ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চরঙ্গ নাট্যোৎসবে ‘কর্ণপূরাণ’

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১২ মার্চ ২০১৭

পঞ্চরঙ্গ নাট্যোৎসবে ‘কর্ণপূরাণ’

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার (ভিসিটি) আয়োজিত পঞ্চরঙ্গ নাট্যোৎসবে ভিক্টোরিয়া কলেজ মঞ্চে আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘কর্ণপুরাণ’। ড. মুকিদ চৌধুরী রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মো. রাশেদুল ইসলাম জীবন। বাংলা মুভেমেন্ট থিয়েটার শিল্পশৈলীতে উপস্থাপিত ‘কর্ণপুরাণ’ নাটকের মঞ্চ-আলো-শব্দ পরিকল্পনায় রয়েছেন আসলাম অরণ্য। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করবেন খায়রুল বাশার বাঁধন, শাহাদাৎ হোসেন সরকার, নাজমুল হাসান, আল-আমিন কাজি রিয়ান, রিপন চৌধুরী আপন, নূর হোসাইন রাজীব, ওমর ফারুক, দেলোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসাইন, নুরুল আজম আরজু, শাহিদুল ইসলাম সাঈদ, মারিয়া আক্তার, দ্বীপা রানী দাশ, রাকিবা আক্তার জ্যোতি, সোহেল মিয়া, রাশেদুল ইসলাম জীবন প্রমুখ। এ প্রসঙ্গে নির্দেশক মোঃ রাশেদুল ইসলাম জীবন বলেন, বিষয়বস্তুর নান্দনিক উপস্থাপনা শৈলীগুণে দেশের নাট্য জগতে ‘কর্ণপুরাণ’ একটি অনন্য প্রযোজনা হতে যাচ্ছে। কেননা, মহাভারত মঞ্চে প্রদর্শন করা দুঃসাহসই বটে। তাছাড়া এই নাটকে মহাভারতের অন্যতম ও আকর্ষণীয় দৃশ্যগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে রাজপুত্রদের অস্ত্র প্রদর্শনী, স্বয়ম্বরসভা, দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ, রঙ্গভূমিতে অর্জুন-কর্ণের অস্ত্রপরীক্ষা প্রভৃতি বিষয়গুলোর উপস্থাপনা দর্শকদের মধ্যে মুগ্ধ করবে বলে আমার বিশ্বাস। অভিনয় আর মুভমেন্ট থিয়েটার শিল্পশৈলীতে নাটকের বিভিন্ন দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। নাটকের কাহিনীতে দেখা যাবে মহাভারতের ক্ষুদ্র অংশ নেন কর্ণ। বরং বিশাল অংশ নিয়েই তার প্রভাব; তবে কর্ণ-আখ্যানের মর্মগাঁথার যে অন্তর্গত সত্য ও শক্তি তা মহাভারতের ব্যাপকতাকেও ছাড়িয়ে যায়। মহাভারত পাঠকালে কর্ণকে মনে হয় তিনি যেন আমাদের মানুষ, অনার্য ও বাঙালী। তাই তাকে, ‘কর্ণপুরাণ’-এ দেখানো হয়েছে অন্যভাবে, কৌরব ও পা ব রাজপুত্রের চেয়েও কুশলী বীররূপে। তাছাড়া মহাভারতের আর্য-আখ্যানজুড়ে যে প্রকটভাবে, হিংসা-দ্বেষ-ক্রোধ-প্রতিহিংসা-যুদ্ধ এবং কুটিল-জটিল রাজনীতির সন্ধান পাওয়া যায় এবং এসব প্রকাশ করতে অনার্যবীরদের করা হয়েছে অসহায়; এসব খ াতেই ‘কর্ণপুরাণ’-এ দেখানো হয়েছে অনার্য ও বাঙালী কর্ণকে সর্বকালের, সর্বযুগের বীরশ্রেষ্ঠ ও একজন আপোসহীন-সংগ্রামী বিপ্লবী হিসেবে। এখানে কর্ণের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য আধুনিক মনন ও জিজ্ঞাসাসূত্রে পৌরাণিক পরিম লে অভিনব। তাই মনস্তাত্ত্বিক আখ্যান। ঈর্ষা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, ক্ষোভ, বিদ্রোহ-সবই যেমনি কর্ণের হৃদয়কে মথিত করে, একাই যেন সব বুক পেতে গ্রহণ করতে হয়; ঠিক তেমনি তিনি জীবনপথের নিঃসঙ্গ অভিযাত্রী; নেই গৌরব, স্বাতন্ত্র্যও নিষ্প্রভ। অবশ্য পরিণতি ঘটেছে কল্পনার রঙ-তুলি ব্যবহারেই।
×