সমানুপাতিক বৃষ্টিপাত
বৃষ্টিপাতের আগে,
ঘুম নেই চোখে। বাতাসে। অস্থিমজ্জায়। কর্কশ বেদনাময় বিষাক্ত অদৃশ্য নীল আকাশ।
তারা সবাই চিঠি লিখে, উড়িয়ে দেয় মেঘের পালকের মতো। তাদের আবেদন নতুন প্রথম বৃষ্টিপাত।
কাঁচের টুকরোরা লোমকূপে, শিহরিত আবেগে হত্যা করবে হতাশা। আর হত্যা করবে কাকে?
ছোট ছোট আলোর টুকরোর মতো অন্ধকারের হাড়ের ভেতরে গিয়ে কুরে কুরে খাবে।
তখন।
আশায় আশায়।
বৃষ্টিপাতের পর,
কিছু কিছু প্রেম থেকে যায় পশমে পশমে। মোমবাতি জ্বালালেই খুঁজে পাওয়া যায়। নক্ষত্রের আলো থাকে, থাকে আর কি!
মোমবাতি শেষ হয়ে যায়, প্রেম থাকে। কাঁচের টুকরোরা চলে যায়। তবে দৃশ্য থাকে, বন্দী।
উন্মুক্ত এক কারাগারে।
বৃষ্টিপাতের সময়,
কিছু হয় না, থাকে না। থাকে শুধু ধোঁয়াশা আর আশা,
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে কারো পশমে ছেড়ে দাও, প্রেম হয়ে বেঁচে থাকব।
মারা যাওয়ার আগে অথবা
পরে।
** নখরযুক্ত প্রশান্তি
একের পর এক বিস্ফোরণে ধসে পড়ছে কংক্রিটের দালান,
মৌমাছির মৃদু কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে গ্রিল ধরে।
গোলাপের পাতা নিরাপদ আশ্রয় হতে পারত।
অথবা পানির ট্যাঙ্ক,
অথবা দুর্বৃত্তের চকচকে ছুরির ছায়ার আঁচল।
বার বার গর্জন শোনা যাচ্ছে,
‘আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ।’
রাক্ষসের মতন আঘাত হানছে বুলডোজার।
সাপের হিস হিস কান্নার মতো শোনায়।
ছায়া দিতে পারত একটা আকাশ।
চাইলে পানিও দিতে পারত,
দুর্ভিক্ষের সময়টায় পানি বড়ই সুমিষ্ট মনে হয় কিনা!
কিন্তু ঝরঝঞ্জা অনেকটা বাধাই ছিল।
নীলিমায় চোখ গেলেও কানের কাছে গর্জন,
‘আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ।’
ওইদিন দুটো শেয়াল,
ঠিক আমার সামনে খাবার নিয়ে ঝগড়া থামিয়ে দিল।
ঠেলে সরিয়ে দিল লোভের রতœ।
আর দুটো হতাচ্ছারা কিনা ধ্বংসলীলায় ঝগড়ার আসর বসায়!
আমার কান কেঁপে ওঠে,
‘আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ!’
আজকাল মানুষের মুখ শেয়ালের মুখের মতন লাগে।
আয়না দেখলে ঘেন্না লাগে।
কেননা,
লাশের পর লাশে থুথু ছিটিয়ে যখন বিছানায় পিঠ ছুঁয়াই।
শান্তি নামক প্রাণীটা আমার ঠোঁট চেপে ধরে!
গলা ঠেকে অকস্মাত বেরিয়ে পড়ে,
‘আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ!’
শীর্ষ সংবাদ: