ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাটক নয়, সিনেমার মতো সাফল্য- অভিমত বার্সা কোচ এনরিকের, অনেকেই বার্সাকে কবর দিতে চেয়েছিল- বললেন পিকে, রেফারি ডেনিজকে ;###;ধুয়ে দিলেন পিএসজি কোচ উনাই এমেরি

রূপকথার সাফল্যে রাজপুত্র নেইমার

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১০ মার্চ ২০১৭

রূপকথার সাফল্যে রাজপুত্র নেইমার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রূপকথার জন্ম দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে বার্সিলোনা। আর রূপকথার এই গল্পের রূপকার ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার। স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাওয়া ম্যাচে কাতালানদের প্রাণ ফিরিয়েছেন সেলেসাও সুপারস্টার। পুরো ম্যাচে অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন ২৫ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। করেন জোড়া গোল। দুই গোলের কারিগরও। খেলা শেষে তাই নেইমার জানিয়েছেন, এটিই তার ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ। অন্যদিকে বার্সা বস লুইস এনরিকেও ভাসছেন আকাশে। তিনি ছেলেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তার মতে, এটি নাটক নয়, সিনেমার মতো সাফল্য। বার্সার এমন স্বপ্নময় সময়ে পিএসজি যেন মৃত্যুপুরী। হাতের মুঠোয় থাকা কোয়ার্টার ফাইনাল তারা হেলায় হারিয়েছে। প্রথম লেগে চার গোলে জয়ের পর এভাবে বিদায় নেয়াটা তারা কিছুতেই মানতে পারছে না। আর এজন্য ম্যাচের জার্মান রেফারি ডেনিজ আইটকিনকে দায়ী করেছেন পিএসজি কোচ উনাই এমেরি। তার মতে, রেফারির পক্ষপাতিত্বমূলক বাঁশিই তাদের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়েছে। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, এটা আমার ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচ। এ ধরনের ম্যাচ আমি আগে কখনই খেলিনি। যে অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে তাতে একটি কথাই বলতে চাই আমি দারুণ ফর্মে আছি। আমি জানি আমরা ইতিহাস রচনা করেছি। আমাদের মতো দল যে কোনকিছুই করতে পারে। শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসটা ধরে রাখতে পেরেছি বলে সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এমন ঘটনা জীবনে খুব বেশিবার আসে না। অনেকে বিশ্বাস করতে পারেনি যে আমরা পারব, তবে আমরা সেটা করে দেখিয়েছি। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার বলেন, আমরা যদি বিশ্বাস রেখে খেলি, তাহলে বার্সাকে থামান অসম্ভব। এমন ম্যাচের পর বার্সা ছেড়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করবেন না মেসিÑ এমনটাই মনে করছেন নেইমার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত সে বার্সিলোনাতেই থাকবে। মহাকাব্যিক ম্যাচে বার্সাকে আসলে জিতিয়েছেন নেইমার। কাতালান শিবিরে ছিলেন মেসি, সুয়ারেজের মতো মহাতারকাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিরো বনে গেছেন সেলেসাও তারকা। নিজে জোড়া গোল করেছেন, একটি পেনাল্টি আদায় করে দিয়েছেন, বার্সার জয়সূচক গোলও নেইমারের নিখুঁত ফ্রি কিকের সৌজন্যে। সবখানেই নেইমারের নাম। একসময় নিস্তেজ হয়ে যাওয়া বার্সাকে জাগিয়ে তোলার কারিগরও তিনি। এ কারণেই নেইমারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। এই ন্যুক্যাম্পেই ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ইনুজরি টাইমে দুটি গোল করে বেয়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। এই ম্যাচটি যেন ছিল তারই প্রতিফলন। এছাড়া ২০০৫ সালে লিভারপুলও ফাইনালে এসি মিলানের কাছে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ জয় করেছিল। উচ্ছ্বাসিত বার্সা কোচ লুইস এনরিকে বলেন, এটা এমন একটি রাত যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমার কাছে এটা নাটক নয়, ভয়ের সিনেমার মতোই। এই ধরনের ম্যাচ একজন খেলোয়াড় বা কোচ হিসেবে ন্যুক্যাম্পে আমি খুব কমই দেখেছি। এই ম্যাচটি খেলোয়াড় ও সমর্থকদের আস্থার বিষয়টিই প্রমাণ করেছে। এনরিকে বলেন, ৪-০ গোলে হারের পর যারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিল, তাদের ধন্যবাদ। এই জয় তাদের জন্য উৎসর্গ করছি। কেননা বার্সিলোনা হার্লেম গ্লোবট্রটার্স নয় ( প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে বেড়ানো বাস্কেটবল দল), এটাই ফুটবল। অন্যদিকে বাজে হারে পিএসজি কোচ উনাই এমেরির ভবিষ্যত অন্ধকারে। ক্লাব সভাপতি নাসির আল-খিলাফি বলেছেন, এ ধরনের হার মেনে নেয়া যায় না। এটা আমাদের সবার জন্য দুঃস্বপ্ন। এমেরি কি এখনও ক্লাবে থাকার যোগ্যতা রাখে। এসব বিষয়ে কথা বলার সময় এটা নয়। ম্যাচের পর আমরা সবাই হতাশ। তবে পিএসজি কোচ এজন্য রেফারিকে দায়ী করেছেন। এমেরি বলেন, দ্বিতীয়ার্ধে জার্মান রেফারি ডেনিজ দুটি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যেটা অবিশ্বাস্য। এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া যায় না। এটিই আমাদের কপাল পুড়িয়েছে। পিএসজির কপাল পুড়লেও বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে বলেছেন, তাদের অনেকে কবর দিতে চেয়েছিল। দুর্দান্ত সাফল্যের পর সমালোচকদের উদ্দেশে পিকে বলেন, এটা একটি ঐহিতাসিক কীর্তি, যা পূর্বে কখনই ঘটেনি। অনেকেই ছিল, যারা আমাদের কবর দিতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা সেরা, সেটা প্রমাণ করেছি।
×