ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী

ইউজিসিকে উচ্চশিক্ষা কমিশনে রূপান্তর করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১০ মার্চ ২০১৭

ইউজিসিকে উচ্চশিক্ষা কমিশনে রূপান্তর করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) উচ্চশিক্ষা কমিশনে রূপান্তর করা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সরকারের এ উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতেই উচ্চশিক্ষা কমিশন করা হচ্ছে। এজন্য আইন তৈরির কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন এ্যাসোসিয়েশন অব কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিজের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক জন উড। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুশফিক এম চৌধুরী প্রমুখ। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করতে তাই উচ্চশিক্ষা কমিশন আইন তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রী দেশের বাস্তবতা ও জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থী ভর্তির টিউশন ফি একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চান তাদের আর ছাড় দেয়া হবে না। যেসব বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সফল হতে পারেনি, সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা একান্তই কোন অসৎ উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে চান, আইনী বিধিবিধান মানতে চান না, তাদের আইনী পথে বাতিল করতে বাধ্য হবেন। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার মূল লক্ষ্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে প্রস্তুত করা। তাই স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বহুমাত্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার যথোপযুক্ত পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান করতে হবে। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ এবং গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ জন্য বিষয় বাছাই, শিক্ষাক্রম উন্নয়ন এবং শিক্ষাদানের পদ্ধতি অব্যাহতভাবে উন্নত ও যুগোপযোগী করতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, দারিদ্র দূরীকরণ এখনও আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দারিদ্র দূরীকরণে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। আমাদের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী এবং দৃঢ়। ২০২১ সালের মধ্যে অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চাই। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বসমাজে স্থান পেতে চাই। এজন্য পর্যাপ্তসংখ্যক জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ প্রকৃত উচ্চশিক্ষিত নাগরিক সৃষ্টি করতে হবে। সমাবর্তনে ৩১৭৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। ইউজিসির চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, আজ যারা গ্র্যাজুয়েট হয়ে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে কয়জন সে জ্ঞান নিয়ে বাড়ি ফিরছে সেটি বিবেচ্য বিষয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। তারা আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। আইনের ব্যত্যয় ঘটলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব । সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিজ ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশ ॥ বাংলাদেশের এগারটি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ের ২৮ জন শিক্ষার্থী এবং বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চারজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল ‘ দশম সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিজ ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছিল। ভারতের ইন্দোরের দেবী আহিলিয়া বিশ^বিদ্যালয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইউজিসির যুগ্ম-সচিব ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম। ম্যানেজার হিসেবে প্রতিনিধি দলে ইউজিসির অন্য সদস্যরা হলেন মোঃ শাহীন সিরাজ, মৌলি আজাদ, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ^বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ^বিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি এবং বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা লাইট ভোকাল, সোলো সং, গ্রুপ সং, ক্লাসিক্যাল ড্যান্স, ইলোকিউশন, পোস্টার মেকিং, ফটোগ্রাফি, ডিবেট এবং ক্লে মডেলিংসহ অসংখ্য ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে এবং ‘বেস্ট পারফরমেন্স এ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। এবারের ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
×