ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ চায় বিএনপি ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১১ মার্চ ২০১৭

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ  চায় বিএনপি ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসতে বিএনপি আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ ডেমোক্র্যাটিক কাউন্সিল’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। মওদুদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় দুই বছর বাকি থাকলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারভিযানে নেমে গেছেন। তিনি বগুড়ায় জনসভা করেছেন, মানুষের কাছে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। এটা দেখে মনে হচ্ছে, একতরফা একটা নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এখন থেকে বিএনপিকেও নির্বাচনী প্রচার চালানোর সুযোগ দিতে হবে। আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্রের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের জনসভা করতে দিতে হবে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করতে দিতে হবে। মওদুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারকে বলুক এখন থেকে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের জনসভা আয়োজনে কোন বিধিনিষেধ থাকবে না। সত্যিকারার্থে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত করতে চাইলে এখন থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, জনসভায় লোকসমাগমের ভয়ে সরকার বিএনপিকে জনসভা করতে দেয় না। আজ যদি খালেদা জিয়া একটি জনসভা করার সুযোগ পান, তাহলে প্রমাণ করে দেবে দেশের জনগণ কাদের পক্ষে আছে। সে ভয়ে তারা আমাদের জনসভা করতে দেয় না। মওদুদ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা সংবিধানের দোহাই দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে জানান। কিন্তু নির্বাচন ও সংবিধান মানুষের জন্যই। তাই মানুষের প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করা যাবে। সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় সরকার গঠনপূর্বক একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিএনপি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই জনসম্মুখে চুক্তির বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। আর দেশের ক্ষতি হয় এমন কোন চুক্তি সরকার করবে না বলে আশা প্রকাশ করছি। মওদুদ বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা না দিতে পারে তাহলে আমরা দুই বছর অপেক্ষা করব না। এখন থেকেই সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব আইনবহির্ভূত ও হাস্যকর মামলার বিচার যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে খালেদা জিয়া এসব মামলা থেকে মুক্তি পাবেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন করে ভোটের অধিকার আদায় করতে হবে। সরকার বিএনপিকে ভয় পায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার সেজন্যই বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া জেলের ভেতর থাকেন বা বাইরে থাকেন, তিনিই সাধারণ জনগণের নেতা। জেলের ভেতর গেলে সেখান থেকেই তিনি নেতৃত্ব দেবেন। তাই তার নেতৃত্বেই দলের নেতাকর্মীদের কাজ করে যেতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এমএ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান সারোয়ার, আইনবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ। অপকৌশল করে বিএনপিকে ঠেকাতে পারবে না সরকারÑ নোমান ॥ কোন ধরনের অপকৌশল করে সরকার বিএনপিকে ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে জাতীয়তাবাদী বন্ধু দল আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলে নোমান বলেন, ভারত সফরে কী চুক্তি হবে তা স্পষ্ট নয়। জাতি জানতে চায় এ সফর দেশের জন্য কী সুফল বয়ে আনবে। দেশের সংসদ সদস্যরাও জানেন না কী চুক্তি হবে। কোন আলোচনাও হয়নি এটা নিয়ে। তাই সরকারকে বলব, এমন কোন চুক্তি করবেন না যেখানে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। পরবর্তীতে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন না হয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এ বক্তব্য বিএনপির সঙ্গে মিল রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপিও সেটা চায়। তবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হলো কী হলো না তা মুখ্য বিষয় নয়। বিএনপির দাবি জনগণের ভোটাধিকার আদায় করা। জনগণই ঠিক করবে তারা আগামী নির্বাচনে কোন দলকে চায়। নোমান বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বিএনপির আছে। তবে সরকার যদি অপচেষ্টা করে বিএনপিকে জোর করে নির্বাচনে আনতে চায়, সেক্ষেত্রে দল তার নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করবে। বিএনপিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম করে যাচ্ছে। প্রতিরক্ষা চুক্তির জন্য ভারত চাপ দিচ্ছেÑ রিজভী ॥ প্রতিরক্ষা চুক্তির জন্য ভারত বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষার চুক্তির বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তার প্রতি দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে।
×