ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গলে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১১ মার্চ ২০১৭

গলে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চতুর্থদিনের শেষভাগে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন সৌম্য সরকার। শুক্রবার গলে দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে শেষ করল বাংলাদেশ। কিন্তু জয়ের লক্ষ্যটা বিশাল ৪৫৭ রানের। সেই লক্ষ্য ছুঁতে পারলে হবে নতুন বিশ্বরেকর্ড। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভাল হওয়াতে তাই আজ পঞ্চম ও শেষদিনে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় ৬ উইকেটে ২৭৪ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ ইনিংসে সর্বাধিক ৪১৩ রান করার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের। সেটাও এই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে মিরপুর টেস্টে। ৫২১ রানের জয়ের লক্ষ্য ছিল সেবার। ২০১০ সালের মার্চে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৩১ এবং ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামেই ৩০১ রান করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া চতুর্থ ইনিংসে ৩০০ পেরনোর রেকর্ড নেই। এই তিনবারই হেরেছিল দল। রান তাড়া করে সর্বাধিক ২১৭ রান করে জিতেছিল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে সেবার সেন্ট জর্জেসে ৪ উইকেটে জিতে গিয়েছিল সফরকারী দল। এবার গড়তে হবে বিশ্বরেকর্ড। কারণ টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক ৪১৮ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২০০৩ সালের মে মাসে সেন্ট জনসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অধিনায়ক ব্রায়ান লারার ক্যারিবীয়রা ওই রেকর্ড গড়ে। গল টেস্টে জেতার জন্য তাই বাংলাদেশকে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হবে। কিন্তু এ ভেন্যুতে সর্বাধিক ৯৯ রান করে ৭ উইকেটে জয় পেয়েছিল লঙ্কানরা ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। আর ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে গলে সর্বাধিক ৩০০ রান করার রেকর্ড আছে ২০১২ সালে পাকিস্তানের। সেবার ৫১০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করেছিল তারা। এবার সবকিছুকেই পেছনে ফেলতে হবে বাংলাদেশকে। অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা হয়েছে উড়ন্ত বেড়ে। সেটার পেছনে পুরো কৃতিত্বই সৌম্যের বিধ্বংসী ব্যাটিং। তিনি মাত্র ৪৪ বলেই অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। আর ধীরস্থির থেকে ওপেনার তামিম ইকবাল ১৩ রানে অপরাজিত। ১৫ ওভার পর অবশ্য আলোর স্বল্পতা ও বৃষ্টি খেলা হতে দেয়নি। যার ফলে চিরাচরিত নিয়মে দিনের একেবারে শেষভাগে উইকেট খোয়ানোর বাজে জুজুটা এবার জেঁকে বসতে পারেনি। তবে আজ শেষদিনে ৩৯০ রান করতে হবে। পঞ্চমদিনে সেটা বেশ কঠিন। কিন্তু সৌম্য-তামিমের শুরুটা স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। নতুন রেকর্ড কি গড়তে পারবে মুশফিকুর রহীমের দল? তৃতীয়দিনের শেষদিকে বৃষ্টির হানায় খেলা হয়নি আর। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ৩১২ রানেই থেমে গিয়েছিল। ১৮২ রানের আগাম লিড নিয়ে চতুর্থদিন দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে লঙ্কানরা। প্রথম উইকেটে দিমুথ করুনারতেœকে নিয়ে ৬৯, দ্বিতীয় উইকেটে কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে ৬৫ এবং তৃতীয় উইকেটে দিনেশ চান্দিমালের সঙ্গে ৬৪ রান যোগ করে লঙ্কানদের দারুণ এক সংগ্রহে পৌঁছে দেন উপুল থারাঙ্গা। অভিজ্ঞ এ ওপেনার ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি আদায় করে নেন। তিনি ১৭১ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১১৫ রান করার পর মেহেদি হাসান মিরাজের স্পিনে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। অবশ্য শুরু থেকেই লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের চাপে রেখেছিলেন এ তরুণ ডানহাতি অফস্পিনার। কিন্তু ফিল্ডারদের ক্যাচ হাতছাড়া করার কারণে তিনি সাফল্য পাননি। ওপেনার করুনারতেœকে শিকার প্রায় করেও ফেলেছিলেন ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে। কিন্তু তার দেয়া ক্যাচ অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিব আল হাসান লুফে নিতে পারেননি। তখন করুনারতেœর রান ছিল মাত্র ৭। প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। স্কয়ার লেগে দারুণ এক ক্যাচ লুফে ৩২ রান করা এ ওপেনারের বিদায় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তবে তিনিই মিডউইকেটে পরবর্তীতে মিরাজের বলে দিলরুয়ান পেরেরার (তখন ০) সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন ইনিংসের ৬১তম ওভারে। চান্দিমালও ব্যক্তিগত ১১ রানে জীবন পেয়েছেন। প্রথম সিøপে দাঁড়ান সৌম্য সহজ ক্যাচটা হাতছাড়া করেন। ওই সুযোগে তিনি দীর্ঘ ৮ ইনিংসে ব্যর্থতার পর প্রথম অর্ধশতক পেয়ে যান। শেষদিকে পেরেরার ২৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় করা ৩৩ রানে বড় লিড পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। চান্দিমাল ৭৫ বলে ৪ চারে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন। পেসার মুস্তাফিজুর রহমান পেরেরার উইকেট শিকার করার পরই ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। দু’টি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মিরাজ। এবার লড়াই বাংলাদেশেরÑ নতুন কোন ইতিহাস গড়ার।
×