজা হক রীনা, এ্যাড. মজিবুল হক বকু, শফি উদ্দিন মোল্লা, শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন খান জকি, লোকমান আহমেদ, নুরুল আখতার, নাদের চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন রাঙ্গা, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, শওকত রায়হান, নইমুল আহসান জুয়েল, রোকনুজ্জামান রোকন, এ্যাড. সাদিক হোসেন প্রমুখ।
×