ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আয়ের পথ

পকেট ভারি করতে ঝড়ের প্রার্থনা

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ১২ মার্চ ২০১৭

পকেট ভারি করতে ঝড়ের প্রার্থনা

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ মানবজাতি সব সময় ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে থাকে- এটা দিবালোকের মতো সত্য। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, কালবৈশাখী সৃষ্টি হয়ে যেন উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প-বস্তিগুলো ল-ভ- করে দেয়, এজন্য প্রার্থনা করছে কতিপয় জনপ্রতিনিধি এবং আরএসও ক্যাডার। সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে যাদের অবৈধ ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে, বিদেশী সাহায্য সংস্থার কাছ থেকে ত্রাণ ও নগদ টাকা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু কিছু বিলিবণ্টন শেষে সিংহভাগ আত্মসাত করে যারা অঢেল টাকার মালিক বনে গেছে, তারাই চাইছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-বস্তি ল-ভ- হোক। এতে ওই জনপ্রতিনিধি ও স্বার্থান্বেষী মহলের ধারণা, এক ঢিলে দু’পাখি শিকার করা যাবে। একদিকে ক্যাম্পের শেড (কক্ষ) তৈরি করতে ঠিকাদারি কাজ হাতিয়ে নিতে পারবে তারা, অপরদিকে বিদেশী সাহায্য সংস্থার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী এনে আত্মসাত করতে পারবে। সোমবার আকস্মিক বৃষ্টিপাত হয়েছে কক্সবাজার শহর ও উখিয়া-টেকনাফে। মঙ্গল ও বুধবার আকাশ মেঘলা ছিল। উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, টেকনাফের মুচনি-নয়াপাড়া ও লেদা ক্যাম্প-বস্তির কয়েক রোহিঙ্গা জানায়, তুফান (ঘূর্ণিঝড়) যেন হয়, এজন্য রোহিঙ্গাদের দোয়া করতে বলেছে আরএসও ক্যাডার ও স্থানীয় মেম্বার। তাদের জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়ে রোহিঙ্গা বস্তি উড়ে গেলে ইউএনএইচসিআর নাকি আমাদের মজবুত শেড তৈরি করে দেবে। সাহায্য পাওয়া যাবে যথেষ্ট। শেড নির্মাণ হলে ঠেঙ্গারচরে স্থানান্তর করে নিয়ে যাওয়া হবে না- ইত্যাদি বলাবলি করছে তারা। এছাড়াও নতুন আয়ের পথ খুঁজতে বিভিন্ন ফন্দি আঁটছে আরএসও এবং কতিপয় ইউপি সদস্য। জানা গেছে, মিায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বালুখালীর নতুন রোহিঙ্গা বস্তিগুলো বৃষ্টিতে ভিজে যায়। উখিয়ার বালুখালীর পানবাজার স্টেশনের পশ্চিম পার্শ্বে পাহাড়ে বন বিভাগের জায়গায় আশ্রয় নেয়া প্রায় ২২শ’ রোহিঙ্গা পরিবার এলোমেলোভাবে যার যার মতো করে ঝুপড়িঘর তৈরি করে বসবাস করছে। পলিথিন ও জঙ্গলের ছাউনি দিয়ে বস্তির ঘর তৈরি করে জীবনযাপন করা ওই রোহিঙ্গাদের দেশী-বিদেশী এনজিও, আরএসও-আলএ্যাকিনের সদস্যরা সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় ত্রাণ বিতরণ করে চলছে। সোমবার ভারি বৃষ্টি হওয়ায় রোহিঙ্গা বস্তিতে বসবাসরত শত শত রোহিঙ্গা দিশাহারা হয়ে পড়ে। বৃষ্টির পানি ও বাতাসে তাদের ওসব ঝুপড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। রোহিঙ্গা নারী জুলেখা জানায়, মা-বাবাসহ পাঁচজন নিয়ে ঝুপড়িঘরে থাকছি। বৃষ্টির পানিতে তাদের একমাত্র থাকার ঘরটি ভেঙ্গে গেছে। আবুল বশর ও তার স্ত্রী সাবেকুন্নাহার জানায়, পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকার ঝুপড়ি ঘরটি ভেঙ্গে গেছে।
×