ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুরে ২০ সড়ক বেহাল

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১১ মার্চ ২০১৭

শরীয়তপুরে ২০ সড়ক বেহাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর, ১০ মার্চ ॥ সদরসহ ৬ টি উপজেলা সদরের প্রায় ২০ টি সড়ক যানবাহন চলাচলের অযোগ্য। সড়কগুলোর অধিকাংশ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে হলেও মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই। এছাড়া শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের সদর উপজেলার আংগারিয়া বাজার থেকে সখিপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। বড় বড় গর্ত হয়ে, কোন কোন স্থানে রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব রাস্তায় যানবাহন চলছে আর প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এসব রাস্তা মেরামতের কোন প্রকার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদাররা। রাস্তা সচল রাখার অজুহাত দেখিয়ে অফিসের কিছু লোক দিয়ে রাস্তার কিছু পয়েন্টে ইট/বালু ফেলে সড়ক মেরামতের নামে জনগণের সাথে তামাশা করছে এবং রাস্তা মেরামতের নামে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা বিল ভাউচার করে সরকারের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। ছয় উপজেলার অন্তত ২০ টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা হওয়ায় এসব রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছবে। কিছু কিছু রাস্তায় মেরামতের কাজ চলছে। কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষ অফিসের লোকজন দিয়ে নিজেরা নামমাত্র রাস্তা সংস্কার করে বিল ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া বিনা টেন্ডারে রাস্তার দু’পাশের শত শত গাছ কেটে সাবার করে দিচ্ছে তারা। এসব গাছ কেটে নিয়ে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোন কোন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী বাসা-বাড়ির আসবাবপত্র তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কিছু অসাধু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোন কোন সড়ক মেরামত করলেও তা নয়ছয় করে কাজ শেষ করার আগেই অফিসের দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে যোগসাজশে বিল উঠিয়ে সরকারী বরাদ্দ হরিলুট করছে। যেন দেখার কেউ নেই। জানা গেছে, দেশের পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের জেলাসমূহের সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র গুরুত্বপূর্র্ণ সড়ক সদর উপজেলার আংগারিয়া থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা। সম্প্রতি এই সড়কের রিপেয়ারিং সিলকোটের মাধ্যমে মেরামতের কাজ করেছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩ কোটি ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬শ’ ৫৬ দরপত্রের ভিত্তিতে গত বছরের ২২ মে কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি যা ২০ জুন শেষ হয়। কিন্তু মেরামতের পর ৬ মাস যেতে না যেতেই রাস্তা বেহাল। গচ্ছা গেছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। রাস্তা মেরামতের নামে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ নামসর্বস্ব পত্রিকায় ঘুপচি বিজ্ঞাপন দিয়ে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে নামমাত্র রাস্তা মেরামত করে সরকারী বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা হরিলুট করছে। এছাড়াও বুড়িরহাট থেকে ভেদরগঞ্জ, ভেদরগঞ্জ-ডামুড্যা, ভেদরগঞ্জ-সখিপুর, সখিপুর-গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ-ঘরিসার, ঘরিসার-সুরেশ্বর, প-িতসার-গোলারবাজার, ভোজেশ্বর-পঞ্চপল্লী, ঘরিসার-নড়িয়া সড়কসহ ছয় উপজেলার ২০ সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ যোগদান করার পর থেকেই শরীয়তপুরে সড়ক মেরামতে ধীরগতি ও নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতিতে বাসা বেঁধেছে। প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ নিয়মিত অফিসে উপস্থিত থাকেন না। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কোন সড়ক বা সড়কের মেরামতের কাজ তিনি পর্যবেক্ষণ করেন না। এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রয়েছে।
×