ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী চাকুরেদের ইনক্রিমেন্ট ৮ শতাংশ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১২ মার্চ ২০১৭

সরকারী চাকুরেদের ইনক্রিমেন্ট  ৮ শতাংশ  হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায় বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫ থেকে বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হতে পারে। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেলে প্রতিবছর যৌক্তিক পরিমাণ বেতন বাড়ানোর ঘোষণা রয়েছে অষ্টম পে-স্কেলে। ওই ঘোষণা অনুযায়ী আগামী জুলাই থেকে সরকারী বেতনভাতা নির্ধারণী ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন আনার চিন্তা-ভাবনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডেকেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই বৈঠকে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানোর বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। প্রসঙ্গত, অষ্টম পেস্কেল অনুযায়ী গত ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে বেতন আর ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ভাতা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করা হয়। এতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে সরকারী কর্মকতা-কর্মচারীদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদন করে সরকার, যাতে বেতন বাড়ে গ্রেড ভেদে ৯১ থেকে ১০১ শতাংশ পর্যন্ত। অষ্টম পে-স্কেলে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা পদে যোগ দেয়া একজন চাকরিজীবীর মূল বেতন হয় মাসে প্রায় ২২ হাজার টাকা, যা আগের কাঠামোতে ১১ হাজার টাকা ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় এলাকা অনুযায়ী বাড়িভাড়া এবং গ্রেড অনুযায়ী চিকিৎসা ও অন্যান্য ভাতা। বর্তমান ২১ লাখ সরকারী চাকরিজীবী এই হারে মূল বেতন পাচ্ছেন ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে। আর ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ভাতা কার্যকর হয়েছে। সপ্তম বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছিল ২০০৯ সালের ১ জুলাই। সেই সময় সরকারী চাকুরেদের সর্বনিম্ন ৪ হাজার ১০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা বেসিক ধরে বেতন দেয়া হতো। এদিকে, ইতোপূর্বে একসঙ্গে এত টাকা বেতনÑভাতা বাড়ানোর নজির দেশে নেই। এরপরও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড নিয়ে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের আক্ষেপ ছিল। ওই আক্ষেপ দূর করতেই এবার ইনক্রিমেন্ট আগের চেয়ে ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ইস্যুতে এক ধরনের চাপা অস্থিরতা ছিল সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। তাদের অস্থিরতা দূর করতেই ইনক্রিমেন্ট বাড়ানোর একটি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোন কিছু করা হয়নি। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। তিনি বলেন, আগামী বাজেটের আগে হয়তো এ বিষয়ে একটি ইতিবাচক ঘোষণা আসতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের ইচ্ছার ওপর। এদিকে, অষ্টম বেতন কমিশনের ঘোষণা ছিল, মূল্যস্ফীতির চাপ আমলে নিয়ে প্রতিবছর যৌক্তিক পরিমাণ বেতন বাড়ানো যেতে পারে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী জুনের মধ্যে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা কিছুটা বাড়বে। আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা হবে। সে ক্ষেত্রে আসছে বাজেটের বরাদ্দ বাড়ানোর মতো বিষয়ও থাকবে। এ জন্য জুনে নতুন বাজেট ঘোষণার আগেই এ বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় সরকার। সূত্রমতে, মূল্যস্ফীতিকে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবছর বেতন বাড়ানোর ঘোষণা থাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বেতন-ভাতার অসঙ্গতি চিহ্নিত করবে। বাজারের অতি মূল্যস্ফীতিসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে একটি প্রতিবেদনও তৈরি করা হবে। প্রতিবছরের শেষে মন্ত্রিসভায় এই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। প্রতিবেদনের সুপারিশ মোতাবেক পরির্বতন আসবে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায়। এ বছর বেতন-ভাতা বাড়ানো সংক্রান্ত বার্ষিক সারসংক্ষেপ তৈরি করে অর্থমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই প্রতিবেদন নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা করা হবে। অর্থমন্ত্রী এক নোটে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বেতন-ভাতার কোন পরিবর্তন করতে হলে তা যথাসময়ে করা যেতে পারে।
×