ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী জেলা পরিষদের বহুতল কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১১ মার্চ ২০১৭

রাজশাহী জেলা পরিষদের বহুতল  কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীতে শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ। রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় জেলা পরিষদের নিজস্ব জায়গায় এই কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। ৯ তলাবিশিষ্ট এই ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। রাজশাহীতে পরিদর্শনে এসে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলী আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে এলজিইডির এই উর্ধতন কর্মকর্তা নগরীর কোর্ট এলাকায় জেলা পরিষদের ওই জায়গাটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে জেলা পরিষদের সদস্য ও যোগাযোগ এবং ভৌত অবকাঠামো কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম, কমিটির সদস্য রবিউল আলম ও মাহমুদুর রহমান রেজা উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলী আহমেদ বলেন, ‘এরই মধ্যে এখানে ভূমি জরিপ ও মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অনুমোদন করা নক্সাও মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। আমরা প্রাথমিক পরিদর্শনটাও সেরে নিলাম। ভবন নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে যে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে সেটি এখন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আশা করছি, আগামী জুন নাগাদ দরপত্র আহ্বান করা যাবে। তিনি জানান, ৯ তলাবিশিষ্ট ওই ভবন নির্মাণে প্রায় দুই বছর সময় লাগবে। ভবনের নিচতলায় থাকবে মার্কেট। আর বাকি ৮ তলাজুড়ে থাকবে জেলা পরিষদের বিভিন্ন শাখার অফিস। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধায় থাকবে ভবনটিতে। আর এ ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের ভবনের জন্য নির্ধারিত এই জায়গাটিতেই আগেও এর কার্যালয় ছিল। ছয় বছর আগে পুরনো ওই ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। ফলে ওই জায়গাটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অবশ্য জায়গাটি এখনও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। সামনের অংশে একটি গেটও আছে। তাতে জেলা পরিষদের নামও লেখা আছে। কিন্তু গেটের ভেতরে কোন ভবন নেই। ভেতরে নানা ধরনের লতাপাতায় জঙ্গল বেঁধে আছে। রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মাহবুব জামান ভুলু পাঁচ বছর দায়িত্বে থাকাকালেও পুনরায় সেখানে ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেননি। গত ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আলী সরকার। দায়িত্ব নিয়েই তিনি পরিষদের নতুন ভবনের জন্য তৎপরতা শুরু করেন। জেলা পরিষদের কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৮৮৫ সালে রাজশাহী জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। জেলা পরিষদ কার্যালয়ের জন্য পরের বছর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের পাশে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি ২০১০ সালে ভেঙ্গে ফেলা হয়। এরপর কার্যালয়টি নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার একটি একতলা ভবনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে জেলা পরিষদের কার্যক্রম। বৃষ্টি হলেই ভবনটি ডুবে যায় পানিতে। আর সেই পানির সঙ্গে ঢোকে সাপ, ব্যাঙ। তাতে আতঙ্কিত থাকেন কর্মচারীরা। সূত্র আরও জানায়, অস্থায়ী এই কার্যালয়টি একসময় জেলা পরিষদের একজন সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় ছিল। তখন এটি ছিল রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার অন্তর্ভুক্ত। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ মতায় আসার পর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এলজিআরডিমন্ত্রী থাকাকালে চিড়িয়াখানাটি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে জেলা পরিষদ এই কার্যালয় রেখে দেয়। ২০১০ সাল থেকে জরাজীর্ণ এই ভবনেই চলছে জেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘জেলা পরিষদের বর্তমানের অস্থায়ী কার্যালয়টির অবস্থাও খুব জরাজীর্ণ। তিনি বলেন জেলা পরিষদের এমন জীর্ণদশা আর থাকবে না। এখন নতুন নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য কার্যক্রম শুরু হলো।
×