ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর নির্যাতনে ভারতীয় বালিকা বধূ হাসপাতালে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১০ মার্চ ২০১৭

স্বামীর নির্যাতনে ভারতীয় বালিকা বধূ হাসপাতালে

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ প্রতারক স্বামীর প্রচ- শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে ভারতের আসাম রাজ্যের তেজপুরের বালিকা বধূ চরম অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় এখন হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত ওই গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পার্বতীপুর শহরের রোস্তম নগর মহল্লার সুজন শেখের ছেলে সাগর শেখ পাঁচ বছর আগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসামের তেজপুরে ‘কুটি ব্যবসা’ (প্রতারণারমূলক ব্যবসা) শুরু করে। এ সময় আসামের সুনিতপুর জেলার মহাভৈরব থানার গুটনং বিতোসতি গ্রামের আঃ রশিদের মেয়ে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রেজিনা সাগর শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের তিন বছরের মাথায় ৮ মাস আগে বাবা-মায়ের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের সময় সাগর শেখ রেজিনাকে জানায়, তার পৈত্রিক বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। প্রায় আড়াই মাস আগে রেজিনাকে কলকাতায় তার বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাগর শেখ সীমান্ত পেরিয়ে তাকে পার্বতীপুরে নিয়ে আসে। এখানে আসার পরই তার ওপর শুরু হয়। এতে অতিষ্ঠ হয়ে রেজিনা তাকে আসামে বাবার বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করে। এতে সাড়া না দিয়ে উল্টো নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়। হুমকি দেয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্যান্য দিনের মতো সাগর শেখ আবারও তাকে বেদম মারধর করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রেজিনা বাড়ি থেকে দৌড়ে রাস্তায় চলে আসে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গুরুতর আহত রেজিনা রাত সাড়ে ৮টায় পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। সেখানেও পিছু ছাড়েনি সাগর শেখ। হাসপাতালে ভর্তির খবর শুনে সাগর শেখ ও তার বাবা সুজন শেখের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন ভাড়াটে যুবক হাসপাতালে হামলা চালিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে হাসপাতালে উপস্থিত অন্যান্য রোগীদের আত্মীয়স্বজনদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ ঘটনার পর থেকে রেজিনা তার স্বামীর ভাড়াটে লোকদের হাতে অপহরণ ও গুমের আশঙ্কায় চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রেজিনা জানায়, সে আর স্বামীর ঘরে ফিরে যাবে না। তার আকুতি ‘আমাকে আসামে বাবার কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন। তা না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। ওদের হাত থেকে আমাকে বাঁচান’। পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ রায়হান আলী জানান, মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পার্বতীপুর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়ক রাবেয়া খাতুন জানান, গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও দেখা হচ্ছে।
×