ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুজনের মধ্যে প্রথম ফোনালাপ

আব্বাসকে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১২ মার্চ ২০১৭

আব্বাসকে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শুক্রবার তাদের মধ্যে প্রথম ফোনালাপের সময়ে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়। এদিকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় বসতিস্থাপন থেকে শুরু করে ইরান পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে আশায় আলো দেখছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। খবর এএফপি, বিবিসি, আলজাজিরার, হারেজ ও ওয়াফা অনলাইনের। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম আব্বাসকে ফোন করলেন। আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনা জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরুর বিষয়ে আলোচনার জন্য আব্বাসকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। টেলিফোন আলাপে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে যথার্থ শান্তি স্থাপন করতে পারবে এমন শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন ট্রাম্প। ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছে-এই অভিযোগ ওঠার পর এটি তাদের মধ্যে প্রথম যোগাযোগ। খবর তিনি বলেছেন, শান্তি চুক্তির জন্য ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের কর্তৃপক্ষের উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এর শর্ত ঠিক করে নেয়া। জবাবে আব্বাস জানিয়েছেন, শান্তি হলো ফিলিস্তিনিদের কৌশলগত পছন্দ। বৈঠকের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গত মাসের মাঝামাঝি হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ওই সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্কট সমাধানে দুই রাষ্ট্রনীতি তিনি অনুসরণ করবেন না। পরে অবশ্য ট্রাম্প তার এই বক্তব্য থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ট্রাম্প নির্বাচনে জয়লাভের পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বেশ কয়েকবার তার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যেটাকে ‘চূড়ান্ত চুক্তি’ বলছেন। গত মাসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়হুর ওয়াশিংটন সফরকালে ট্রাম্প তার সঙ্গে এই ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা করেন। আব্বাসের সঙ্গে ট্রাম্প এমন এক সময় কথা বলতে যাচ্ছেন যখন তার এক শীর্ষ কূটনীতিক জ্যাসন গ্রিনব্লাটের ওই এলাকা সফরের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ট্রাম্প ইতোমধ্যে মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। নির্বাচনের পর একমাত্র জর্দানের বাদশা আব্দুল্লাহই ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। বৃহস্পতিবার আব্বাস রামাল্লায় তার কার্যালয়ে ইউনিয়ন ফর রিফরম জুডায়িসমের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ সময় আব্বাসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হুসাম জমলত সেখানে উপস্থিত ছিলেন যিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের নতুন রাষ্ট্রদূত হতে যাচ্ছেন। আব্বাস ওই প্রতিনিধি দলকে বলেন, ইসরাইলের ক্রমাগত বসতি স্থাপন অবৈধ এবং তা দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে ব্যহত করছে। এদিকে নেতানিয়াহু ইসরাইলের পার্লামেন্টের এক কমিটিতে আশা প্রকাশ করে বলেন, অধিকৃত ভূখ-ে বসতিস্থাপন থেকে শুরু করে ইরান পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে। তিনি মনে করেন এবার হোয়াইট হাউসের সঙ্গে তার অহেতুক দ্বন্দ্ব নিরসন। নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প ইরানের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য হুমকিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যকার সংঘাত সমাধানের দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতি ট্রাম্প সমর্থন করেন কি না এ নিয়ে বর্তমানে কিছুটা অস্পষ্টতা তৈরি হওয়ায় হোয়াইট হাউসের শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছে। এক্ষেত্রে দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিতে বলেছেন ট্রাম্প। গত কয়েক দশক ধরে দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতি সমর্থন করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আর চাপ দেবে না। পাশাপাশি ইসরাইলে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরানো নিয়েও কথা বলেন ট্রাম্প। সংবাদ সম্মেলনে পাশে দাঁড়ানো নেতানিয়াহুকে অধিকৃত এলাকায় বসতি নির্মাণ কিছু সময়ের জন্য আটকে রাখার আহ্বান জানান ট্রাম্প। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে হাজার হাজার বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইল। হোয়াইট হাউসের সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতার কেউই ভবিষ্যতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনী রাষ্ট্রের বিষয়ে স্পষ্টভাবে প্রতিশ্রুতি দেননি। ইসরাইলের দীর্ঘদিনের দাবি, জেরুজালেমকে রাজধানী করার ইচ্ছার প্রতি সমর্থন জানান এবং এর জন্য তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন।
×