ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বুক বিল্ডিং আইন আরও সংশোধন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১২ মার্চ ২০১৭

বুক বিল্ডিং আইন আরও সংশোধন হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নতুন শেয়ার তালিকাভুক্তির জন্য বুক বিল্ডিং আইন আবারও সংশোধনের পরিকল্পনা করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী শেয়ারের দর নির্ধারণে কোন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সর্বোচ্চ ২ শতাংশ শেয়ার ক্রয়ের জন্য দরপ্রস্তাব করতে পারবে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিওর) আকার বড় হলে এ হার ১ শতাংশও করা হতে পারে। বর্তমানে কোন প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ শেয়ার কিনতে দরপ্রস্তাব করতে পারে। সর্বশেষ আমারা নেটওয়ার্কসের শেয়ারদর ৩৯ টাকা নির্ধারণে পারস্পরিক যোগসাজশের অভিযোগ আসার পর আইনটি সংশোধনের এ পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি। বুক বিল্ডিং আইনের সর্বশেষ সংশোধন হয় গত ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সংশোধনীতে আইপিওতে প্রিমিয়াম চাইলেই বুক বিল্ডিং পদ্ধতি অনুসরণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। দর নির্ধারণের সর্বনিম্ন সীমা আরোপ করা হলেও সর্বোচ্চ সীমা রাখা হয়নি। আইপিওর বুক বিল্ডিং পদ্ধতির বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আমারা নেটওয়ার্কসের শেয়ার দর (কাট-অব-প্রাইস) ৩৯ টাকার কম হলে কোম্পানিটির আইপিও প্রক্রিয়াই বাতিল হয়ে যেত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কর্মকর্তারা জানান, শেয়ার দর এর কম হলে যে পরিমাণ নতুন শেয়ার ইস্যু করা হতো, তাতে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের অংশ ৩০ শতাংশের নিচে নামত। পাবলিক ইস্যু রুলস অনুযায়ী এ অবস্থায় কোন কোম্পানি আইপিওতে যেতে পারে না। যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনে ডাচ-এ্যাকশন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় কি-না, তাও বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান বিএসইসির কর্মকর্তারা। তারা বলেন, এ পদ্ধতিতে কোন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী যে দরে শেয়ার ক্রয়ের প্রস্তাব করবে, তাকে সে দরেই শেয়ার নিতে হবে। এতে কেউ কারসাজি করতে চাইলে নিজেরই ক্ষতি হবে। বিদ্যমান আইনের দুর্বলতার সুযোগে পারস্পরিক যোগসাজশে ১০টি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর মাধ্যমেই চূড়ান্ত দর নির্ধারণ করা সম্ভব বলে মনে করে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই ও এর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ। বেশি সংখ্যক প্রাতিষ্ঠানিক দরপ্রস্তাবের মাধ্যমেই যাতে চূড়ান্ত দর নির্ধারিত হয়, সেভাবে বিদ্যমান বুক বিল্ডিং আইনের সংশোধনের সুপারিশ করেছে তারা। বিএসইসির কর্মকর্তারা জানান, ডিএসইর প্রস্তাব পাওয়ার আগেই কমিশন আইন সংশোধনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সংখ্যা এবং তাদের মূলধন পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে কোটা পুনর্নির্ধারণ করার বিষয়টিও কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে। বর্তমানে ১০ ক্যাটাগরির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি ক্যাটাগরির জন্য সমান ১০ শতাংশ করে কোটা বরাদ্দ রয়েছে। ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান বুক বিল্ডিং আইন অনুযায়ী কোন কোম্পানি কত টাকা মূলধন সংগ্রহ করবে, তা ঘোষণা করে। এ হিসাবেই প্রাতিষ্ঠানিক কোটা টাকার অঙ্কে নির্ধারিত হয়। আবার এ আইন অনুযায়ী দরপ্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দরপ্রস্তাব করতে হয় শেয়ারসংখ্যার ওপর, যা সাংঘর্ষিক। এরও সংশোধন দরকার।
×