ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১০ মার্চ ২০১৭

রাজশাহীতে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর দুর্গাপুরে ছাগল চুরির অভিযোগে স্কুলছাত্র দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি মেম্বারের উপস্থিতিতে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ নিয়ে তোলাপাড় শুরু হয়েছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন। এরপর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে। এরা হলেনÑ আবদুল মোতালেব ও মির্জা আবদুল লতিফ। বেলা ১১টার দিকে ইউপি কমপ্লেক্স থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। নির্যাতনের শিকার দুই স্কুলছাত্র হলো হাড়িয়াপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে জার্জিস হোসেন ও পলাশবাড়ি গ্রামের সেকু আলীর ছেলে রতন। তারা দুজন আমগাছী সাহার বানু উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তবে রাতে ফেসবুকে প্রচার হলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন জানান, দুই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় মামলা করেন কিশোর জার্জিস আলীর বাবা জিয়াউর রহমান। মামলায় ওই দুই ইউপি সদস্য এবং ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী ম-লসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ছাগল চুরি করার অভিযোগে জার্জিস ও রতনকে আন্দুয়া গ্রামে ধরে নিয়ে যায় ঝালুকা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব। ওই গ্রামের রেজাউলের বাড়ির সামনে মোতালেব ওই দুই স্কুলছাত্রকে গাছে বেঁধে মারধর করে। এরপর দুপুরে সেখানে সালিশ বৈঠক বসানো হয়। সালিশ বৈঠকে দুই ছাত্রের পরিবারের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়। সালিশ বৈঠকে ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব ছাড়াও ঝালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাহার আলী ম-ল ও আরেক ইউপি সদস্য মির্জা আব্দুল লতিফ উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহার আলী ম-ল কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব বলেন, মঙ্গলবার রাতে জার্জিস ও রতন আন্দুয়া গ্রামের রেজাউলের বাড়ি থেকে ছাগল চুরি করে নিয়ে যায়। বুধবার রাজশাহী নগরের মতিহার থানার হরিয়ান বাজার দিয়ে ছাগলটি নিয়ে যাওয়ার সময় বাজারের এক নৈশ প্রহরীর সন্দেহে করে ছাগলসহ তাদের আটক করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ছাগলসহ তিনি নিজে গিয়ে দুইজনকে নিয়ে আসেন বলে জানান মোতালেব। মাদ্রাসা ছাত্রের ওপর অমানুষিক নির্যাতন ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মাদ্রাসার ছাত্র আবু সহিদকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে এক শিক্ষক। শিক্ষক রমজান আলী দুজন ছাত্রের সহায়তায় তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বলে ওই আহত ছাত্র জানায়। এ ঘটনায় ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি বলে ওসি জানান। জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে মাহমুদপুর ইউনিয়নের শালমদী ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র রিফাতের ৭শ’ টাকা খোয়া যায়। পরে রিফাত বিষয়টি শিক্ষক রমজান আলীকে জানায়। রমজান আলী টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে হেফজ বিভাগের ছাত্র হাফেজ আবু সহিদকে ডেকে আনেন। পরে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে ছাত্র রাসেল ও আঃ রহমানের সহযোগিতায় আবু সহিদকে হাত-পা বেঁধে কক্ষের দরজা বন্ধ করে রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরে ওই ছাত্র অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে কক্ষে রেখেই তারা পালিয়ে যায়। পরে বন্ধ কক্ষে গোঙানির শব্দ শুনে অন্য ছাত্ররা এসে তাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বুধবার বিকেলে তার পরিবার এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আহত ছাত্র হাফেজ আবু সহিদকে আড়াইহাজার এ টু জেড হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত সহিদ জানায়, শিক্ষক ও তার সহযোগিরা তাকে হাত-পা বেঁধে আটক করে ৩ ঘণ্টা তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
×